বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

খোলা আছে অনেক পথ

নতুনধারা
  ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
খোলা আছে অনেক পথ

প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি শিক্ষার সূচনা হয় ১৯৬১ সালে। বর্তমানে ১১টি প্রতিষ্ঠানে ভেটেরিনারি বিষয়ে পড়ানো হয়। দেশের প্রথম ও একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২০১৬ সালের মে মাসে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) ভেটেরিনারি শিক্ষা শুরু হয়। অন্য ১০টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমানতালে এগিয়ে চলছে এখানকার শিক্ষাকার্যক্রম। উচ্চমাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে ভেটেরিনারি শিক্ষায় আগ্রহীদের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি ক্যারিয়ার গড়ার গল্প জানিয়েছেন ১ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীর কথা তুলে ধরেছেন মোঃ জনি শিকদার।

জিন্নাহ্‌ আল ফেরদৌস (যশোর) বলেন, 'ছোটবেলা থেকে বোবা প্রাণের প্রতি আলাদা ভালোবাসা কাজ করত। এরই ধারাবাহিকতায় উচ্চমাধ্যমিকের পর সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হই। প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা থেকেই চিকিৎসা সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চেয়েছি। উন্নত বিশ্বে প্রাণী চিকিৎসাকে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে দেখা হয়।'

মির্জা সাকিব (সাভার) বলেন, 'আমার স্বপ্ন ছিল সেবা করার। বাবার চাকরি সূত্রে সাভার ক্যান্টনমেন্টে বড় হওয়া। যেখানে আর্মিদের জন্য একটি মিলিটারি ফার্ম রয়েছে। যেখানে যাওয়ার সুবাদে প্রাণীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। সেখান থেকেই শুরু। রিমাউন্ট ভেটেরিনারি এবং ফার্ম ডিপোসহ বিভিন্ন ফিল্ডে গিয়ে ভেটেরিনারি ডাক্তারদের কাজ দেখতাম। আমি ভেটেরিনারি সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।'

সজীব হোসেন (মানিকগঞ্জ) বলেন, 'পারিবারিক সূত্রে আমরা পশুপালন করি। পশু আমাদের পরিবারের একটি অনিবার্য অংশ। একপর্যায়ে আমাদের ৬টি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং চোখের সামনে একটি গাভী মারা যায়। গাভী মারা যাওয়ার বিষয়টি আমার মনে অনেক বড় দাগ কাটে। বোবা প্রাণীর ছটফটিয়ে মরে যাওয়ার যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে আমার নিজের অজান্তেই চোখে জল চলে আসে। কিন্তু নিকটস্থ কোনো ভেটেরিনারি চিকিৎসক না থাকায় দ্রম্নত চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এই মর্মাহত অবস্থায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করলাম। আমি বোবা প্রাণীর চিকিৎসক ও গবেষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করব।'

খন্দকার ফাহিম (টাঙ্গাইল) বলেন, 'বাল্যকাল থেকে দেখে এসেছি আমাদের বাড়িতে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল লালন-পালন করা হয়। গ্রাম্য এলাকায় প্রাণী চিকিৎসায় সময়োপযোগী কোনো ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। সেই ধারাবাহিকতায় আমার প্রাণীর চিকিৎসার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। আমি আমার পারিবারিক সূত্রে অবগত হই গণ বিশ্ববিদ্যালয় ভেটেরিনারি পড়ার সুযোগ রয়েছে। আমি একজন গুণগতমানসম্পন্ন পশু চিকিৎসক হতে চাই, যাতে করে প্রাণী সেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারি।'

চন্দন কুমার (পাবনা) বলেন, 'বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ পশুপালন যা ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং কৃষি জিডিপিতে তা ১০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। প্রাণিসম্পদ আমাদের দেশের অর্থনৈতিক খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রাণী চিকিৎসাতে অবদান রাখতে, দক্ষ ভেটেরিনারিয়ান হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চাই। তা ছাড়া ভেটেরিনারি পড়লে খোলা আছে অনেক পথ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে