বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দরবনের টানে

এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আর নানান বৈচিত্র্যময় প্রাণী ও পাখি দেখা যায়। খুব কাছ থেকে হরিণ দর্শন মেলে। বানর ও বন্য শূকর তো অহরহ
ম আর এম রিফাত
  ২৭ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

সুন্দরবন দেখার ইচ্ছা ছিল প্রবল। দেশের অন্য প্রান্তে থাকায় সুযোগ হয়ে ওঠেনি। হঠাৎই রাত বাজে সাড়ে ১০টা। দুই বন্ধু যোগাযোগ মাধ্যমে আলাপচারিতায় ব্যস্ত। অন্য প্রান্ত থেকে হঠাৎ বার্তা এলো চলো সুন্দরবনে ঘুরতে যাই। কোনো কথা না ভেবেই আগ্রহ প্রকাশ করলাম। ৫ মিনিটে সিদ্ধান্ত নিলাম আগামীকালই তাহলে বের হবো। কিছু না ভেবেই পরের দিন বেরিয়ে পড়লাম।

বন্ধু এলো দিনাজপুর থেকে আমি তার সঙ্গে দুপুর ৩টায় সঙ্গী হলাম কুষ্টিয়া থেকে। আচমকা সিদ্ধান্তে চলছে ট্রেন গল্পে মাতোয়ারা দুই বন্ধু। গল্প গল্পে পৌঁছে গেলাম খুলনা সেখানে রাত্রিযাপন করে, পরদিন ভোরে মংলাবন্দরের দিকে ছুটে চললাম। সেখানে থেকে সকাল ৯টায় বোট নৌকায় করমজল অংশে প্রবেশ করতেই যেন হৃদয়ের যত অপূর্ণতা ছিল সব পূর্ণ হয়ে গেল।

চারপাশে সব ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের সমারোহ। এখানে সুন্দরী গোলপাতা আর গেওয়া গাছই বেশি দেখলাম। ভেজা মাটিতে মাথা উঁচিয়ে আছে হাজার হাজার শ্বাসমূল। হরিণের অনেক পায়ের ছাপও দেখলাম। সুন্দরবনের প্রায় সব স্পটেই হরিণের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছি।

এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আর নানান বৈচিত্র্যময় প্রাণী ও পাখি দেখা যায়। খুব কাছ থেকে হরিণ দর্শন মেলে। বানর ও বন্য শূকর তো অহরহ। সুন্দরী গাছ এখানকার অন্যতম আকর্ষণ। পুরো এলাকা সুন্দরী, গোলপাতাসহ বিভিন্ন উদ্ভিদে ঢাকা। এছাড়া আছে জাম ও কেওড়া বৃক্ষ।

প্রকৃতির সেই শখ সুন্দরবনের সৌন্দর্য নিজ চোখে দেখা হলো। নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে দোল খেতে খেতে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে গেলাম। ভালো লাগল প্রকৃতির বন্যপ্রাণীদের নানান ধরনের কসরৎ ও পাখির নানান সুরের কলতান। জোয়ার-ভাটা নদী ও সাগরের যৌবন নিয়ে খেলা করে। জোয়ার-ভাটার সঙ্গে মিতালী করে ধীরে ধীরে প্রকৃতিকে উপভোগ করলাম।

সুন্দরবনকে প্রকৃতির রানী বললে ভুল হবে না। অসম্ভব-অস্বাভাবিক রূপের আধার এই বনকে যিনিই দেখেছেন, তিনিই তার প্রেমে মজেছেন। একবার ভাবুন তো এমন বর্ণনাময় সুন্দরবনে কার না যেতে ইচ্ছে করে?

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে