পরিচয় মিলেছে রাজশাহী কারাগারের বন্দিনী আশা বানু’র,বাবার জিম্মায় মুক্তি

প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৭:৪৩

বিশেষ প্রতিনিধি
যায়যায়দিন

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি এক অজ্ঞাতপরিচয় নারীকে দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ, চিকিৎসা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে অবশেষে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। এরপর বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে তাকে পিতার জিম্মায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

কারা সূত্র জানায়, গত ১৭ মে ২০২৫ তারিখে দামকুড়া থানার মামলা নং-০৭, তারিখ-১৭/০৫/২০২৫ এর প্রেক্ষিতে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক মহিলা বন্দীকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তাকে সন্দেহভাজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে ১৯৫২ সালের বাংলাদেশ কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্টের ৪ ধারায় আটক করা হয়েছিল।

বন্দিনী শুরুর দিকে অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ছিলেন, কথা বলতেন না এবং নিজের পরিচয় প্রকাশে অক্ষম ছিলেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষের নিবিড় পর্যবেক্ষণ, মানসিক চিকিৎসা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। এরপর নানা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে তার প্রকৃত পরিচয় উদঘাটন সম্ভব হয়।

জানা যায়, তার নাম আশা বানু, পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, মাতা মৃত ফরিদা বেগম; ঠিকানা: হাকিমপুর, পোস্ট-মিঠাপুর, থানা- বদলগাছি, জেলা- নওগাঁ। অর্থাৎ, তিনি একজন বাংলাদেশি নাগরিক।

বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে আদালতকে লিখিতভাবে অবহিত করেন। আদালতের পরামর্শে বন্দীর জন্য আইনজীবী নিয়োগ করা হয় এবং তার পিতাকে নওগাঁ থেকে রাজশাহীতে এনে শুনানির ব্যবস্থা করা হয়।

গত ২ জুলাই ২০২৫, রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সকল পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে বিচারক সন্তোষজনক তথ্যের ভিত্তিতে আশা বানুকে তার পিতার জিম্মায় জামিনে মুক্তি দেন।

পরবর্তীতে স্মারক নং ৫৬৬২, তারিখ ০২/০৭/২০২৫ অনুযায়ী আদালতের রিলিজ অর্ডার রাজশাহী কারাগারে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে এসে পৌঁছায়। সমস্ত যাচাই-বাছাই শেষে বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে বন্দী আশা বানুকে তার পিতার জিম্মায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়।


রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, একজন অজ্ঞাত, মানসিকভাবে অসুস্থ নারীর পরিচয় নিশ্চিত করে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার এই প্রক্রিয়াটি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, তবে মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই এটি সম্পন্ন করা হয়েছে।