ফরিদপুরে ভিডব্লিউবি চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৪:৪৩

ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নে ভার্নারেবল উইমেন্স বেনিফিট ( ভিডব্লিউবি) চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঈদুল আজহার আগে গত ৩ ও ৪ জুন ইউপি ভবন থেকে এ চাল বিতরণ করা হয়।
অভিযোগ প্রবাসী এবং মৃত অন্তত ১২ জনের নামে চাল উত্তোলন করে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কেজি চাল বিক্রি করে দিয়েছেন চাল বিতরণে নিয়োজিত কমিটির সদস্য ইউপি সচিব মো. রইচউদ্দীন, প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আজগর হোসেন, ইউপি সদস্য রেজাউল করিম, মো. কালাম শেখ ও মো. হিটলু খান।
গত ২২ ও ২৩ মে ইউপি ভবন থেকে এ চাল বিতরণ করা হয়। ওই চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ এনে ওই ইউনিয়নের ছয় বাসিন্দা গত ১৮ জুন চাল বিতরণ কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন।
অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয় জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক, উপপরিচালক মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এবং ফরিদপুর প্রেস ক্লাবকে।
লিখিত ওই অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে বলা হয়, তালিকায় দেখা গেছে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক শেখের স্ত্রী আলেয়া বেগম (৪৯) এক বছর আগে মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তিকে কার্ডের চাল কিভাবে বিতরণ করা হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদপুর গ্রামের সুইটি আক্তার (৩৬), ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরবিষ্ণুপুর গ্রামের আশা আক্তার (২৪), চক ফতেপুর গ্রামের আঞ্জুমানরা আক্তার (৩১), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মদনদিয়া গ্রামের কহিনূর আক্তার (২৩) এরা কেউ বিদেশে কেউ ঢাকায় থাকেন। অথচ তাদের চাল দেওয়া হয়েছে।
ওই অবেদনে, উল্লেখ করে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘যারা বিদেশে চলে গেছেন তাদের মাঝে কিভাবে চাল বিতরণ করা হল তা আমাদের জানা নেই।
ওই লিখিত আবেদনে অভিযোগ করে বলেন, ওই ব্যক্তিদের চাল বিতরণ না করে বিক্রি করে ভাগাভাগি করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে মৃত ও বিদেশগত পাঁচ জনের পাশাপাশি আরও সাত নারীর সন্ধান পাওয়া গেছে যাদের একজন মৃত এবং বকি পাঁচজন বিদেশে অবস্থান করছেন।
এর মধ্যে মৃত জন হলেন রুবি বেগম (৪৮)। তিনি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চক ফতেপুর গ্রামের নিজাম শেখের স্ত্রী। বাকি পাঁচজন হলেন, পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের চক ফতেপুর গ্রামের শিউলি আক্তার (২৫), ছয় নম্বর ওয়ার্ডের চক ফতেপুর গ্রামের আমেনা খাতুন (২৮), চার নম্বর ওয়ার্ডের চক ফতেপুর গ্রামের ইতি খাতুন (২৭),
তিন নম্বর ওয়ার্ডের চক ফতেপুর গ্রামের মরিয়ম আক্তার (২৮), এক নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাপুর গ্রামের নেসা বেগম (৩২), ছয় নম্বর ওয়ার্ডের চকভবানীপুর গ্রামের বন্দনা ভট্টাচায্য (৪১)।
ঈশানগোপাল পুর ইউনিয়নের ভিডাব্লিউবি কর্মসূচির্ আওতার মোট কার্ডধারী হলেন ১৮৮জন। গত জানুযারি থেকে মে মাস পযন্ত পাঁচ মাসে প্রত্যেক নারীকে ১৫০ কেজি করে চাল (প্রতি মাসে ৩০ কেজি) বিতরণ করা হয়।
কিন্তু উল্লেখিত ১২জনকে এ চাল না দিয়ে বন্টন কমিটি এক হাজার আটশ কেজি চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগকারীদের সুত্রে জানা গেছে।
ফরিদপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেরা কৃষি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাল বিতরণে নিয়োজিত কমিটির সদস্য ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সচিব মো. রইচউদ্দীন বলেন, চাল বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি। কোন কার্ডধারী ব্যক্তি এলাকায় না তাকলে তার প্রতিনিধি এসে চাল গ্রহণ করেন। প্রতিনিধি চাল গ্রহণ করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়া আগে থেকেই হয়ে আসছে।
তিনি বলেন, চাল আত্মসাৎ করে বিক্রির কোর ঘটনা ঘটেনি। যারা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের কাউকেিইউনিয়নে খুঁজে বের করা যায়নি। আবার যাদের চাল না দিয়ে বিক্রি করার কতা বলা হয়েছে তারা কেউ অভিযোগ করেনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। যারা চাল পায়নি বলে অবিযোগকারীরা অবিযোগ করেচিলেন তাদের মতামত নিয়ছি। যারা অভিযোগ করেছেন তাদের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা নেই। তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। অভিযোগকারীদের বক্তব্য জানার পর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হবে।