সম্প্রতি দিলিস্ন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক যুবক। পরিবার আদালতে তার বিয়েবিচ্ছেদের মামলা চলছে। বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, মামলার নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত স্বামীকে খোরপোশ দিতে হবে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান যুবক। তার যুক্তি, তার স্ত্রী উচ্চশিক্ষিতা। তিনি আগে চাকরি করতেন। কিন্তু এখন কোনো কাজ করেন না। ইচ্ছে করলে তিনি নিজেই আয় করতে পারেন। তা ছাড়া যে পরিমাণ অর্থ খোরপোশ হিসাবে তাকে দিতে বলা হচ্ছে, সেটা তার পক্ষে যথেষ্ট বেশি।
আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী জানান, মাসিক ৩০ হাজার টাকা করে তার মক্কেলকে খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই অঙ্ক অনেক বেশি। তার পর আদালতে তিনি তথ্য দিয়ে জানান, তার মক্কেলের স্ত্রী দিলিস্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। পরে তিনি একটি হাসপাতালের রিসেপশনে কাজ করতেন। বেতন পেতেন ২৫ হাজার টাকার আশপাশে। অন্য দিকে, তার মক্কেলের মাসিক বেতন ৫৬,৪৯২ টাকা। তার বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। বোনেরা রয়েছেন। তাদের সবার দায়িত্ব নিতে হয়।
তা ছাড়া, একটি ঋণ রয়েছে। মাসে মাসে তার সুদ গুনতে হয়। এমতাবস্থায় কীভাবে তার মক্কেল এতগুলো টাকা দেবেন?
অন্যদিকে, মহিলার পক্ষের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, তার মক্কেল সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করেন। কিছুদিন যে হাসপাতালে কাজ করতেন, সেখান থেকে কোনো পারিশ্রমিক তিনি নেননি। দুই পক্ষের সওয়াল এবং জবাবের পর ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পরিবার আদালত খরপোশের যে অঙ্ক দিতে বলেছেন, তার সপক্ষে কোনো যুক্তি দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া ওই যুবককে পারিবারের অন্য সদস্যদের ভার নিতে হয়। এরপর হাইকোর্ট বলে, 'স্বামী বা স্ত্রী উপার্জনে সক্ষম। কিন্তু তিনি চাকরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং বিচ্ছেদের পর সাবেক সঙ্গীর কাছে খোরপোশ চাইছেন, এটা সমীচীন নয়।' আদালত বলেন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কোনো স্বামী বা স্ত্রীর আর্থিক বিষয়ে সঙ্গীর বোঝা হওয়া উচিত নয়।
পরে দুই পক্ষের অবস্থা বিবেচনা করে ৩০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে খোরপোশের অঙ্ক ২১ হাজার করেন আদালত। তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে প্রতি বছর এই খোরপোশের অঙ্কের সঙ্গে দেড় হাজার টাকা যোগ হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।