চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত নারায়ণপুরে নৌ এ্যাম্বুলেন্সের দাবি
প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২৫, ১৭:৪০

জেলা ও উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন ২টি নদী দ্বারা বেষ্টিত ইউনিয়ন নারায়ণপুর। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ প্রায় সকল মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত এই ইউনিয়নের মানুষ।
১৯৪৩ সালে গঠিত এই ইউনিয়নের আয়তন ৫৫.৫৮ বর্গকিলোমিটার এবং জমির পরিমাণ ১৩ হাজার ৮১৩ একর। ২০২২ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী এই ইউনিয়নের জনসংখ্যা ৩৩ হাজার ১১৩জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৬ হাজার ৮১২ এবং নারীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৩০১জন।
তথ্য অনুযায়ী কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার মধ্যে এই ইউনিয়নের আয়তন সবচেয়ে বেশি হলেও ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গাধর নদী দ্বারা বেষ্টিত বৃহৎ আয়তনের এই ইউনিয়নে ৩টি কমিউিনিটি ক্লিনিক রয়েছে। আর একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র থাকলেও সেখানে নেই ডাক্তার, ফলে কাঙ্খিত সেবা মেলেনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান নারায়ণপুর ইউনিয়নটি নদীবেষ্টিত আর দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় এই ইউনিয়নের মানুষের উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র মাধ্যম নৌকা। ফলে কোনো দুর্ঘটনা শিকার কিংবা কোনো গুরুতর অসুস্থ রোগীকে উপজেলা ও জেলা শহরে চিকিৎসার জন্য নিতে চাইলে অধিকাংশ সময়ই হারাতে হয় তাদের স্বজনকে। তাই এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি একটি নৌ এ্যাম্বুলেন্সের। একটি নৌ এ্যাম্বুলেন্স হলে এখানকার অসুস্থ রোগীদেরকে নিয়ে আর কোনো ভোগান্তি থাকবে না বলে মনে করেন তারা।
নারায়ণপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কবিরুল ইসলাম এবং স্থানীয় শাহালম মিয়া, শাহনাজ পারভিন জানান নদী বিধৌত এই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় মূমুর্ষ রোগী নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয় তাদের। অনেক সময় মৃত্যু সয্যাশায়ী রোগীকে জেলা কিংবা উপজেলা শহরের হাসপাতালে নিতে চাইলে কোনো দ্রæতগামী যানবাহন না থাকায় অনেক সময় পথিমধ্যেই রোগীর মৃত্যু হয়। এছাড়াও কোনো প্রসূতি মহিলাকে দ্রæত সময়ের মধ্যে হাসপাতাল কিংবা ভালো কোনো ক্লিনিকে নিতে চাইলেও তা হয়ে ওঠে না।
নৌকাযোগে হাসপাতালে নিতে গেলে বেশিরভাগ সময় পথিমধ্যে অথবা আশেপাশের কোনো বাড়িতে কিংবা নৌকার মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে বাচ্চা প্রসব করতে হয়। এতে করে অনেক সময় প্রসূতি মহিলা কিংবা নবজাতক এমনকী উভয়েরই মুত্যু ঘটে।
কুড়িগ্রাম জেলা লেবার পার্টির সমন্বয়কারি আব্দুল কাদের মোল্লা জানান এখানকার মানুষকে খরা, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়। এর আগে তিনি নিজেই বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিতভাবে নৌ এ্যাম্বুলেন্সের আবেদন করলেও কোনো প্রতিকার পাননি।
নারায়ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা জানান, চরাঞ্চলীয় এই ইউনিয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষা স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সবদিক থেকে এখানকার মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছি।
একটি নৌ এ্যাম্বুলেন্স হলে এখানকার হাজারও প্রাণ বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ নারায়ণপুর ইউনিয়নের জন্য একপি নৌ এ্যাম্বুলেন্স ইতোদধ্যে অনুমোদন হয়েছে। এটি টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।