বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এক মুঠো হাসির ৫ম বর্ষে পদার্পণ ও অজানা কিছু গল্প

জাবেদুর রহমান
  ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

সবকিছুর পিছনে কিছু না কিছু লুকায়িত গল্প থাকে। তা কেউ জানে কিংবা কেউ জানে না। হয়তো কেউ তা বলে কিংবা কেউ বলার সুযোগ পায় না। তবে, এক মুঠো হাসির অজানা গল্পটা ঠিক এরকম। যদি এতদূর না আসতে পারতাম হয়তো তাও বলা হতো না।

প্রতিটি কাজ শুরু করার আগে কঠিন মনে হয়। কিন্তু কাজের শুরুতেই যদি মানুষের সমালোচনা আর আলোচনায় যদি কাজটা আরও বেশি কঠিন হয়ে ওঠে তখন হয়তো অনেক কাজই শুরু করার আগেই বন্ধ হয়ে যায় অথবা শুরু করা হয় না।

এক মুঠো হাসির গল্পটা শুরু হয়েছিল ঠিক একইরকম ভাবে। শুরুতে, সমাজের কিছু মানুষ যেমন আমাদের উৎসাহিত করেছিল ঠিক একইভাবে কিছু মানুষ নিরুৎসাহিতও করেছিল। কিন্তু আমাদের বন্ধুত্বের একতা, সততা ও সৎসাহসের পাশাপাশি শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতার মাধ্যমে ৪টি বছর অতিক্রম করে ৫ম বছরে পা দিয়েছি।

২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে যখন একেকজন একেক জায়গায় পড়ালেখার সুযোগ করে নেয়। তখন সাইফ, আসিফ, জয়নুল, তালহা, সাব্বির ও জাবেদুরের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় মিমি, নাজিয়া, নিপা, মুক্তাদির ও মুস্তাকিমের সহযোগিতায় একমুঠো হাসি নামকরণের রূপ নেয় আল হেলাল কমিউনিটি সেন্টারে।

২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আল হেলাল কমিউনিটি সেন্টারে একমুঠো হাসি সামাজিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। একমুঠো হাসি সংগঠনটি হলো একটি অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও মানবকল্যাণমূলক সামাজিক সংগঠন। যারা অসহায়, নির্যাতিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে থাকে।

আমরা জানি, সমাজকে বদলাতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বিকল্প নেই। সেই ধারায় সমাজকে পরিবর্তন করতে সংগঠনটি নিরলসভাবে কাজ করছে। যে বয়সে তরুণ-তরুণীদের পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা সে বয়সে লেখাপড়ার পাশাপাশি দেশকে এগিয়ে নিতে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।

২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি ৩৫ জন গরিব অসহায় মানুষের মধ্যে লেপ বিতরণ দিয়ে যাত্রা শুরু করে। তারপর একের পর এক চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা, স্বাবলম্বী প্রজেক্ট, রক্তের গ্রম্নপ নির্ণয়, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, বস্ত্র বিতরণ, কুইজ প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, খাদ্য বিতরণসহ দুর্যোগকালীন সময়ে কাজ করে সংগঠনটি নবীগঞ্জ উপজেলায় সুনাম লাভ করেছে। পাশাপাশি সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা কর্তৃক শুভেচ্ছা স্মারক ও সম্মাননা স্মারক অর্জন করেছি।

১৪৬৫ দিন তথা ৪ বছরের পথচলায় অনেক কিছুকে সামলে নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমগুলো বাস্তবতায় রূপ দিতে সক্ষম হয়েছি। সবকিছুর শুরুতে কষ্ট হয় এটা মানিয়ে নিয়ে কাজ করেছি। ধীরে ধীরে আমাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজের মানুষের বিশ্বস্ততা অর্জন করেছি। সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা এবং পরামর্শ পেয়ে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করেছি।

পরিশেষে বলতে চাই, জীবনে চলার পথের সময়টা খুবই কম কিন্তু কাজ অনেক বেশি। আর এ চলার পথে যতই কষ্ট হোক না কেন কাজটা যদি হয় ভালো এবং সহজ তাহলে সময়টা দ্রম্নত অতিবাহিত হয়ে যায়। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল আমরা সুন্দর একটি সময় অতিক্রম করেছি সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী কাজের মাধ্যমে। আমাদের এই কাজকে সুন্দর, সফল ও সার্থক করার জন্য যারা আমাদের পাশে ছিলেন তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করছি। পাশাপাশি নতুন বছরের যেন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে পারি সে জন্য দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে