তজুমদ্দিনে গৃহবধূ ধর্ষণ: ছাত্রদল-শ্রমিক দলের ৩ নেতা বহিষ্কার  

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮:৪২

তজুমদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার মাওলানাকান্দি এলাকায় চাঁদার দাবিতে স্বামীকে বেঁধে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের তিন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এ ঘটনায় অন্যতম আসামি মানিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার রাতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটার পর, মঙ্গলবার তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।

কর্মসূচিতে বর্তমান ও সাবেক উপজেলা কমিটির সমর্থকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার বিএনপির মিডিয়া সেলের মাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলেন:

“দুস্কৃতিকারিরা গত সোমবার ভোলায় চাঁদার দাবিতে স্বামীকে ব্যাপক মারধর ও স্ত্রীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করার ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও দেশে এখনও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। ভোলায় নারীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দুস্কৃতিকারিদের দ্বারা সংঘটিত এ ধরণের বর্বরোচিত ও পশুর চেয়েও হিংস্রতায় গোটা দেশের মানুষ হতভম্ব। নারীর ওপর ধারাবাহিক এ ধরণের পাশবিক নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় দেশের নারী সমাজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই দুস্কৃতিকারিদের কঠোর হস্তে দমনের কোনো বিকল্প নেই।

আওয়ামী দুঃশাসন থেকে জনগণ নিস্তার পেলেও দেশ এখনও পুরোপুরি নিরাপদ নয় বলেই নারীর ওপর এ ধরণের বর্বর ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ভোলায় নারীকে ধর্ষণের সাথে জড়িত দুস্কৃতিকারিদের আমি অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহবান জানাচ্ছি।”

এ ঘটনায় মামলার পর তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত আলী খান জানান, ঘটনার পর অভিযুক্তদের শনাক্ত করে অভিযান চালানো হয়। সোমবার রাতে ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকা থেকে মানিক নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এদিকে বুধবার বিকেলে তজুমদ্দিন উপজেলা সদরে জামায়াতে ইসলামী উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দও একটি প্রতিবাদ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তারা জানান, চাঁদাবাজ ও ধর্ষণের ঘটনায় কাউকেই ছাড় দেয়া যাবেনা। অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যারা এই ধরনের ঘটনাকে প্রশ্রয় দেয় জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে। 

উল্লেখ্য, সোমবার রাতে বাদীর দ্বিতীয় স্ত্রীর বসতঘরে একদল দুর্বৃত্ত হানা দিয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।

ঘটনাটি এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী ও সামাজিক সংগঠনগুলো।