শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রামীণ অর্থনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নে বড় অবদান রাখছে পোলট্রি শিল্প

মো. সাজ্জাদ হোসেন
  ১৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

বাংলাদেশে পোলট্রি শিল্পের শুরুটা মোটেও আশাব্যঞ্জক ছিল না। সাধারণ মানুষ পোলট্রি র ডিম কিংবা ব্রয়লার মুরগির মাংস খেতেই চাইতো না। পোলট্রির মাংস যে কতটা সুস্বাদু, নরম এবং স্বাস্থ্যসম্মত তা বোঝাতে শুরুর দিকের উদ্যোক্তাদের অতিথি ডেকে এনে রান্না করা মাংস পরিবেশনও করতে হয়েছে। আশির দশকে এ শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৫শ' কোটি টাকা। আর বর্তমানে এ শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পোলট্রি উদ্যোক্তা ও খামারিদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগ এবং সরকারের আন্তরিক সহযোগিতার কারণেই এ অসাধ্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।

মাত্র চার যুগের ব্যবধানে সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর খাতটি এখন অনেকটাই আত্মনির্ভরশীলতার পথে। বর্তমানে পোলট্রির মাংস, ডিম, একদিন বয়সি বাচ্চা এবং ফিডের শতভাগ চাহিদা মেটাচ্ছে বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্প। সাধারণ গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য কম দামে প্রাণিজ আমিষের জোগান দিচ্ছে এ শিল্প। শিশুর দৈহিক গঠন ও মেধার বিকাশ, শ্রমজীবী মানুষের শক্তির জোগান, প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, সর্বোপরি স্বাস্থ্যবান জাতি গঠনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্প উলেস্নখযোগ্য অবদান রাখছে। নতুন প্রজন্মের রুচি ও চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এখন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে চিকেন নাগেট, সসেজ, ড্রামস্টিক, বার্গার, সামোসা, মিটবলসহ বিভিন্ন ধরনের মজাদার প্যাকেটজাত খাবার- যা কিছুকাল আগেও বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো।

বিগত বছরগুলোর তুলনায় বর্তমানে অপুষ্টির হার অনেক কমেছে। মা ও নবজাতকের মৃতু্য হার কমেছে; ৫ বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে খর্বাকায় ও কম ওজনের শিশুর সংখ্যা কমেছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু অনেক বেড়েছে, নতুন প্রজন্ম লম্বা হচ্ছে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাতেও আমাদের ছেলেমেয়েরা সম্মান ছিনিয়ে আনছে। এ অর্জনগুলো সম্ভব হয়েছে বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড এবং পুষ্টিসূচকের উন্নতির কারণে।

আজ থেকে ৩০ থেকে ৪০ বছর আগে মাথাপিছু ডিম খাওয়ার পরিমাণ ছিল বছরে গড়ে ৫ থেকে ৭টি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে এ সংখ্যা ১৩৬টি। সরকারি এ সংস্থার মতে, দৈনিক ডিম উৎপাদিত হচ্ছে বছরে প্রায় ৬ কোটি ৩৮ লাখ। ২০৩১ সাল নাগাদ ডিম খাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বছরে মাথাপিছু ১৬৫টি এবং ২০৪১ সাল নাগাদ ২০৮টি। বর্তমানে পোলট্রি মাংস উৎপাদিত হচ্ছে বছরে প্রায় ৩৮ লাখ টন। মুরগির মাংসের প্রাপ্যতা বছরে জনপ্রতি প্রায় ২২.৩৮ কেজি।

আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না। অর্থনৈতিকভাবে একটি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। শুধু ক্রিকেটেই নয়; অলিম্পিকেও সোনার মেডেল ছিনিয়ে আনতে চাই।

দেশীয় পোলট্রি শিল্পের অর্জন: আজ থেকে মাত্র ৪০ বছর আগেও বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্প প্রায় শতভাগ আমদানিনির্ভর একটি খাত ছিল। দেশীয় চাহিদা মেটাতে ডিম, মাংস, একদিন বয়সি বাচ্চা ও ফিড আমদানি করতে হতো। বর্তমানে দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে মুরগির ডিম, মাংস, একদিন বয়সি বাচ্চা ও ফিডের শতভাগ চাহিদা মিটছে। ভোক্তারা সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম ও মুরগির মাংস খেতে পাচ্ছেন। ২০১৯ সাল থেকে পোলট্রি ও ফিস ফিড ভারত ও নেপালে রপ্তানি হচ্ছে। বাজার আরও সম্প্রসারিত করার চেষ্টা চলছে। ২০২৫ সাল নাগাদ পোলট্রির মাংস, মাংসজাত পণ্য, ডিম ও মুরগির বাচ্চা রপ্তানির জন্যও প্রস্তুতি চলছে। গার্মেন্টস শিল্পের পর সবচেয়ে অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে পোলট্রি শিল্প। প্রায় ৬০ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এ খাতটি; যার প্রায় ৪০ শতাংশই নারী।

মাইক্রোসফটের জনক বিল গেটস বলেছেন- ঈযরপশবহং, হড়ঃ ঈড়সঢ়ঁঃবৎং, পধহ ংড়ষাব ঢ়ড়াবৎঃু. ঝঃৎধঃবমরপ অমৎরপঁষঃঁৎধষ ঝবপঃড়ৎ ধহফ ঋড়ড়ফ ঝবপঁৎরঃু উরধমহড়ংঃরপ ভড়ৎ ইধহমষধফবংয 'শীর্ষক উঋওউ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে 'ইধহমষধফবংয ংঃরষষ ভধপবং ভড়ড়ফ ংবপঁৎরঃু পযধষষবহমবং ফবংঢ়রঃব :ৎধহংভড়ৎসধঃরড়হ ভৎড়স ধ পযৎড়হরপ ভড়ড়ফ ংযড়ৎঃধমব :ড় ভড়ড়ফ ংবষভ-ংঁভভরপরবহপু'. প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়- 'অ ১% রহপৎবধংব রহ রহপড়সব ড়ভ ধমৎরপঁষঃঁৎব এউচ ঢ়বৎ ড়িৎশবৎ ড়িঁষফ ৎবফঁপব ঢ়ড়াবৎঃু নু ০.৩৯ %, যিরপয রং ০.১১% রহপধংব ড়ভ হড়হ-ধমৎরপঁষঃঁৎব এউচ ঢ়বৎ ড়িৎশবৎ পড়হঃৎরনঁঃরড়হ'.

কাজেই দেখা যাচ্ছে, অকৃষি খাতের চেয়ে কৃষিভিত্তিক খাতের মাধ্যমে অধিক হারে দারিদ্রতা দূর করা সম্ভব। পোলট্রি বৃহত্তর অর্থে কৃষির একটি অংশ। এখাতে শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে; ফলে গ্রাম থেকে শহরমুখী মানুষের স্রোত কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে, নারীর ক্ষমতায়নে কৃষির পরই সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে পোলট্রি শিল্প।

সাম্প্রতিক আলোচনায় পোলট্রি : সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত একটি বিষয় হচ্ছে- নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। রাশিয়া ও ইউক্রেন- এই দুই দেশের মাঝে যুদ্ধ বাধার পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম, বিশেষ করে ঋড়ড়ফ ও ঋববফ ইন্ডাস্ট্রির কাঁচামালের দাম হুহু করে বেড়েছে- যার প্রভাব পড়েছে উৎপাদন খরচ ও খুচরা মূল্যে। বাস্তবতা হচ্ছে, এ সময়ে বাংলাদেশের বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। ভোক্তাদের অস্বস্তি বেড়েছে, তবে বড় ধরনের কোনো প্রতিবাদ সেভাবে চোখে পড়েনি। হয়তো তারা এ সত্যটি উপলব্ধি করেছেন যে, উৎপাদন খরচ বেড়েছে, তাই উৎপাদকদেরও করার তেমন কিছু নেই। সে বিবেচনায় বলা যায় ব্যত্যয় ঘটেছে কেবলমাত্র পোলট্রির ক্ষেত্রে। ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ অত্যধিকমাত্রায় বৃদ্ধি পেলেও বাজারে খুব একটা বাড়েনি ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম। ফলে যখনই মার্কেট কিছুটা ঈড়ৎৎবপঃরড়হ হয়েছে, তখনই ভোক্তার অস্বস্তি বেড়েছে, গণমাধ্যমে বড় বড় হেডলাইন হয়েছে ডিম ও ব্রয়লার মুরগি।

তাহলে বিষয়টা কী এমন যে, ভোক্তা ভাবছেন অন্যান্য পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়লেও আসলে ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন খরচ বাড়েনি? ভোক্তাদের মাঝে কেন এ বিভ্রান্তি? অনেকে বলছেন, তথ্যের অভাবে কিংবা সঠিক তথ্য উপস্থাপিত না হওয়ার কারণে ডিম ও মুরগির খামারি-উদ্যোক্তারা মিথ্যা কথা বলছেন এমন ধারণা সাধারণ মানুষের মনে জেঁকে বসেছে। 'প্রান্তিক খামারি' বনাম 'করপোরেট খামারি'র বির্তক সৃষ্টির মাধ্যমেও দেশীয় খামারি ও উদ্যোক্তাদের অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর একটি অপপ্রয়াস চোখে পড়ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে ফিড তৈরির কাঁচামালের দাম বাড়তে শুরু করে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে তা লাগাম ছাড়া হয়ে যায়। এখন কিছু দিন পর পরই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে ভুট্টা, সয়াবিন মিলসহ অন্যান্য উপকরণের দাম।

দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারি মাস পর্যন্ত সময়ে কাঁচামালের দাম সর্বোচ্চ ১৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। যেহেতু ফিড তৈরিতে যে সব কাঁচামালের প্রয়োজন হয় তার মধ্যে ভুট্টা এবং সয়াবিন মিলের পরিমাণ প্রায় ৮০-৮৫ শতাংশ। কাজেই শুধু এ দু'টি কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি আমলে নিলে দেখা যায় ২০২০ সালের তুলনায় বর্তমানে ফিডের উৎপাদন খরচ প্রায় ১২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি গত বছরের (২০২২) সাথে তুলনা করা হয় তবে ভূট্টার দাম প্রায় ৫.৮৫ শতাংশ এবং সয়াবিন মিলের দাম গড়ে প্রায় ১৩৭.৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সে হিসাবে পোলট্রি ফিডের উৎপাদন খরচ বেড়েছে গড়ে প্রায় ৭১.৬৩ শতাংশ। উৎপাদন খরচের বিপরীতে ফিডের দাম কতটা বেড়েছে.....

২০২০ সালের চেয়ে ২০২৩ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাস পর্যন্ত ব্রয়লার ফিডের দাম বেড়ে (৪৮ টাকা থেকে বেড়ে ৭৩ টাকা) প্রায় ৫২ শতাংশ এবং লেয়ার ফিডের দাম বেড়েছে (৩৯ টাকা থেকে বেড়ে ৬২ টাকা) প্রায় ৫৮.৯৭ শতাংশ- যেখানে গড় উৎপাদন খরচ বেড়েছে প্রায় ১২০-১২৩ শতাংশ।

অন্যদিকে ২০২২ সালের চেয়ে ২০২৩ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাস পর্যন্ত ব্রয়লার ফিডের দাম বেড়েছে (৬০-৬৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৩ টাকা) প্রায় ১৬.৮০ শতাংশ ও লেয়ার ফিডের দাম বেড়েছে (৫৫-৫৮ টাকা থেকে বেড়ে ৬২ টাকা) প্রায় ৯.৭৪ শতাংশ- যেখানে গড় উৎপাদন খরচ বেড়েছে প্রায় ৬৮-৭১.৬৩ শতাংশ।

আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ফিড উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞ এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হোক (প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে কিন্তু কোনো অগ্রগতি নেই) এবং আগামী ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যেই তাদের হিসাব মতে যে উৎপাদন খরচ বের হয়ে আসে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক। প্রতি ৩ মাস পরপর যৌক্তিক উৎপাদন খরচ বের করা হোক এবং ঝধষধনষব চৎরপব কত হওয়া উচিত তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হোক। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর- উৎপাদন পর্যায়ে, পাইকারিতে এবং খুচরা পর্যায়ে কে কত লাভ করতে পারবে তার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। সে হারটিকে আমলে নেয়া হোক এবং বলা হোক আসলেই ফিড প্রস্তুতকারকরা সর্বোচ্চ কত টাকায় ফিড বিক্রি করতে পারবেন। শুধু ফিড নয়; ডিম, ব্রয়লার মুরগি, সোনালি মুরগি, একদিন বয়সি মুরগির বাচ্চা প্রতিটির ক্ষেত্রে একইভাবে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হোক এবং খামারিরা যেন সারা বছর জুড়ে নায্যমূল্যে ডিম ও মুরগি বিক্রি করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হোক।

একদিন বয়সি মুরগির বাচ্চা: বিগত ২০২২ সালের মে মাস থেকে একদিন বয়সি মুরগির বাচ্চার দরপতন শুরু হয়েছে। মাঝে আগস্ট-সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে মার্কেট কিছুটা কারেকশন হলেও পরবর্তী সময়ে আবারও মূল্য পতনের কারণে রুগ্নপ্রায় শিল্পে পরিণত হয়েছে এ খাতটি। প্রাথমিক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে একদিন বয়সি ব্রয়লার বাচ্চার সর্বনিম্ন দাম ছিল ৮ টাকা এবং সর্বোচ্চ দাম ছিল ৫১ টাকা, গড় দাম ছিল প্রায় ৩১.৫৮ টাকা যেখানে গড় উৎপাদন খরচ ছিল ৩৮.৭৮ টাকা। কাজেই দেখা যাচ্ছে- প্রতিটি একদিন বয়সি ব্রয়লার বাচ্চা বিক্রি করে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লোকসান হয়েছে প্রায় ৩.৯১ টাকা। অন্যদিকে, লেয়ার বাদামি বাচ্চার সর্বনিম্ন দাম ছিল ১৩ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৩১ টাকা, গড় দাম ছিল প্রায় ২২ টাকা; যেখানে গড় উৎপাদন খরচ ছিল ৪৬.৭৫ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি লেয়ার বাচ্চায় লোকসান হয়েছে প্রায় ২৪.৭৫ টাকা।

ডিমের উৎপাদন খরচ বনাম লাভ ও ক্ষতি: বর্তমান সময়ে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ প্রায় ১১ টাকা। গত ১ মার্চ ২০২৩ তারিখে খামারি বিক্রয় করেছে বাদামি ডিম ৯.৩৫ টাকা এবং সাদা ৮.৮৫ টাকায়। ২০২২ সালে পাইকারি বাজারে বাদামি ডিমের গড়মূল্য ছিল ৮.৭৯ টাকা এবং সাদা ডিমের ৭.৯২ টাকা; যেখানে গড় উৎপাদন খরচ ছিল ১০.৩১ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি ডিম বিক্রি করে খামারির লোকসান হয়েছে গড়ে প্রায় ১.৫২ টাকা থেকে ২.৩৯ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ বনাম লাভ ও ক্ষতি: বর্তমান সময়ে এক কেজির একটি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করতে খামারির খরচ হয় গড়ে প্রায় ১৪৯ টাকা থেকে ১৫২ টাকা। ২০২২ সালে পাইকারি বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ১১৮ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৪৮ টাকা। গড় মূল্য ছিল ১২৯ টাকা। যেখানে গড় উৎপাদন খরচ ছিল ১৪৪.৯৪ টাকা। কাজেই দেখা যাচ্ছে- প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করে একজন খামারি লোকসান গুনেছে প্রায় ১৫.৯৬ টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে