লক্ষ্মীপুরে পিডিবির নির্বাহী ও উপসহকারী প্রকৌশলীর অপসারণ দাবি 

প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৮:০৮

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপসহকারী প্রকৌশলীর অপসারণ দাবিতে গ্রাহকদের বিক্ষোভ: ছবি যায়যায়দিন

লক্ষ্মীপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবির) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল আমিন ও উপসহকারী প্রকৌশলী মোকতাদিরে দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও গ্রাহক হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে তাদের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পিডিবির ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। 

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রেস ক্লাবে এসে প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়। লক্ষ্মীপুর শহরের ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র শিল্প মালিক ও বিদ্যুৎ গ্রাহকগণের ব্যানারে এই আয়োজন করা হয়।

প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আজিজ, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদসহ বহু ক্ষুব্ধ গ্রাহক।

বক্তারা বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ লোক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল আমিন ও উপসহকারী প্রকৌশলী মোকতাদির যোগদানের পর থেকেই গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার যেন তাদের নিয়মে পরিণত হয়েছে। পরবর্তীতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন তারা। 

তাদের প্রশ্ন, ‘প্রিপেইড মিটারে ডিউ বিল কীভাবে হয়?’ — এমন অসঙ্গত প্রশ্ন রেখে তারা দুর্নীতির প্রতিবাদে মুখর হন। 

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, পিডিবি লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আমিন এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলীর ঘুষ ও দুর্নীতির কারণে এখান কার  সাধারণ মানুষ চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। 
গত ২২ জুন হঠাৎ করেই ২০০-র বেশি প্রিপেইড মিটার লক করে দেওয়া হয়। ঘুষ না দেওয়াতেই এসব মিটার লক করা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
লিখিত অভিযোগে ১৬টি গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি মিটার ও ট্রান্সফর্মার ব্যবহারের নামে গ্রাহকের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা আদায়, এল.টি সংযোগের ভয় দেখিয়ে বাড়তি অর্থ আদায়, সরকারি মালামাল বিক্রির, একক ঠিকাদারকে বারবার কাজ দেওয়া, মিটার পরিবর্তন ও সংযোগে ঘুষের প্রচলন, এবং সরকারি ফ্রি সেবার নামেও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনা।

বিশেষ করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যেমন শিশু পার্ক, বারাকাহ মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল, সাবেক এমপি লাইলীর পিএস মামুনের ভবন, হ্যাপি রোড, আব্দুল গনি হেডমাস্টার রোড, এনআর গ্রীন টাওয়ার, চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর ৩৩ কেভি লাইন, ইত্যাদি স্থানে এসব অনিয়মের উদাহরণ তুলে ধরা হয়।

এছাড়াও অভিযোগ ওঠে, নতুন সংযোগ, লোড বৃদ্ধির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়, যা সরকারি নিয়মে সামান্য ফি-তে হওয়ার কথা। অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আমিন শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ঠিকাদার ‘সবুজ’ এর মাধ্যমে কাজ করিয়ে থাকেন এবং অন্যান্য ঠিকাদারদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিয়ে দেন।

সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, আগামী সোমবার (৭ জুলাই) জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগপত্র প্রদান এবং পিডিবি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে। 

প্রসঙ্গত, এর আগেও লক্ষ্মীপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবির) উপসহকারী প্রকৌশলী মোকতাদিরে দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও গ্রাহক হয়রানি নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়।