বিড়ম্বনায় দর্শনার্থীরা
শেখ রাসেল শিশু পার্ক এখন অনৈতিক কার্যকলাপ ও চাঁদাবাজদের আখড়া
প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৭:৫৩

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার একমাত্র বিনোদনের স্থান শেখ রাসেল শিশু পার্ক এখন নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও চাঁদাবাজির কারণে সংকটে পড়েছে। এই পার্ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি বখাটে চক্র, যারা পার্কে আসা সাধারণ দর্শনার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করছে, এমনকি চাঁদা আদায়ের মতো অপরাধেও জড়িয়ে পড়েছে।
চাঁদাবাজ চক্রের নেতৃত্বে ইউনুস শেখ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাটগাতী সরদারপাড়া গ্রামের গোয়েজ উদ্দিন শেখের ছেলে ইউনুস শেখ (২২)পার্কে তার দলবল নিয়ে নিয়মিত প্রবেশ করে। পার্কে আসা তরুণ-তরুণীদের টার্গেট করে হয়রানি, ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় তার প্রধান কাজ। নাইট গার্ড সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আমরা বাধা দিলে হুমকি দেয়। নিজের এলাকা বলেই ভয়ভীতি দেখায়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে চুপ করিয়ে দেয়।”
কিছুদিন আগে ইউনুস শেখ পার্কের ভিতরে একটি মেয়ের গায়ে পর্যন্ত হাত তোলে। এছাড়াও আরেক নাইটগার্ড আমিনুল ইসলাম বলেন পার্কের মধ্যে থেকে বিভিন্ন ধরনের জিনিসপএ তারা চুরি করে নিয়ে যায়। এবং ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জিম্মি করে টাকা পয়সা আদায় করে,আমরা ভয়ে মুখ খুলতে পারি না।
গত ২ ও ৩ জুলাই, টানা দুই দিন ইউনুস শেখ পার্কে পাশের গ্রামের এক কিশোরীকে দীর্ঘ সময় আটকে রাখে। স্থানীয়রা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পুলিশে খবর দিলে, পুলিশ এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। এবং অভিযুক্তি অনুচ্ছেদ ঘটনাস্থল থেকে মোবাইল রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়।এ বিষয়ে ইউনুস শেখ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মেয়েটি আমার গার্লফ্রেন্ড যার কারণে গতকাল এবং আজকে আমরা পার্কের মধ্যে ঢুকে বসছিলাম।
এবং পার্কের মধ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে বলে এলাকার বিভিন্ন পোলাপান করে আমার উপর দোষ চাপায়। এ বিষয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই নাজমুল এর সঙ্গে কথা বললে, তিনি জানান মেয়েটিকে আমরা থানায় নিয়ে আসছিলাম।স্থানীয় অভিভাবকরা মেয়েটিকে ইউনুস এর সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার শর্তে নিয়ে যায়।
এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে কিন্তু প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় বারবার ধামাচাপা পড়ে যায়।
দর্শনার্থীদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়াঅনৈতিক কাজের কারণে পরিবার নিয়ে পার্কে যেতে অনীহা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। দর্শনার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমছে, যা এই বিনোদন কেন্দ্রটির ভবিষ্যৎকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
এ বিষয় নিয়ে টুঙ্গীপাড়া পৌরসভার দায়িত্বরত এক্স এন শাহিনুজ্জামানের সঙ্গে কথা বললে, তিনি বলেন পার্কের দেয়াল টপকিয়ে স্থানীয় কিছু পোলাপান ভিতরে ঢুকে অনৈতিক কার্যকলাপ করেতে পারে। আমরা দেয়াল বড় করার প্রস্তাব দিয়েছি আশা করছি দেওয়াল হলে সমাধান হয়ে যাবে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে পদক্ষেপ নিব।
স্থানীয় জনসাধারণ ও সচেতন মহল আশা করে ইউনুস শেখ ও তার চক্রকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা পার্কে স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পার্কে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও আলোকসজ্জানিয়মিত টহল ও মনিটরিং টিম গঠন।
সচেতন মহল বলছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমিতে এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলতে পারে না। শেখ রাসেল শিশু পার্কের পরিবেশ রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এই পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয়।