বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘এমন কর্মসূচি দেবো কল্পনাও করতে পারবেন না’

সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের হুঁশিয়ারি
যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ জুন ২০২৫, ১৬:০৮
‘এমন কর্মসূচি দেবো কল্পনাও করতে পারবেন না’
ছবি: সংগৃহীত

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। তারা বলেছেন, দাবি মানা না হলে ‘এমন কর্মসূচি দেবো কল্পনাও করতে পারবেন না।’

আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) ১১তম দিনের মতো সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন তারা।

1
বিক্ষোভকারীরা সচিবালয় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করেছেন। এরপর অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে অর্থ উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন।

আজ বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের চার নম্বর ভবনের সামনে থেকে কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিল নিয়ে তারা সচিবালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করে ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদাম তলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।

আন্দোলন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম।

বিক্ষোভ সমাবেশে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকালের বাজেটে মহার্ঘ ভাতার কোনো ঘোষণা নেই। সেটা না করে উল্টো আমাদের ওপর কালো আইন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা যদি মনে করেন আন্দোলন থেমে গেছে বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। আমরা এমন কর্মসূচি দেবো আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, ‘অধ্যাদেশ বাতিল বা আমাদের সঙ্গে যদি কোনো আপস না করা হয় আমরা শুধু কর্মবিরতি না অবস্থান কর্মসূচিও দিতে পারি। আমরা সারাদেশে এ কর্মসূচি ছড়িয়ে দেবো। আমরা সব সরকারি সেক্টরকে স্তব্ধ করে দেওয়ার মত ক্ষমতা রাখি। কিন্তু সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সহযোগিতার জন্য এমন কর্মসূচি দিচ্ছি না। কিন্তু আপনারা আমাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী ১৫ জুনের মধ্যে যদি কোনো ভালো সংবাদ না পাই। আমরা ওইদিন বসে কঠোর কর্মসূচি দেবো। আমরা বলতে বাধ্য হবো- আপস নয় সংগ্রাম।’

ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর বলেন, ‘আগামীকাল (৪ মে) যেহেতু ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস, তাই আমাদের কোনো কর্মসূচি থাকবে না। আগামী ১৬ জুন আপনারা সবাই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন। ওই দিন বেলা ১১টায় কেউ যাতে কর্মস্থলে না থাকেন। আমরা সবাই একত্রিত হয়ে সমস্বরে বলবো- অবৈধ কালো আইন, মানি না মানবো না।’

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের মহাসচিব মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, আপনারা মনে কইরেন না কর্মচারীরা বোকা। আপনাদের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল সেটা আর পূরণ হলো না। আপনারা চাচ্ছেন আপনাদের সঙ্গে সংঘর্ষ। ইনশাআল্লাহ যদি বেঁচে থাকি ঈদের পরে সংঘর্ষ দিয়েও যদি হয় তারপরও কালো আইন বাতিল করবো।’

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে কর্মচারীরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন। এরপর অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বরাবর স্মারকলিপি দেন।

চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন বিধান রেখে গত ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।

গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। তারা এ অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে