মুরাদনগরে তিন খুন

গ্রামপুলিশ দিয়ে কবর খুঁড়ে দাফন, পাশে দাঁড়াল না কেউ

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২৫, ১২:০১

কুমিল্লা (মুরাদনগর) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

কুমিল্লার মুরাদনগরে গণপিটুনিতে নিহত  রুবি ও তাঁর দুই সন্তানের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়েছে কড়ইবাড়ি গ্রামের  কবরস্থানে। লাশ দাফনে এগিয়ে আসেনি গ্রামেবাসীর কেউ।  

শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রামপুলিশ দিয়ে তাঁদের  কবর খুঁড়া হয়। লাশ  দাফনের পূর্বে জানাজায় নিহতের পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও গ্রাম পুলিশ  অংশ নেন।  

নিহত তিনজন হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের জুয়েলের  স্ত্রী রোকসানা আক্তার  ওরফে রুবি (৫৫), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২২)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)।

গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টায় মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কড়ইবাড়িতে আলোচিত মাদক সম্রাজ্ঞী রুবি ও তাঁর  ছেলে-মেয়েসহ একই পরিবারের তিনজনকে গণপিটুনি দিয়ে  হত্যা করেন জনতা। এ ঘটনার পর পুরো এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান  বন্ধ। গ্রেপ্তার আতংকে পুরুষ শূন্য প্রায় পুরো গ্রাম। 

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য,  রুবি  দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত  মাদক ব্যবসাসহ এলাকায় চুরি ছিনতাইয়ের  নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই সে মামলা দিয়ে হয়রানি করতো।  এপর্যন্ত সে ৮২টি মামলার বাদী। অধিকাংশ মামলা নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগ। যেই মামলাগুলো  আপোষ মিমাংসায় হয়েছে তাঁর প্রায় সবকয়টিতে  মোটা অংকের টাকা আদায় করেছেন।  

সর্বশেষ স্কুল শিক্ষক  রুহুল আমিনের  মোবাইল চুরির সংশ্লিষ্টতায় এক চুর আটক করেন স্হানীয়রা। চোর ছাড়িয়ে নিতে রুবি ও তাঁর মেয়ের জামাই মনির হোসেন  স্হানীয় মেম্বার বাচ্চু মিয়া ও কড়ইবাড়ি স্কুল শিক্ষকের পরিবারের ওপর পৃথকভাবে  সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায়। 

রুবি  প্রথমে মেম্বারকে মেরে আহত করেন। পরে শিক্ষকের বাড়ি গিয়ে তাঁর   ছেলে ও ভাতিজাকে মারপিট করেন। এবিষয়টি  মিমাংসা করতে আসলে একই দিনে চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহর গায়ে হাত তুলেন রুবি। উপরোক্ত বিষয়ে  ক্ষুব্ধ হয়ে জনগণ তাঁদের গণপিটুনি দিয়ে  এ হত্যার ঘটনা ঘটায়। 

এবিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ  (ওসি) মাহফুজুর বলেন, নিহতের মেয়ে রুবী আক্তার বাদী হয়ে ৩৮ জনকে নামীয় ও অজ্ঞাত নামা ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে   মামলা দায়ের  করেছেন৷ 

ঘটনার পর এলাকা প্রায় পুরুষশূন্য। সবাই পলাতক।  ঘটনার সাথে জড়িতদের  ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। 
তিনি আরো বলেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারটির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।