চট্টগ্রাম বন্দরে পুরোদমে চলছে পণ্য খালাস

প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২৫, ১৩:৩৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম বন্দর ও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপোগুলোর (আইসিডি) কার্যক্রম পুরোদমে চালু হয়। ছবি: চট্টগ্রাম ব্যুরো

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তাদের পূর্ণ কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর চট্টগ্রাম বন্দর ও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপোগুলোর (আইসিডি) কার্যক্রম পুরোদমে চালু হয়েছে। আগের শুল্কায়ন হওয়া আমদানি পণ্য খালাসের পাশাপাশি জাহাজীকরণ চলছে রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনারের।

আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল থেকে কাস্টম হাউজে আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে চলতে দেখা গেছে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সিএন্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্টরাও সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।

এর আগে রোববার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের পরপরই কাস্টমসের কাজ শুরু করেন কর্মকর্তারা। এতে বিল অব এন্ট্রি, বিল অব এক্সপোর্ট এবং শুল্কায়ন শুরু হয় কাস্টমসে। এতে বেসরকারি অফডকগুলোতে সৃষ্ট অচলাবস্থা দূর হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুদিনে আটকা পড়া অন্তত ৪ হাজার টিইইউএস রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেইনার জাহাজিকরণ করে স্বাভাবিক গতি আনতে কয়েকদিন সময় লাগবে। তবে এসব পণ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে। রপ্তানি পণ্যগুলো গত দুদিনে জাহাজিকরণ হওয়ার কথা ছিল। কথা ছিল এসব পণ্য নিয়ে জাহাজ সিঙ্গাপুর বা কলম্বো গিয়ে ইউরোপ-আমেরিকামুখী মাদার ভ্যাসেল ধরবে। অথচ এনবিআরের শাটডাউনের ফলে পণ্যগুলো মাদার ভ্যাসেল শেষ পর্যন্ত পাবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। মাদার ভ্যাসেল ধরতে না পারলে এসব পণ্য শেষ পর্যন্ত ক্রেতারা নেবেন কিনা তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, কাস্টমস আন্দোলন করছে, অথচ ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরকে। দেশের আমদানি–রপ্তানি খাতে কোটি কোটি ডলারের ক্ষতির মুখে পড়ে। সময়মতো পণ্য পাঠাতে না পারলে গার্মেন্টস সেক্টরকে বড় মূল্য দিতে হবে। বন্দরের গেট পর্যন্ত পৌঁছেও সময়মতো শিপমেন্ট করতে না পারা দুঃখজনক। এ অবস্থায় গত রাত থেকে রপ্তানি পণ্য জাহাজিকরণ শুরু হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে।

চট্টগ্রাম সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন জানান, রপ্তানি পণ্যের কাস্টমস ছাড়পত্র ও পরিবহন গত রাতেই শুরু হয়েছে। আজ সকাল থেকে আমদানি পণ্যের কাগজপত্র প্রক্রিয়াকরণেও কাস্টমস ও এজেন্ট কর্মীরা কাজ শুরু করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘যদিও এই অচলাবস্থায় সৃষ্ট বাণিজ্যিক ক্ষতি পূরণযোগ্য নয়। তবু আমরা আশা করি, কাস্টমস কর্মকর্তারা আন্তরিকভাবে আটকে থাকা কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করবেন।’

চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম কাস্টমসের একজন কর্মকর্তা বলেন, এটি চট্টগ্রাম কাস্টমসের কোনো ব্যাপার নয়। চট্টগ্রাম কাস্টমস শুধু কেন্দ্রীয় সংগঠনের কর্মসূচিতে একাত্ম হয়েছে। কাস্টমস দৈনিক প্রায় ২শ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপাতত মনে হচ্ছে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। কিন্তু এই রাজস্ব আমরা পাবই। পণ্য ছাড় করানোর আগে ব্যবসায়ীদের এই রাজস্ব পরিশোধ করেই খালাস করতে হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘বন্দরে কনটেইনার ডেলিভারিসহ সব কার্যক্রম এখন পুরোপুরি সচল। যেসব অতিরিক্ত কনটেইনার জমে গিয়েছিল, সেগুলো দ্রুত ছাড় করা হবে।