গাজীপুরে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৬:০১ | আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৬:০২

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে কারখানায় চুরির অপবাদ দিয়ে হৃদয় (১৯) নামের এক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির আরও তিন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তিন জেলায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে ওই প্রতিষ্ঠানের আরও তিন নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নতুন করে গ্রেপ্তার তিনজন হলেন কারখানার ফিডারম্যান মো. কাউসার (২৮), তিনি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার হারিয়াক্রাউন গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে; নিরাপত্তাকর্মী শামিম আহমেদ (৩৪), তিনি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার হলুদিয়া গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে এবং ম্যাকানিক্যাল ইনচার্জ রাশেদুল হাসান (৩৩), তিনি সিরাগঞ্জের শাহজাদপুর থানার চরদুগালী গ্রামের সারোয়ার হোসেনের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোনাবাড়ী এলাকায় গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড নামের কারখানার ভেতরে গত শনিবার ভোরে শ্রমিক হৃদয়কে চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তাঁকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই লিটন মিয়া বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা থেকে মো. কাউসার, শামিম আহমেদ ও রাশেদুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে কোনাবাড়ী ও আশপাশের এলাকা থেকে শফিকুল ইসলাম (৩০), বেলাল হোসেন (৪৫) ও হাসান মাহমুদ (৪০) নামের তিন নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেলাল হোসেনকে র্যাব সদস্যরা গ্রেপ্তার করে থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন বলেন, ঘটনার পর থেকে পুলিশ ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। অভিযান চালিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনো যাঁরা পালিয়ে আছেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
কারখানা খোলার দাবি হত্যাকাণ্ডের পর থেকে গ্রিনল্যান্ড লিমিটেডের কারখানা বন্ধ আছে। গত ছয় দিন কোনো কর্মকর্তা কারখানায় আসেননি। নিরাপত্তাকর্মীরা না থাকায় কারখানার ডাইং সেকশনের শ্রমিকেরা সেই দায়িত্ব পালন করছেন। বুধবার বিকেলে ২০–২৫ জন শ্রমিক কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
সুলতান আহমেদ নামে এক শ্রমিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘কয়েক দিন পর আমাদের বেতন নেওয়ার সময় হবে। এখন যদি কারখানা খুলে না দেওয়া হয়, তাহলে বেতন নিয়ে গড়িমসি করা হবে।’