শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাত গভীর হলেই পদ্মায় শুরু হয় বালুখেকোদের তান্ডব

জাজিরা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
  ৩১ মে ২০২৩, ১৩:৫৩

রাত গভীর হলেই পদ্মাসেতু এলাকাসহ পদ্মানদীর জাজিরা, কাঠালবাড়ি এবং লৌহজং প্রান্তে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীদের তান্ডব শুরু হয়। বিশেষ করে মাওয়া প্রান্ত থেকে লৌহজং এলাকার বিস্তৃত নদীতে শতাধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে একটি অসাধু চক্র। এর সাথে মুন্সিগঞ্জের প্রভাবশালী কিছু মহল জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের মধ্যভাগ থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত বালু বহনের জন্য ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের হাজার হাজার বাল্কহেড কাঠালবাবাড়ি, জাজিরা এবং মাওয়া প্রান্তের বিভিন্ন জায়গায় এসে নোঙ্গর করতে থাকে। কিন্তু এসময় সাধারণত কোন ড্রেজারের অস্তিত্ব নদীতে পাওয়া যায়না। তবে রাত গভীর হলেই বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত ড্রেজার এসে রীতিমতো তান্ডব শুরু করে পদ্মার বুকে।

গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত চলে বালুখেকোদের এই তান্ডব। সবচেয়ে বেশি ড্রেজার লৌহজং সিমান্তে বালু কাটলেও কিছু কিছু ড্রেজার দিয়ে পদ্মাসেতুর আশেপাশের জাজিরা ও কাঠালবাড়ির সীমানা এলাকায় বালু কাটতে দেখা যায়। তবে মাঝীরঘাট ফাঁড়ির নৌ-পুলিশ তাদের এলাকায় ড্রেজার মেশিনের বালু কাটার বিরুদ্ধে খুব কঠোর ভূমিকা রাখলেও মাওয়া ফাঁড়ির নৌ-পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক একজন ড্রেজার ব্যবসায়ী জানান, পদ্মাসেতু এলাকার আশেপাশে অন্তত ১ শত ৭০ টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু কাটা হয়। এতে নৌ-পুলিশের বিভিন্ন সদস্যদের সহানুভূতি রয়েছে বলেও তিনি জানান। যার ফলে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা। তাছাড়া রাতের শেষভাগে নৌ-পুলিশ নদীতে না থাকারও সুযোগ নিচ্ছে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীরা।

মাঝীরঘাট ফাঁড়ির আইসি পুলিশ উপ-পরিদর্শক মো: জহিরুল হক জানান, আমরা সাধারণত জাজিরা প্রান্ত সবসময়ই ক্লিয়ার রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে লৌহজং সীমান্ত আমাদের পাশে হওয়ায় মাঝে মাঝেই কিছু ড্রেজার আমাদের এলাকায় ঢুকে পড়ে। তবে আমরা মাঝেমধ্যেই অভিযান চালিয়ে ড্রেজার মেশিনসহ বালু কাটার সাথে জড়িতদের ধরে নিয়ে আসি এবং মামলা দেই।

পদ্মাসেতু এলাকা ও তার আশেপাশে বালুখেকোদের এমন তান্ডবের ফলে পদ্মাসেতুও রয়েছে ঝুঁকিতে। তবে মাঝেমধ্যেই গভীর রাতে পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: কামরুল হাসান সোহেল। সবশেষ গত (২৬-মে) শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে একটি ড্রেজার আটক করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে