শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সংক্ষেপ

নতুনধারা
  ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

আদালত চত্বরেই মেয়ের ধর্ষককে গুলি করে হত্যা

\হআইন ও বিচার ডেস্ক

নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করেছিল এক যুবক। মাসখানেক জেলে থাকার পর অবশ্য জামিন পেয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে সে। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা। শেষমেশ আদালতের গেটের সামনে অভিযুক্ত যুবককে গুলি করে হত্যা করলেন তিনি।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে গত শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর অভিযুক্ত বাবা তথা ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিএসএফের ওই সাবেক কর্মকর্তা ভগবত নিশাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, নিহতের নাম দিলশাদ হুসেন (২৫)। তিনি বিহারের মুজফফরপুরের বাসিন্দা। মাস দুয়েক আগে জামিন পেয়েছিলেন দিলশাদ। অপহরণ এবং ধর্ষণের মামলায় ফের শুক্রবার গোরক্ষপুর আদালতে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই ঘটেছে হত্যাকন্ডের এই ঘটনা।

পুলিশ জানিয়েছে, ভগবতের নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ করে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল বিহারের মুজাফফরপুরের দিলশাদ হোসেন নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওঠে, ২০২০ সালের ১২ ফেব্রম্নয়ারি ওই নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করা হয়। এই অভিযোগ পাওয়ার প্রায় এক বছর পর হায়দরাবাদ থেকে দিলশাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বেশ কয়েকমাস জেলে থাকার পর সম্প্রতি সে জামিনে মুক্তি পায়। সেই সংক্রান্ত মামলা এখনো চলছে গোরক্ষপুর আদালতে।

ওই মামলার কারণে দিলশাদ হোসেন এদিন নিজের আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে তাকে দেখে ফেলেন মেয়েটির বাবা ভগবত। সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজের লাইসেন্সধারী বন্দুক বের করে দিলশাদকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। এরপরে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দিলশাদ। এ ঘটনার পরই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেন ভগবত ও তার ছেলে। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে দিলশাদকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পরে ভগবত এবং তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

২২ বছর ধরে স্বামী নিখোঁজ, আইনি লড়াইয়ে জিতলেন ৬৪ বছরের বৃদ্ধা স্ত্রী

\হআইন ও বিচার ডেস্ক

প্রায় ২২ বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। কিন্তু আইনের চোখে তা প্রমাণ করতে পারেননি বৃদ্ধা স্ত্রী। আবার প্রমাণ করতে না পারায় এত দিন চাকরি সূত্রে স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তি আদায় করতেও ব্যর্থ হন। তবে লড়াই থেকে পিছু হঠেননি তিনি। সংস্থার বিরুদ্ধে লড়াই জারি রেখেছিলেন নিজের পাওনা বুঝে নিতে। অবশেষে তা সম্পন্ন হলো। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এত বছর পর ফিরে পেতে চলেছেন স্বামীর রেখে যাওয়া চাকরির টাকা। অবাক করার মতো এমনই ঘটনা ঘটল পার্বতী দাস নামে এক ৬৪ বছরের বৃদ্ধার জীবনে।

হুগলির বৈদ্যবাটির বাসিন্দা পার্বতী। তার স্বামী শঙ্কর দাস হুগলির একটি জুটমিলে কাজ করতেন। পরিবারের দাবি, ২০০০ সালের মে মাসে গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান শঙ্কর। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। প্রায় দু'মাস পর থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন শঙ্করের স্ত্রী পার্বতী। কিন্তু তার পরেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি শঙ্করের।

আট বছর পর চাকরি সূত্রে স্বামীর ইডিএলআইর জমানো টাকা তুলতে চেয়ে জুটমিল সংস্থার কাছে আবেদন করেন। সংস্থাটি তখন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে ছিল। তারা জানায়, স্বামীর মৃতু্যর প্রমাণ দেখাতে হবে পার্বতীকে। অথচ আইন মোতাবেক যদি পরিবার দাবি করে, কোনো ব্যক্তি টানা আট বছর নিখোঁজ থাকলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু জুটমিল সংস্থাটি তা মানতে চায়নি।

এরপর চন্দননগর মহকুমা আদালতের দ্বারস্থ হন পার্বতী। তার আবেদন, তার স্বামীর মৃতু্য হয়েছে। আবার আইন অনুযায়ী তা বৈধ। তার পরেও কোনো বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিচ্ছে না সংস্থাটি।

২০০৯ সালে মহকুমা আদালত নির্দেশ দেয়, দেওয়ানি আইন মোতাবেক পার্বতীর স্বামী মৃত। ফলে এখন স্বামীর সম্পত্তির উপর স্ত্রী অধিকার জানাতেই পারে। আদালতের ওই নির্দেশ মেনে নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সংস্থাটি। তারা ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

প্রায় আট বছর ধরে উচ্চ আদালতে চলে ওই মামলার শুনানি। মামলাটি একক বেঞ্চ হয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যায়। তার স্বামী যে প্রয়াত হয়েছেন সর্বত্র তাই-ই প্রমাণ করতে হয় পার্বতীকে। অবশেষে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রাখে। বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও হিরণ্ময় ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন, সমস্ত পাওনা টাকা মিটিয়ে দিতে হবে ওই বৃদ্ধাকে। আদালতের এই রায়ের ফলে ১১ বছরের লড়াই শেষ হলো তার। তিনি জয়ী হলেন। এবং মৃত স্বামীর পাওনা আদায়ে সমর্থ হলেন।

এই মামলায় ওই বৃদ্ধার হয়ে উচ্চ আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী কলেস্নাল বসু এবং নীলাঞ্জন পাল। কলেস্নাল বলেন, 'প্রথমে ওই বৃদ্ধাকে নিজের স্বামীর মৃতু্যর প্রমাণ দিতে হয়েছে। তারপর চাকরি থেকে পাওনা টাকা আদায় করতে এত দিন লড়াই করেছেন। তিনি যে মিথ্যা দাবি করেননি আদালতের হস্তক্ষেপে অবশেষে তা প্রমাণিত হলো।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে