শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গরমে যেসব উপকার করবে লেবু পানি

ম সাজ্জাদ হোসেন শাওন
  ২১ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

এই গরমে সুস্থ থাকতে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে লেবু পানি পান করা উপকারী। লেবুর সুগন্ধ যেমন মন ভালো করে দেয় তেমনি এর পুষ্টিগুণ দেহকে সজীব করে তোলে। স্ফীতভাব কমায়, সাধারণের তুলনায় পেট বা কোমরের মাপ বৃদ্ধি পেলে লেবুর পানি তা কমাতে সহায়তা করে।

টাটকা লেবুর খোসাতেও পুষ্টি রয়েছে। প্রচন্ড গরমে ১ গস্নাস ঠান্ডা লেবুর শরবত দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং স্বস্তি ফিরে আনে। লেবু ভিটামিন-সি'সমৃদ্ধ ফল। এই ভিটামিন দেহে সঞ্চিত অবস্থায় থাকে না, সেজন্য শিশু-বৃদ্ধ সবাইকে প্রতিদিনই ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার খাওয়া দরকার। জ্বর, সর্দি, কাশি ও ঠান্ডাজনিত সমস্যায় লেবু অত্যন্ত কার্যকর। মুখের রুচি বাড়াতে লেবুর জুড়ি নেই।

বাজারে বিভিন্নরকম লেবু পাওয়া যায়। কাগজি লেবু, পাতি লেবু, কমলা লেবু, মোসাম্বি লেবু, গন্ধরাজ ও বাতাবি লেবু খুব পরিচিত আমাদের কাছে। ১০০ গ্রাম কাগজি বা পাতিলেবু থেকে যে সব পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় ভিটামিন-সি ৬৩ মিলিগ্রাম যা আপেলের ৩২ গুণ ও আঙুরের দ্বিগুণ, ক্যালসিয়াম ৯০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ১৫ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন-বি ১৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২০ মিলিগ্রাম, লৌহ ৩ মিলিগ্রাম। লেবু-পানি ফোলাভাব কমায়, কারণ এটি একটি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। আর দেহে জমে থাকা বাড়তি তরল অপসারণ করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, নিয়মিত লেবুর পানি পান দুর্বলতা কমায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

ভিটামিন-সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায়। ত্বক ভালো রাখতে প্রসাধনীর পেছনে টাকা খরচ না করে বরং নিয়মিত লেবুর পানি পান করলে পাওয়া যাবে সুস্থ ও উজ্জ্বল ত্বক। নিয়মিত লেবু পানি পান ওজন কমানোর মাত্রা কিছুটা সহজ করে দিতে পারে। লেবুতে থাকা প্রচুর ভিটামিন-সি রোগ প্রতিরোধে

সাহায্য করে। স্কার্ভি রোগ থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন-সি দেহের ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে এবং রক্তের জমাট বাঁধার ক্ষমতা বাড়ায়। লেবুতে পর্যাপ্ত ভিটামিন-সি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস হিসেবে কাজ করে দেহে ক্যানসারসহ নানা ঘাত-প্রতিঘাতের হাত থেকে রক্ষা করে।

শিশুদের দৈনিক ২০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি আবশ্যক। এ সময় ভিটামিন-সির অভাব হলে তা শিশুর ওপর প্রভাব পড়ে, ফলে শিশুর দাঁত, মাঁড়ি ও পেশি মজবুত হয় না। মাথায় খুশকি নিবারণে লেবুর রয়েছে অসাধারণ ক্ষমতা। লেবুর রস চুলের গোড়ায় ঘসে ঘসে লাগায়ে ১৫-২০ মিনিট পর পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে সপ্তাহে দুদদিন করে লাগালে মাথার খুশকি হবে সাফ এবং চুলের আঠালো ভাব দূর হয়ে চুল হবে উজ্জ্বল, মসৃণ।

যাদের অরুচি ভাব আছে তারা খাবারে লেবু খেলে রুচি ফিরে পাবে খুব দ্রম্নত। সুতরাং, আমাদের নিত্যদিনই ভিটামিন-সি জাতীয় ফল লেবু অন্যান্য সস্তা দেশীয় ফল আমলকী, পেয়ারা, কামরাঙ্গা, আমড়া ও কুল খাওয়া উচিত।

লেবুতে অত্যন্ত পুষ্টিগুণে ভরপুর। প্রচুর ভিটামিন-সি আছে। জ্বর, কাশি, ক্ষুধা মন্দা, বমিনাশক। কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে দু'বেলা পান করলে মেদ কাটে। লেবু, মধু পানি খুব জনপ্রিয়। ফ্যাট কাটাতে এর জুড়ি নেই। লেবু রুচি বাড়ায়, কৃমিনাশক। গরম ভাতে বা ডালের সঙ্গে কাগজি লেবুর রস। রীতিমতো অমৃত স্বাদ। কাগজি লেবুর আচারও খেতে সুস্বাদু। ১০০ গ্রাম লেবুতে ভিটামিন-সি আছে ৬৩ মিলিগ্রাম, যা আপেলের চেয়ে ৩২ গুণ এবং আঙুরের দিগুণ। ক্যালসিয়াম আছে ৯০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-এ ১৫ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামি-বি .১৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২০ মিলিগ্রাম, লৌহ .৩ মিলিগ্রাম।

রূপচর্চায় লেবু বিভিন্নভাবে ব্যবহার হয়। লেবুর রস মাথায় দিলে খুশকি দূর হয়। চুলের গোড়া মজবুত করে। রূপ লাবণ্য ধরে রাখতে লেবুর জুড়ি নেই। ঠোঁট ফেটে যায় ভিটামিন-সি'র আভাবে। অমসৃণ, শুষ্ক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে লেবুর রস ঠোঁটে লাগাতে পারেন। অধর হবে স্ফীত, কমল ও মসৃণ। লেবুর রসে আছে সাইট্রকি এসিড। যা ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর করে। ত্বক উজ্জ্বল করে। বলিলেখা অনেকেরই মাথা ব্যথার কারণ। লেবুর রস দিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। বলিরেখা দূর হবে। ডাবের পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। এতে ত্বক মসৃণ, কোমল, উজ্জ্বল হবে। অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে লেবুর রস ত্বকে লাগানো যায়। এতে করে ত্বকের খসখসে ভাব দূর হয়। নাকের উপর বস্ন্যাক হেড। কী বিশ্রী ব্যাপার। লেবুর রস নাকে লাগিয়ে বসে থাকুন। পরে ঘষা দিলে বস্ন্যাক হেড উঠে যাবে। মধু আর লেবুর রস মিশিয়ে তুলার সাহায্যে গালে লাগালে গাল উজ্জ্বল হবে। গাজরের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে লাগালে ব্রণের দাগ দূর হয়। লেবুর রসেই যে সব উপকার তা কিন্তু নয়। লেবুর খোসায় প্রচুর উপকারী উপাদান আছে। যেমন- ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-সি, পেকটিন, ফাইবার, মিনারেলস। লেবুর খোসা খেলে খারাপ কোলেস্টেরল কমে। প্রচুর ফাইবার বা আঁশ থাকায় খাবার ভালো হজম হয়। অন্ত্র পরিষ্কার থাকে। এর পেকটিন অন্ত্রের শর্করা শোষণ করে। যা ওজন কমাতে সহায়ক। লেবুর খোসা খেলে শকর্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। বিপাক ভালো হয়। যা ডায়বেটিস রোগীরদের উপকারে আসে। লেবুর খোসায় ক্যালসিয়াম থাকে। যা হাড়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুবই দরকারি। দৈনিক অল্প একটু সামান্য লেবু খেয়ে ভিটামিন-সি'র চাহিদার ৩০ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব। ভরপেট খেলেন। বেশ অস্বস্তি লাগছে। গরম পানিতে একটু লেবুর রস খেতে পারেন। পাকস্থলীতে কিছু গ্যাস তৈরি হলেও তা চলে যাবে। বেশ আরাম বোধ করবেন। হালকা গরম পানিতে লেবুর রস খাওয়ার অভ্যাস থাকা ভালো। চিকিৎসকরাই এমন বলেন। শরীরের

টক্সিন বেরিয়ে যায়। এতে লিভারও ভালো থাকে। লেবুতে অনেক উপকার আছে বটে। তবে বেশি খেলে অপকারও হতে পারে। লেবুর সাইট্রিক এসিড দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে। লেবু পানি খেয়ে দাঁত মাজা ভালো। অন্তত দিনে দু'বার দাঁত ব্রাশ করতে হবে। অতিরিক্ত লেবু খেলে বমি বমি ভাব। এমনকি বমি হতে পারে। ভিটামিন-সি প্রয়োজন। তবে বেশি হলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতিদিন ১২০ মিলিলিটার লেবুর রস খাওয়া যাবে। চিকিৎসকরা ১২০ মিলি লিটারের বেশি খাওয়া সমর্থন করেন না।

লেবুর পুষ্টিমান সম্পর্কে অনেকেরই জানা আছে। তবে পুরোপুরি গুণের কথা হয়তো সবারই জানা নেই। একেক সময় একেক রকম লেবু পাওয়া যায় বাজারে। পাতিলেবু, কমলালেবু, মোসাম্বিলেবু, গন্ধরাজ ও বাতাবিলেবু। টাটকা লেবুর খোসাতেও পুষ্টি রয়েছে। প্রচন্ড গরমে এক গস্নাস ঠান্ডা লেবুর শরবত দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং স্বস্তি ফিরে আনে। লেবু ভিটামিন-সি'সমৃদ্ধ ফল। এই ভিটামিন দেহে সঞ্চিত অবস্থায় থাকে না, সে জন্য শিশু-বৃদ্ধ সবাইকে প্রতিদিনই ভিটামিন-সি-জাতীয় খাবার খাওয়া দরকার। জ্বর, সর্দি, কাশি ও ঠান্ডাজনিত সমস্যায় লেবু অত্যন্ত কার্যকর। লেবুতে থাকা প্রচুর ভিটামিন-সি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। স্কার্ভি রোগ থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন-সি দেহের ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে এবং রক্তের জমাট বাঁধার ক্ষমতা বাড়ায়। লেবুতে পর্যাপ্ত ভিটামিন-সি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস হিসেবে কাজ করে দেহে ক্যানসারসহ নানা ঘাত-প্রতিঘাতের হাত থেকে রক্ষা করে। শিশুদের দৈনিক ২০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি আবশ্যক। এ সময় ভিটামিন-সির অভাব হলে তা শিশুর ওপর প্রভাব পড়ে। ফলে শিশুর দাঁত, মাড়িও পেশি মজবুত হয় না। সুতরাং নিত্যদিনই খাবারের সঙ্গে লেবু রাখা উচিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে