শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফুলে ফলে সুশোভিত শান্তিডাঙার ক্যাম্পাস

নানান রকম ফুল আর ফলে ছেয়ে গেছে ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রান্তর। কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, জারুল, ঘাসফুল, কদমফুল যেমন ক্যাম্পাসকে স্বর্গীয় রূপ দিয়েছে তেমনি তাল, কাঁঠাল, লিচু, আমসহ হরেক রকম মৌসুমী ফল তৃপ্ত করছে সবাইকে
রুমি নোমান
  ১৮ জুন ২০২২, ০০:০০

ফুল হচ্ছে সৌন্দর্যের প্রতীক। আর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সৌন্দর্যের লীলাভূমি। আপনি যখন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবেন এবং প্যারাডাইস রোড অবধি হেঁটে যাবেন, দুই পাশের ফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করবে আপনাকে। কথাগুলো বলছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তুহিন বাবু।

তার কথা প্রমাণ করতেই যেন রূপ সৌন্দর্যে দীপ্তমান হয়ে আছে সবুজ-শ্যামলে ভরা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৭৫ একরের এ ক্যাম্পাস প্রত্যেক ঋতুতে নতুনভাবে নিজেকে সাজিয়ে তোলে। সারা বছরই সৌন্দর্য আর স্নিগ্ধতা দিয়ে মাতিয়ে রাখে শিক্ষার্থীদের। গ্রীষ্মকালও যেন তার ব্যতিক্রম নয়। নানান রকম ফুল আর ফলে ছেয়ে গেছে ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রান্তর। কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, জারুল, ঘাসফুল, কদমফুল যেমন ক্যাম্পাসকে স্বর্গীয় রূপ দিয়েছে তেমনি তাল, কাঁঠাল, লিচু, আমসহ হরেকরকম মৌসুমী ফল তৃপ্ত করছে সবাইকে।

গ্রীষ্মের দাবদাহে যখন সকলে একটু প্রশান্তির খোঁজে ব্যস্ত ঠিক তখনি এসব ফুলের সুবাস আর সৌন্দর্য প্রকৃতিপ্রেমীদের বিমোহিত করে। চারদিকে মন মাতানো সব ফুলের সৌন্দর্যে অনেকে আবার কবি হয়ে ওঠেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী জয়শ্রী সেন বলেন, ক্যাম্পাসে বিভিন্ন রকমের ফুল আর মৌসুমী ফল শিক্ষার্থীদের জন্য প্রকৃতির আশীর্বাদ। বাইরে থেকে যখন পর্যটকরা আসেন তারা এখানকার মনোরম পরিবেশে এলেই মুগ্ধ হবেন।

সবুজ-শ্যামল ক্যাম্পাসে সাদা ঘাসফুল ফুটে প্রকৃতিকে যেন নতুনরূপে সাজিয়েছে। সবুজ ঘাসের বুকে সাদা ঘাসফুলের দোল খেলা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের মন ছুঁয়ে যায়। মনে হয় আমাদের ইশারায় ডেকে বলছেন ১৭৫ একরের সব সৌন্দর্যের রাণী আমি। এ ছাড়া রংবেরঙের বাহারি ফুল সুশোভিত করেছে পুরো ক্যাম্পাসকে।

ব্যস্ত সময়ে একটু অবসরের প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের গল্প আড্ডায় জমে ওঠে ফুলের বাগিচাগুলো। চারদিক থেকে ভেসে আসে ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক শব্দ। কেউ ব্যস্ত সেলফি তুলতে, কেউ ব্যস্ত বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে ছবি তুলতে। কেউবা প্রকৃতির মধ্যে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে মনের অজানা গন্তব্যে। কেউ আবার প্রেয়সীর চুলের খোঁপায় ফুল গুঁজে আড্ডা ও খুনসুটিতে মেতে উঠছেন।

কিন্তু সম্প্রতি মেগা প্রজেক্টের বাস্তবায়নাধীন থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু গাছ কাটা পড়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য কিছুটা হলেও নষ্ট হয়েছে বলে দাবি পরিবেশবাদী সংগঠন ও সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রিন ভয়েসের সভাপতি মোখলেসুর রহমান সুইট জানান, ক্যাম্পাসে আগের তুলনায় জনসংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় পরিকল্পিতভাবে বনায়ন হয়নি। কিন্তু প্রচুর বৃক্ষ নিধন করা হয়েছে। আমরা চাই পরিকল্পনা মাফিক বৃক্ষ রোপণ ও পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণ করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমরা মুজিববর্ষে বেশকিছু বৃক্ষরোপণ করেছি। মেগা প্রজেক্টের কর্মকান্ড চলমান থাকায় এ কার্যক্রম কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে আমরা পরিকল্পনা মাফিকভাবে ক্যাম্পাসের সবুজায়ন বৃদ্ধি করতে বদ্ধপরিকর।

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পার্শ্বে অবস্থিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম এ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। স্থানীয়দের ভাষায়, শান্তিডাঙার একটুকরো শান্তি এ ক্যাম্পাস। সময়ের সঙ্গে তাই, শিক্ষার্থীদের দাবি সৌন্দর্যের এ লীলাভূমি তার রূপ-যৌবনের সঙ্গে উচ্চশিক্ষার প্রসার বৃদ্ধি করুক সারা বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে