শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

পাখিনামা

সুমন সরদার
  ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
পাখিনামা

১.

আমি যদি পাখি হতে পারতাম

তবে উড়ে বসতাম সুউচ্চ গাছের শীর্ষডালে

দেখতাম, সূর্যটা কোথায় গিয়ে লুপ্ত হয়ে যায়

কোনো বড় দালানের ছাদে গিয়ে সবাই যা দেখে

পাখিও কি সে রকম দেখে-

এই ভাবনা ছিল ছোট বেলাকার।

আরেকটু বড় হয়ে বুঝি

পাখি হলো প্রকৃতির সৌন্দর্য-সন্তান

প্রকৃতি সাজাতে বীজ বপনের এক ঋদ্ধ চাষি

ওরা গান গায়, হাসে খেলে, ওদের বাড়িও আছে

আহা! খড়কুটো দিয়ে গড়া বাড়ি, বড় লোভনীয়

মানুষের মতো ঠিকানা ওদেরও থাকে।

আজকাল ভাবি, ওরা যেন কবিতাকে ভালোবাসে

আমিও ওদের ঠোঁটে তুলে দিই প্রিয় কবিতাকে

বনে বনে গাছে গাছে ওরা কবিতার গান করে

আর সেই কবিতা পাখির সাদা পালকের মতো

খসে পড়ে...

বারবার খসে পড়ে...

একদিন মাটির ভেতর মিশে হয় একাকার।

মাটির ওপর সেই কবিতার বীজাঙ্কুর হয় কি না

তা জানতে আমি বসে থাকি মাটির নরম বুকে...

২.

আমার বাড়ির লনে বসে স্নিগ্ধ কবিতাকে খুঁজি

ক'দিনের বৃষ্টি মাটিকে সঁ্যাতসঁ্যাতে করে দিয়েছিল

তাই সোঁদাগন্ধ আসে ঘাস-শিকড়ের তলা থেকে

এক মাছরাঙা-ঠোঁটে তড়পায় জীবন্ত এক মাছ

এক জীবনের ঠোঁটে আরেক জীবন নৃত্য করে।

পলক ফেলার আগে ভাবি

এটা তো আমারই কবিতার মাছ

মুহূর্তে সে মাছ চলে গেল মাছরাঙার উদরে

এক জীবনের পেটে আরেক জীবন...

কবিতা এভাবে মরে যায়!

পাশের একটি ডালে সুমধুর গান করছিল

একজোড়া হলুদ দোয়েল...

মায়াবিনী...

গান নয়, মনে হলো, ঝরছে কবিতা...

সিগারেটের ছাই পড়ল আমার চোখে

চোখ কচলে ফিরে দেখি, গান নয়, হলুদ দোয়েল

ঠোঁটে নিয়ে বসে আছে রঙিন ফড়িং...

কবিতা কি রঙিন ফড়িং?

কবিতা কি তড়পানো জীবন্ত মাছ?

কবিতার দসু্য আজ পাখির স্বভাবে মিশে গেলে

আমি বড় একা হয়ে পড়ি...

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে