বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বছর নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা...

জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে ২০২২ সাল সমগ্র পৃথিবীবাসীর কাছে স্মরণীয়-বরণীয় তথা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। কোভিড পরবর্তী মানবসৃষ্ট ইউক্রেনীয় সংকট, বৈশ্বিক মন্দা আরও একবার নাজেহাল সদৃশ অবস্থায় পর্যবসিত করেছে পৃথিবীবাসীকে। যা চেয়েছি, তার কতটুকু পেয়েছি এ বছর? তার হিসাব কষা কঠিন বৈকি। তাই তো, পুরনো জীর্ণতাকে ফেলে নতুন বছরে তারুণ্যের চাওয়া-পাওয়াকে লেখনী ধারায় তুলে ধরেছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, মোহাম্মাদ মারুফ মজুমদার।
নতুনধারা
  ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

নতুন বছর, নতুন চ্যালেঞ্জ

মিজবাহুল জান্নাত তারিন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

সত্য এটাই যে, শুভেচ্ছা বাস্তবজীবনে কোনো পরিবর্তন আনে না। গণমানুষের প্রত্যাশার জায়গা থেকে যেদিন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রিত হয়ে সাধারণ মানুষের থালায় পুষ্টিকর খাবার জুটবে, উন্নতির অন্তরায় দুর্নীতি রোধ করে মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ গড়ে নারী ও শিশু নির্যাতন যেদিন বন্ধ হবে অতিপরিচিত অভিবাদন 'হ্যাপি নিউ ইয়ার' সেদিনই অর্থবহ হয়ে উঠবে। তাও একঝাঁক স্বপ্নের সম্ভাবনায় মানুষ বাঁচে। আত্মসমলোচনায় অতীতের ভুল শুধরে সব শুভদের প্রত্যাশায় নতুন বছরে নিজ লক্ষ্যের প্রতি অধিক গতিশীল হতে চাই। অনবদ্য মিলনোৎসবে মেতে সব স্তরের মানুষের জীবনে বিস্তার ঘটুক প্রীতিময়তার। নতুন জীবন, নতুন স্বপ্ন, নতুন প্রত্যাশায় পুরনো দিনের হতাশা গস্নানি কাটিয়ে শিক্ষার চাঞ্চল্যতা ফিরে আসুক নববর্ষে। পাওয়া না পাওয়ার খতিয়ান না কষে প্রত্যয়ে ও সাহসে বুক বেঁধে নিজের কাজের মাধ্যমে সফলদের একজন হয়ে ওঠায় আগামীর প্রতিশ্রম্নতি। যা কিছু শুভ তাই হোক সত্যি। শুভ ইংরেজি নববর্ষ!

নতুন উদ্দীপনায় জীবন শুরু হোক

হাবিব উলস্নাহ রিফাত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

একটি বছরের বিদায়ে আরেকটি নতুন বছরের আগমন। দিনপঞ্জিকার পাতায় ২০২২-কে বিদায় জানিয়ে ২০২৩-এর আগমন। বিদায়ী বছরের বিষণ্নতাকে ছাপিয়ে পুরনো গস্নানি মুছে নতুনভাবে বাঁচার প্রত্যয়ে শুরু হয় নতুন বছর। নতুন বছরের আগমনী বার্তা আমাদের জীবনের ব্যর্থ অতীতের আবর্জনাকে পুড়িয়ে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করে।

ফিরে দেখা যাক গত বছরের চিত্র। পৃথিবীব্যাপী যুদ্ধ ও সংঘাত, মানবিক দুর্ভোগ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, নির্বাচনী সহিংসতা, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ অসংখ্য ঘটনা ছিল প্রতিদিনের সংবাদপত্রের অন্যতম শিরোনাম। এই দুর্বিষহ সামাজিক পরিস্থিতি ম্স্নান করে দেয় জাতির বিবেক ও মূল্যবোধ। গণমানুষের প্রত্যাশার জায়গা থেকে প্রবল আকাঙ্ক্ষা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রিত হোক। জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসুক। কমে আসুক ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য। মানুষের ভাতের থালায় পুষ্টিকর খাবার থাকুক। নতুন বছর সবার জীবনে অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক। সহিষ্ণুতা, উদারতা আর অন্যের প্রতি ভালোবাসা ছড়িয়ে এমন একটি মানবিক দেশ তৈরি হোক, যেখানে থাকবে না হিংসা-বিদ্বেষ, কলহ, ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি কিংবা লুটতরাজ। দেশের ক্রমবর্ধমান উন্নতি অব্যাহত থেকে একটি ভালোবাসার বাংলাদেশ গড়ে উঠুক-নতুন বছরে এটাই প্রত্যাশা।

নতুন আগমনে পূর্ণতার প্রত্যাশা

তাওহিদা মাহমুদ আরিয়ান

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

নতুন মানে সুন্দর এবং শুভ্রের আহ্বান। প্রতিটি নতুন বছরই আমাদের জীবনে নিয়ে আসে কিছু সুন্দর বার্তা। পুরনো বছরের হাজারো প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তির সুখ-দুঃখকে পিছিয়ে দিয়ে নতুনের আহ্বানে মত্ত হয় পৃথিবী। এই নতুন বছরের আশা, বাংলাদেশ তার নিজের গতি ফিরে পাবে, অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠবে। পাশাপাশি নতুন কিছু তৈরির জন্য দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠবে। মানবিকতা ও নৈতিকতা সমাজ ব্যবস্থায় আগের চেয়ে ব্যাপক মাত্রায় স্থান করে নেবে। পৃথিবীতে বন্ধ হবে ধ্বংস ও সহিংসতার দূষণ। নারীর অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। নারী যেন পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাম্যের বাণী সৃষ্টি করতে পারে, এমন একটি নতুন বছর। তীব্র ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারমুক্ত সুন্দর নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠুক। অশুভকে দূরে সরিয়ে সবার জন্য আশীর্বাদস্বরূপ হয়ে উঠুক নতুন বছরটি। পৃথিবীর বুকে বয়ে যাক সাম্য, শান্তির বাতাস। সব মিলিয়ে সুন্দর ও প্রাণবন্ত একটি বছরের অপেক্ষা।

তেইশের আগমন : স্বর্নালি ঊষা

আফিফা খানম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

উচ্ছ্বাস আর হতাশায় দোল খেতে খেতে ধুলো জমেছে ২২-এর ক্যালেন্ডারে। অতঃপর ২৩-এর আগমনী বার্তা। উচ্ছ্বাসকে সঙ্গ করে, হতাশাকে পিছু ফেলে, একটি সোনালি ঊষার স্বপ্ন নিয়ে আলিঙ্গন করতে যাচ্ছি নতুন বছরকে। ২৩ আসুক ভরা যৌবন নিয়ে, বসন্তের সুবাস নিয়ে।

অলসতা আর কুড়েমি, হতাশা আর নাভিশ্বাস, অপহরণ আর দুর্নীতিতে যেন ছেয়ে গেছে ২২-এর ক্যালেন্ডার। সভ্যতা যতই এগোচ্ছে, পুরো জাতি যেন নিমজ্জিত হচ্ছে অনৈতিক কর্মকান্ডে। জাতির মধ্যে তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত নরপিশাচের ঘৃণ্য হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না যুবতী থেকে শুরু করে নিষ্পাপ শিশুরা। লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের করাল গ্রাসে জর্জরিত হচ্ছে হতদরিদ্র থেকে মধ্যবিত্ত। সাধারণ জনগণের চোখেমুখে মাখামাখি করছে স্বাধীনতার অপ্রাপ্তি। সব অপ্রাপ্তির এবার অবসান ঘটুক, সাফল্য আর পূর্ণতার হোক গৌরচন্দ্রিকা।

আসছে বছর ২০২৩ যেন হয় ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনের একটি মাইলফলক। নতুন চেতনায় উজ্জীবিত হোক দেশ ও জাতি। আয়াতের মতো নিষ্পাপ শিশুরা পাক স্বপ্নীল শৈশব; উদ্যমী তরুণরা পাক তাদের স্বপ্ন ছোঁয়ার রঙিন ডানা; দেশ হোক দুর্নীতিমুক্ত, মোটা অংকের টাকার কাছে বিক্রি না হোক হতদরিদ্র অদম্য মেধাবীর স্বপ্ন; যেসব বাবা সন্তানের সফলতার মুকুট দেখবে বলে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছে, তারা যেন এবার অবসর পায়; অব্যক্ত স্বপ্ন নিয়ে চাতকী প্রতীক্ষায় যারা অশ্রম্ন ঝরাচ্ছে, তাদের যেন এবার সুখের অশ্রম্ন ঝরে।

সর্বোপরি, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা, জড়তা, মাদক, ঘুষ, জঙ্গি, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের ঊর্ধ্বে অবস্থান করবে আমার সমাজ তথা দেশ। ২০২৩-এ উন্মুক্ত হোক সম্ভাবনার নতুন দ্বার।

সবার জীবন শান্তিময় হোক

মোহাম্মদ এনামুল হক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

নতুন বছর নতুন উদ্দামে শুরু হোক সবার পথচলা? পুরাতনকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়া সভ্যতারই শিক্ষা। কিন্তু অতীত বছরের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে চলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। নতুন বছর মানে নতুন আশা, নব স্বপ্নের বীজ বোনা, তা বাস্তবায়নে নব্য পরিকল্পনা। গত বছরে আমরা অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে এসেছি, বিশ্বব্যাপী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ প্রভাব, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বে গতি ও জনজীবনে অর্থনৈতিক মন্দার সংশয়। সবার জীবনে শান্তির একমাত্র কারণ অর্থনৈতিক না হলেও প্রধানতম কারণ এটি? তাই আমার প্রত্যাশা সঠিক ও সুপরিকল্পিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে তা দূর করার চেষ্টা করা।

যুদ্ধ কোনোদিন শান্তি আনতে পারে না। এই নতুন বছরে আশা ব্যক্ত করি বিশ্ব মোড়লরা প্রতিহিংসার ও প্রতিযোগিতার পরিবর্তে শান্তির জন্য আলোচনা ও কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে যুদ্ধের ইতি টানুক। বিশ্ব হোক শান্তির ও জন্ম হোক পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও সম্মান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে