বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তির অপেক্ষায়

ফারজানা ইয়াসমিন
  ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

মিতুর বয়স মাত্র পাঁচ বছর। ছোট্ট মিতু স্কুল থেকে এসে বাবাকে জিজ্ঞেস করে-

বাবা, স্বাধীনতা কী?

বাবা তাকে বলে, শত্রম্নরা আমাদের দেশ দখল করতে চেয়েছিল। তারা আমাদের কষ্ট দিত। আমাদের অবস্থা তখন বন্দি পাখির মতো ছিল। এই দেশ আমাদের। কিন্তু ওরা আমাদের স্বাধীনভাবে থাকতে দিত না। আমরা পরাধীন ছিলাম।

তখন আমরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করি। আমরা যুদ্ধ করে দেশকে শত্রম্নর হাত থেকে মুক্ত করি। অনেকে জীবন দিয়েছে এই যুদ্ধে- মা। এই দেশ আমাদের লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ। শত্রম্নরা আমাদের অনেক বাঙালিকে মেরে ফেলেছে। কিন্তু আমরা আমাদের দেশেকে রক্ষা করেছি। তোমার দাদুও যুদ্ধ করেছেন। তোমার দাদু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস।

মিতু বাবাকে জিজ্ঞেস করে, তাহলে এখন আমরা স্বাধীন বাবা?

বাবা মিতুর মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, স্বাধীন। তবে এই স্বাধীনতা আমদের রক্ষা করতে হবে মা। আমাদের সবার এই দেশের প্রতি দায়িত্ব আছে। তা যদি সবাই পালন করি। তবেই আমাদের দেশ সুন্দর একটা দেশ হবে। যেমন স্বপ্ন মুক্তিযোদ্ধারা দেখেছিলেন। ধীরে ধীরে তুমি সবকিছু বুঝতে পারবে মা।

২৬ মার্চ মিতু বারান্দায় গিয়ে খাঁচায় বন্দি মিঠুকে (টিয়াপাখির নাম) ছটফট করতে দেখে। তার অসম্ভব মায়া হয়। মিতুর মনে পড়ে বাবা বলেছিল, খাঁচায় বন্দি পাখির কথা। মিতু পাখিটাকে মুক্ত করে দিতে খাঁচার দরজা খুলে দেয়। পাখিটা যেন এই মুক্তির অপেক্ষায় ছিল। বন্ধ দরজা খোলা পেয়ে পাখি উড়ে যায় নীল আকাশে। মুক্তির স্বাদ নিতে।

মিতু দৌড়ে গিয়ে বাবাকে বলে, বাবা আমি খাঁচার দরজা খুলে দিয়ে মিঠুকে স্বাধীনতা করে দিলাম। মিঠু আকাশে উড়ে গেছে। মিঠু এখন স্বাধীন বাবা। আমাদের মতো স্বাধীন দেশ পাবে মিঠু।

বাবা মিতুকে কোলে নিয়ে আদর করে বলল, খুব ভালো মিতু। তুমি বুঝতে পেরেছ স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ। স্বাধীন বাংলাদেশে সবাই স্বাধীনভাবে বসবাস করবে। হোক সে পাখি কিংবা মানুষ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে