শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বন্ধুত্বের মেলবন্ধনে

মো. ওসমান গনি
  ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

রাত ৯টা হঠাৎ গাজী আনাসের ফোন। কিছুটা আলাপচারিতার পর বলে উঠল দোস্ত, 'আমরা তো একটা পিকনিক করতে চাচ্ছি, ৩ তারিখে। তুই কি থাকবি? প্রথমে একটু অসম্মতি থাকলেও পরে রাজি হয়ে গেলাম। আর তা ছাড়া সেই নভেম্বর থেকে শুরু করে ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, টিউটোরিয়াল, ইনকোর্স ও পরীক্ষার চাপে অনেকটা হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। ভাবলাম কিছুটা মানসিক প্রশান্তির জন্য এটা কার্যকর হবে। যথারীতি ৩ তারিখ দুপুর ২টায় ভার্সিটির গাড়ি দিয়ে ক্যাম্পাসে চলে এসে পার্শ্ববর্তী জান্নাত মেসে উঠলাম। সেখানে থাকা আমার সহপাঠী আল আমিন, তরিকুল ইসলাম সুমনের সঙ্গে কিছুক্ষণ গল্পস্বল্প করে, ওদের নিয়ে রওনা হলাম গাজী আনাসের মেহেদী ভিলা মেসের উদ্দেশে। খানিক পথ হাঁটার পরে গাজী আনাসের মেসে এসে দেখি আসাদুজ্জামান, সাব্বির, শাহাদাত, সাইফুলসহ সবাই খাবার তৈরিতে ব্যতিব্যস্ত। আসাদুজ্জামানের পেঁয়াজ, রসুন, আদাবাটা নিয়ে কিছুটা মজা করলাম। অতঃপর আমি, আল আমিন ও তরিকুল বের হলাম শেখপাড়া বাজারের দিকে। শেখপাড়া থেকে একটু নাস্তা সেরে ফিরে এলাম আনাসের মেসে। তারপরে লেগে গেলাম কাজে। গোস্ত ধুয়ে ও রসুন বেটে কিছুটা হাঁপিয়ে গেলাম। এরই মধ্যে এশারের জামায়াতের ওয়াক্ত হয়ে গেল। নামাজের জন্য রওনা দিলাম শেখ রাসেল হল মসজিদের উদ্দেশ্য। হঠাৎ! পথিমধ্যে সাক্ষাৎ হলো কামরুলের। তার সঙ্গে কিছুটা আলাপচারিতা শেষ করে সবাই নামাজ পড়তে গেলাম। নামাজ শেষে আমি, কামরুল, তরিকুল ও মামুন বের হলাম রাতের ক্যাম্পাসের দৃশ্যটা উপভোগ করার জন্য। রাতের ক্যাম্পাসে ভ্রমণের সঙ্গে কিছুটা খুনসুটি করে ফিরে গেলাম মেসে। সেখানে গিয়ে দেখি আরও অনেকেই এসে হাজির। সবার সঙ্গে মতবিনিময় করে বসলাম। তারপর শুরু হলো সাংস্কৃতিক আড্ডা। কামরুল তার হৃদয়কাড়া সুর দিয়ে মাতিয়ে তুললেন সবাইকে। তারপর ইহসান লটারি তৈরি করল। লটারির কাগজে যার নাম উঠবে। তাকে বিনোদনমূলক কিছু একটা করে দেখাতে হবে। প্রথমেই নাম এলো সাফওয়ানের। কিন্তু ওর ঘুম আসছে বলে অস্বীকৃতি জানালো। তারপরেই উঠল আমার নাম। কি একটা বিপদে পড়ে গেলাম! কিছুটা অস্বীকৃতি জানালাম। কিন্তু সবাই তো নাছোড়বান্দা, কিছু একটা গেয়ে বা করে দেখাতেই হবে। কি আর করার 'দে দে পাল তুলে দে ও মাঝি হেলা করিস না, ছেড়ে দে নৌকা আমি যাবো মদিনা' গানটার কয়েক লাইন গাইলাম। ধারাবাহিকভাবে তরিকুল, ফাত্তাহ, মূসা, হানিফুল, মাসুদ, আকরাম, সাঈদ, জিলস্নুর, বায়েজিদ, হাসান ইকবাল, আল আমিনসহ সবাই তাদের বিনোদন দিয়ে প্রাণবন্ত করে তুললেন এই আয়োজনটাকে। সাংস্কৃতিক এই আড্ডা চলতে চলতে খাবার তৈরি হয়ে যায়। তারপরে জিলস্নুর, আকরাম, শাহাদাতসহ কয়েকজন খাবার পরিবেশন করল সবাইকে। খাওয়া-দাওয়া শেষে গাজী আনাস ও কামরুল ডাম্বেল নিয়ে কিছুক্ষণ দুষ্টুমি করে, গভীর রাত হওয়ায় সবাই সবার মেসে ফিরে যায়। আর আমি ওখানেই থেকে গেলাম। সকাল ১০টা পর্যন্ত একটা জম্পেশ ঘুম দিলাম। সকালে বৃষ্টিস্নাত ক্যাম্পাস, ফসলের খেত ও প্রাচীরে ঘেরা শহর মাড়িয়ে ফিরে এলাম আমার মেসে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে