পৈতৃক ভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি

গাইবান্ধায় সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালিত

প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২৫, ১৯:১২

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করা হয়: ছবি যায়যায়দিন

সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। দিবস উপলক্ষে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের সাতানা আলোর ঘর শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের মাঠে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অবলম্বন সোমবার এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সাঁওতাল নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে সাঁওতাল বিদ্রোহসহ সাঁওতাল সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সকল শহিদ স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আদিবাসী নেত্রী ললিতা মুরমুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- অবলম্বনে নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলা আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী, কায়সার রহমান, সাংস্কৃতিক কর্মী মানিক বাহার, নারী নেত্রী মাজেদা খাতুন, নাজমা বেগম, সেলিনা আক্তার সোমা, আদিবাসী নেতা গৌড় চন্দ্র পাহাড়ি, সুশীল টপ্য, মিলন তিগ্যা, সোনালী  মার্ডি প্রমুখ। 

বক্তারা সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট, এর গুরুত্ব এবং বর্তমান সময়ে সাঁওতালদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, সিধু-কানু, চাঁদ-ভৈরবীর নেতৃত্বে সংগঠিত এই বিদ্রোহ ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে শোষিত মানুষের এক সাহসী প্রতিবাদ। 
এই বিদ্রোহ একদিকে যেমন ব্রিটিশদের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল, তেমনি স্থানীয় জমিদার ও মহাজনদের জুলুম থেকেও মুক্তির পথ দেখিয়েছিল। 
যদিও বিদ্রোহ সফল হয়নি, তবে এটি পরবর্তীকালে বহু কৃষক ও আদিবাসী বিদ্রোহের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। আলোচনা সভায় সাঁওতালদের ভূমি অধিকারের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়। 

বক্তারা ২০১৬ সালের সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ওই ঘটনায় সাঁওতালদের উপর যে বর্বরোচিত হামলা ও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছিল, তার ক্ষত আজও শুকায়নি। 
তারা অবিলম্বে সাঁওতালদের পৈতৃক ভূমি ফিরিয়ে দেওয়া, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের উপর যেকোনো ধরনের নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ও জমিদার-মহাজনদের শোষণের বিরুদ্ধে সাঁওতালদের ঐতিহাসিক বিদ্রোহের স্মরণে প্রতি বছর এই দিনটি পালন করা হয়।