শ্রমিক আন্দোলনের ফাঁদে মধ্যপাড়া খনির পাথর উত্তোলন বন্ধ

প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৬:১৮

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের মধ্যপাড়া খনিটি শ্রমিক আন্দোলনের মুখে পড়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়েছে। এতে সরকারের ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় দু-কোটি টাকা লোকশানের মুখে পড়েছে।

এদিকে শ্রমিক আন্দোলনের কারণে নিরাপত্তার জন্য পাথর উৎপাদন কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখে শ্রমিক ছুটি দিয়েছে খনি কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া শ্রমিক ধর্মঘট বৃহস্পতিবারও অব্যহত ছিল। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শ্রমিকরা।

খনি সুত্রে জানা গেছে প্রতিদিন সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন হয় খনি থেকে, যার বাজার মূল্য এক কোটি ৭৬ লাখ টাকা, যা শ্রমিক আন্দোলনের কারনে বন্ধ হয়ে পড়েছে।

খনিসূত্রে জানা গেছে, খনির ব্লস্টার শফিকুল ইসলাম, লং ড্রিল অপারেটর রফিকুল ইসলাম, অপারেটর ওমর আলী এবং জুনিয়র হেলপার হাসান আলী খনির ভূ-গর্ভে বিদেশী নাগরিককে জিম্মি করে আটক রাখে, এ কারনে ওই বিদেশী (বেলারুশ নাগরিক) নগিরিকরা ওই শ্রমিকদের সাথে কাজ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে, এ কারণে তাদেরকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এদিকে শ্রমিকদেও চাকুরিচ্যুত করার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে শ্রমিকরা।

 জিটিসি বলছেন খনির ব্লস্টার শফিকুল ইসলাম, লং ড্রিল অপারেটর রফিকুল ইসলাম, অপারেটর ওমর আলী এবং জুনিয়র হেলপার হাসান আলী খনির ভূ-গর্ভে বিদেশী নাগরিককে জিম্মি করে আটক রাখে, এ কারনে ওই বিদেশী (বেলারুশ নাগরিক) নগিরিকরা ওই শ্রমিকদের সাথে কাজ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে, এ কারনে তাদেরকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়
আন্দোলনরত শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন মধ্যপাড়া কঠিন শীলা খনিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদিন তিন শিফটে শ্রমিকদের মাধ্যমে পাথর উত্তোলনের কাজ পরিচালনা করে আসছে। চলতি বছরের মে মাসে কর্তৃপক্ষের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পাথর উৎপাদন করেন শ্রমিকরা। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও 'প্রোডাকশন প্রফিট বোনাস' না দেওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

তবে জিটিসি বলছেন ঈদের ছুটির কারনে প্রফিট বোনাস বন্ধের মধ্যে দেয়া সম্ভাব হয়নি, তারা আন্দোলনে নামার পূর্বে প্রফিট বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে, কিন্তু তারা তাদের ব্যাংক একাউন্ট তল্লাশী না করে আন্দোলন শুরু করেছে।

এদিকে আন্দোলন রত শ্রমিকরা বলছেন প্রফিট বোনাস না দেয়ার প্রতিবাদ করায় খনির ব্লস্টার শফিকুল ইসলাম, লং ড্রিল অপারেটর রফিকুল ইসলাম, অপারেটর ওমর আলী এবং জুনিয়র হেলপার হাসান আলীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরই প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেছেন শ্রমিকরা।

 তারা অব্যাহতি পাওয়া শ্রমিকদের পুনরায় চাকরিতে বহালের দাবি জানায় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলে হুশিয়ারী দেন।

এদিকে খনিকর্তৃপক্ষ বলছেন ঠুনকো অজুহাতে খনি শ্রমিকরা পাথর উত্তোলন বন্ধ কওে আন্দোলণ করায় প্রতিদিন সাড়ে ৫ হাজার মে.টন পাথর উত্তোলন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে খনিটি, যার বাজার মূল্য প্রায় এক কোটি ৭৬ লাখ টাকা। জিটিসি বলছেন সুধু এবারেই নয়, এশটি বিশেষ মহল এর পূর্বেও কয়েক দফা শ্রমিকদেও উসকে দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ করেছিল, এতে একদিকে যেমন সরকারের কোটি টাকা লেঅক শান হয়, অপরদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাও বড় রকমের লেঅকশানে পড়ে।

তবে মধ্যপাড়া পাথর খনির উপ-মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ রফিজুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে সকাল থেকে খনির পাথর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে পাথর বিক্রিসহ অন্যন্য কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা সরাসরি পেট্রোবাংলার অধীনে নয়, তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করেন। কতৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে শ্রমিকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি সমাধানের চেষ্টা করছে ।