শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চড়ুইভাতি

মো. আবির হাসান
  ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

দিনটা ছিল শনিবার। একটি মহত্তম অভিজ্ঞতা সঞ্চারের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। ওই দিনে সংগঠনের নবীন সদস্যসহ একে অন্যের সঙ্গে পরিচয়ের এক অসামান্য মাধ্যম তৈরি হয়েছিল। অধিকাংশ সদস্যের উপস্থিতিতে উদযাপিত হলো এ বছরের চড়ুইভাতি অনুষ্ঠান। নতুন বছরকে কলমের নতুন শক্তিতে আলোকিত করতে এসব গুণী মানুষের সান্নিধ্য পাওয়াটা বড়ই ফলপ্রসূ। এ অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করতে বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আকিজ মাহমুদ ও মুরাদ হোসেন। সহযোগিতায় ছিলেন আরও অনেক কলমযোদ্ধা। অনুষ্ঠানের কিছু অংশের সৌন্দর্যবর্ধনে রাতভর শ্রম দিয়েছেন অনেকে।

শীতের সকালের সূচনালগ্নে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহনীয় একটা স্থান বোটানিক্যাল গার্ডেনে সংগঠনের সদস্যদের পালাক্রমে উপস্থিতি লক্ষণীয় ছিল। বেলার শুরু থেকেই সবার চোখেমুখে লেগে ছিল হাসি আর আনন্দের ছাপ। আশপাশের প্রকৃতিও যেন এই অনুষ্ঠানের সঙ্গ দিতে সময়োপযোগী আবহাওয়া নিয়ে হাজির হয়েছিল। ধীরে ধীরে সবার উপস্থিতিক্রমে একটা সংস্কৃতিমনা আমেজ নিয়ে শুরু হয়ে গেল অনুষ্ঠানের কার্যক্রম। চড়ুইভাতি নামটা কি শুধু ভালোমন্দ খাওয়া-দাওয়ার জন্যই? একেবারেই তা নয়। এটি বন্ধু-বান্ধব, নিকটাত্মীয়, প্রিয়জনদের মধ্যে আনন্দ উৎপাদন, একযোগে প্রত্যক্ষ বার্তা বিনিময়ের এক অন্যতম মাধ্যম। এই দিনে এরকমই আভাস মিলছিল উপস্থিত সবার চরিত্রে। এ অনুষ্ঠানকে সুসজ্জিত করতে আয়োজন করা হয়েছিল কিছু খেলার। বালিশ বদল, চেয়ার চেঞ্জিং এবং ছিল আকর্ষণীয় লটারির ব্যবস্থা। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখলকারীদের জন্য ছিল পুরস্কারের ব্যবস্থাও। এসব বিনোদনমূলক কার্যক্রম অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার কাছেই ছিল বেশ তৃপ্তিকর।

প্রহর গড়িয়ে দুপুর এলো। এ সময় বিটিসিএলএফ, চবি শাখার উপদেষ্টা ডক্টর মো. শেখ সাদী স্যার এসে উপস্থিত হলেন সবার মধ্যে। স্যারের সঙ্গে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন কৌশিক স্যারও। স্যারদ্বয় সবার উদ্দেশ্যে ইতিবাচক এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিলেন। শেখ সাদী স্যারের বাচনভঙ্গি, উপদেশসহ উচ্চারিত প্রত্যেকটা শব্দ শুনে সবার চোখেমুখে যেন লেপ্টে গেছিল কর্মচঞ্চলতার ছাপ। সবাই খুব অধীর আগ্রহে স্যারের কথা শুনছিলেন। আলোচনা শেষ করে খাবার জন্য সবাই বসে পড়লেন। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম বিনোদনের আরেক মাধ্যম নিয়ে এলেন বিটিসিএলএফ, চবি শাখা কর্তৃপক্ষ। এটি ছিল একপ্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত ইচ্ছের মতো। চিরকুটে লেখা অনুযায়ী পারফর্ম করতে হবে সবাইকেই। তো সেই মোতাবেক যার ভাগ্যে যেটা ছিল সেটাই করছিল সবাই। তবে এই পারফর্ম্যান্সের জন্য ছিল নগদ পুরস্কার। আনন্দঘন অনুভূতি দিয়ে শেষ হলো বিনোদনের এ অংশটি।

এবার লটারির ফলপ্রকাশের সময় এলো। ফলপ্রকাশ করলেন বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি; নেজাম উদ্দীন। লটারির ফল ঘোষণার ভঙ্গিমা ছিল মাত্রাতিরিক্ত আকর্ষণীয়। ভাগ্যিস কোনো হার্টের রোগী ছিল না এ ফোরামে! মুহূর্ত ছাপিয়ে দিনের আলো বিদায় বলতে এলো। সূর্যাস্ত নামার অন্তিম ক্ষণেও সবাই বেশ প্রাণবন্ত ছিল। স্নিগ্ধ শীতল এরকম একটা মুহূর্তের স্মারকচিহ্ন হতে কারই বা উৎকণ্ঠা না জাগে! যেখানে বিদ্যমান বহু-সংখ্যক আন্তরিক, বন্ধুসুলভ ও সুহৃদ মানুষ। এ দিনটি ছিল সংগঠনের নবীনদের জন্য একটা স্থায়ী অনুপ্রেরণার স্বাক্ষর। এ দিনটি, এ দিনটির সঙ্গে ভিড় জমানো মানুষ সত্যিই মনে রাখার মতো। এ সংগঠনের প্রতি হৃদয় নিংড়ানো অনুভব থেকে বলতে চাই। সদা ভালোবাসার প্রয়াসে চিরঞ্জীব হোক এ সংগঠন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে