রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন মোড়কে নারীকেন্দ্রিক যাতনা

বিশ্বব্যাপী মোট দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই নারী যাদের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের নারীরা বিশেষত গ্রামীণ নারীরা অধিক মানবেতর অবস্থায় রয়েছে। জার্নাল অব গেস্নাবাল পলিসি-(২০২২) অনুযায়ী, মাসিক দ্রব্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিধি সুবিধা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মধ্যে এক বা একাধিক ক্ষেত্রে সুবিধা লাভের অভাবকে মাসিক দারিদ্র্য বা পিরিয়ড পোভার্টি বলে।
সুরাইয়া আক্তার
  ০৮ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার বাসিন্দা রহিমা বেগম (৩৭)। নিম্নবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা রহিমাকে পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠরা বয়ঃসন্ধিকালের শুরু থেকেই মাসিক ব্যবস্থাপনায় পুরনো কাপড়ের ব্যবহার শেখায়। তখন থেকে আজ অব্দি পুরনো কাপড়ই তার একমাত্র অবলম্বন। রহিমার দরিদ্র পরিবারে স্যানিটারি প্যাড এক বিলাসিতার নাম। দোকানে কিংবা টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে স্যানিটারি প্যাড দেখলেও কোনো দিন তার ব্যবহার করা হয়ে ওঠেনি।

টেলিভিশনে স্যানিটারি প্যাডের বিজ্ঞাপনে সাধারণত দেখা যায়, একজন স্বামী তার স্ত্রীর কিংবা পরিবার, তার কন্যা সন্তানের মাসিককালীন বাড়তি যত্ন নিচ্ছে, নিজ দায়িত্বে এনে দিচ্ছে স্যানিটারি প্যাড। তাই, পিরিয়ড নিয়ে সামাজিক ট্যাবু পূর্বের তুলনায় শিথিল হচ্ছে বলে দাবি করা যায়। বিষয়টি নিঃসন্দেহে আশাজাগানিয়া। তবে এ ধরনের বিজ্ঞাপনে প্রদর্শিত সামাজিক কাঠামো বেশির ভাগ সময়ই সমাজের উঁচু শ্রেণিকে প্রতিবিম্বিত করে। বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, স্যানিটারি প্যাড নিয়ে গণমাধ্যমে বহুল প্রচারিত বিজ্ঞাপনগুলো কেবল উঁচু শ্রেণির নারীদের দৃশ্যায়নেই সীমাবদ্ধ। বিষয়টি আরো সুস্পষ্ট হয় স্যানিটারি প্যাডের মোড়কে ছাপানো ছবি দেখে। এক্ষেত্রেও কেবল এক বিশেষ শ্রেণির নারীদেরই চোখে পড়ে। নারী জীবনের যাপিত অভিজ্ঞতা মনে প্রশ্ন জাগায়, পিরিয়ড কি সমাজের কেবল একটি শ্রেণিতে নারীতেই সীমাবদ্ধ? যদি তা না হয়ে থাকে তবে নারীদের বিশেষ প্রয়োজনীয় এই পণ্যটির বিজ্ঞাপনে এমন শ্রেণিকরণ কেন? এই ভাবনা থেকেই মূলত আমাদের গবেষণা কার্যের সূত্রপাত। এই গবেষণায় তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে শহর ও গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ১৫ জন কিশোরী ও নারীর 'ঞবংঃরসড়হরড়' গ্রহণ করা হয়।

পিরিয়ড বা মাসিক নারী জীবনের একটি অতি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় ঘটনা- যা একজন নারীকে সন্তান জন্মদানের সক্ষমতা প্রদান করে। সাধারণত ১০-৪৫ বছর বয়সি নারীদের জীবনে নিয়মিতভাবে এটি ঘটে থাকে (শরীর ও স্বাস্থ্য-২০২২)। বাংলাদেশের নারীরা বিশেষত প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পিরিয়ডের সময় পরিচ্ছন্নতা বা নিরাপদ ব্যবস্থাপনা না থাকার অন্যতম কারণ সামাজিক রক্ষণশীলতা (বিবিসি-২০১৮)। স্বাভাবিক একটি শারীরিক ঘটনাকে যখন সংস্কৃতিগতভাবে গোপনীয়তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয় তখনই একে ঘিরে তৈরি হয় বিভিন্ন সামাজিক নিষেধাজ্ঞা বা ট্যাবু। এমনকি একবিংশ শতাব্দীতে এসেও সমাজের কম বেশি প্রতিটি স্তরের নারীরা এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেন। এই ট্যাবু বাংলাদেশের নারীদের মাসিক ব্যবস্থাপনায় নানা বাধার সৃষ্টি করে। লোক লজ্জার কথা ভেবে এ বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা অনভিপ্রেত। 'নারীত্বের পূর্ণতা মাতৃত্বে'- কথাটি আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত। যে প্রক্রিয়ায় একজন নারী সন্তান জন্মদানের সক্ষমতা অর্জন করে সেটা কি তার লজ্জার বিষয় নাকি গর্বের সেটিও সামাজিক প্রেক্ষাপট দ্বারা নির্ধারিত।

বিশ্বব্যাপী মোট দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই নারী যাদের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের নারীরা বিশেষত গ্রামীণ নারীরা অধিক মানবেতর অবস্থায় রয়েছে। জার্নাল অব গেস্নাবাল পলিসি-(২০২২) অনুযায়ী, মাসিক দ্রব্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিধি সুবিধা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মধ্যে এক বা একাধিক ক্ষেত্রে সুবিধা লাভের অভাবকে মাসিক দারিদ্র্য বা পিরিয়ড পোভার্টি বলে। পিরিয়ড পোভার্টির বিভিন্ন সঙ্গা বিশ্লেষণ করলে পিরিয়ড পোভার্টির কিছু ধরন বা রূপ খুঁজে পাওয়া যায়- যার মূল বিষয় মাসিক ও সুষ্ঠু মাসিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত শিক্ষার অভাব, মাসিক ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় উপকরণের সহজলভ্যতা কিংবা এগুলো ক্রয় করার সামর্থ্যের অভাব, স্বাস্থ্যবিধি সুবিধা যেমন- পানি, সাবান, স্যানিটারি টয়লেট ও গোপনীয়তা বজায় রাখার সুবিধার অভাব, সংস্কৃতিগতভাবে মাসিককালীন ট্যাবু বা আচরণগত বিধিনিষেধ বা নিঃসঙ্গতা, লজ্জা বা হীনম্মন্যতা এবং মাসিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব।

মাসিক সংক্রান্ত এসব সমস্যা বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৫০০ মিলিয়ন নারীকে প্রভাবিত করে। বাংলাদেশে বর্তমানে ৫ কোটি ৪০ লাখ কিশোরী ও নারীর মাসিকের অভিজ্ঞতা হয়েছে (সুলতানা-২০২০)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর বিবিএস-২০১৮ এর এক জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, সচেতনতার অভাব আর মূল্য নাগালের বাইরে হওয়ায় দেশের ৭১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক নারী এখনো পিরিয়ডের সময় ডিসপোজেবল প্যাড ব্যবহার করেন না। প্যাডের পরিবর্তে পুরনো আর অপরিষ্কার কাপড় ব্যবহারে নানা সংক্রমণে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। জরিপ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রায় ৫০ শতাংশ কিশোরী স্যানিটারি ন্যাপকিনের পরিবর্তে অস্বাস্থ্যকর পুরনো কাপড় ব্যবহার করে।

প্রতিষ্ঠানভেদে বাংলাদেশে স্যানিটারি প্যাডের প্যাকেটের মূল্য গড়ে ১০০ থেকে ১৬০ টাকা যা একজন প্রান্তিক নারীর ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো বাংলাদেশে স্যানিটারি প্যাডের বড় অংশটি আমদানি হয় ভারত, চীন এবং থাইল্যান্ড থেকে। ফলে মেয়েদের অন্যান্য বিলাসী পণ্যের মতো এই স্যানিটারি প্যাডের জন্যও গুনতে হয় 'পিংক ট্যাক্সের' অতিরিক্ত মূল্যমান। স্যানিটারি প্যাড উৎপাদনকারী একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে, প্যাড তৈরিতে ব্যবহৃত প্রায় সব কাঁচামালের ওপর ভ্যাট প্রদান করতে হয় ১৫ শতাংশ হারে। সঙ্গে ২৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি এবং সেই সঙ্গে রয়েছে ৪ শতাংশ এডিটি। এই উচ্চ হারের ভ্যাট মওকুফ করা হলে প্রতি প্যাকেট স্যানিটারি প্যাডের দাম ৪০ শতাংশ কমানো সম্ভব বলে প্রতিষ্ঠানটি জানান। বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনবোধে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি বা প্রণোদনা প্রদান করে থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সরকার বিভিন্ন চিনি ও পাটকল টিকিয়ে রাখতে প্রচুর ভর্তুকি প্রদান করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরেও সরকারি ভর্তুকির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কৃষি, বিদু্যৎ ও জ্বালানি খাত। নিঃসন্দেহে এসব খাত আমাদের জীবন এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মানবাধিকার ও মৌলিক প্রয়োজনীয়তার বিচারে একজন নারীর মাসিক ব্যবস্থাপনায় তার স্যানিটারি পণ্য হাতের নাগালে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের নারীরা জানান, প্রতি প্যাকেট স্যানিটারি প্যাডের দাম অনেক। কোম্পানিভেদে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ টাকা। স্বল্প আয়ের পরিবারে থেকে মাসে ১০০-২০০ টাকা ব্যয় করলে অন্য গুরুত্বপূর্ণ খাতের হিসেব মেলানো দায় হয়ে পড়ে।

\হএ গবেষণায় অংশগ্রহণকারী একজন তথ্যদাতা বলেন, 'আমার পরিবারে আমিসহ তিনজন নারী রয়েছি। সাংসারিক খরচ, কৃষি কাজের খরচ আর সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তার ওপর তিনজনের জন্য প্যাড কিনতে হলে বাড়তি খরচের চাপ হয়ে যায়।' তাই ইচ্ছা থাকলেও তারা স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে পারেন না। এর পরিবর্তে বাধ্য হয়ে পুরাতন কাপড় ব্যবহার করেন তারা।

একটি গ্রামের উচ্চ বিদ্যালয় পড়ুয়া কিশোরী জানান, 'পরিবারের বড়রা আমাকে পুরনো কাপড় ব্যবহার করতে শিখিয়েছে। আমার সহপাঠীরা কেউ স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করে এমনটাও কখনো শুনিনি।'

ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও ওয়াটারএইডের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর সবশেষ জরিপ 'ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে-২০১৮' এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সচেতনতার অভাব ও দাম বেশি হওয়ায় দেশের ৪৩ শতাংশ কিশোরী ডিসপোজিবল প্যাড, ৫০ শতাংশ পুরনো কাপড় এবং বাকিরা নতুন কাপড় ও তুলা ব্যবহার করে। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের মধ্যে ২৯ শতাংশ ডিসপোজিবল প্যাড ও ৬৮ শতাংশের বেশি পুরনো কাপড় ব্যবহার করেন। বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোর আগে মাসিক সম্পর্কে শুধু ৫৩ শতাংশ স্কুলছাত্রীর পর্যাপ্ত তথ্য থাকে। মাসিক সময়ে ৩০ শতাংশ ছাত্রী স্কুলে আসা বন্ধ রাখে এবং ৩৪ শতাংশ স্কুলছাত্রী মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় পুরনো কাপড় ব্যবহার করে (জাতীয় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ জরিপ-২০১৮)। অধিকন্তু, অনেক কিশোরীই স্বাস্থ্যবিধি এবং কাপড়ের যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে অবহিত নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'প্যাড কেনার সামর্থ্য থাকলেও আমাকে অনেক সময় টিসু্য পেপার ব্যবহার করতে হয়। যদিও আমি শুনেছি এতে স্বাস্থঝুঁকি থাকে, কিন্তু পাবলিক টয়লেটে প্যাড ফেলার ব্যবস্থা থাকে না ফলে বাধ্য হয়ে টিসু্য ব্যবহার করতে হয় যাতে টয়লেটেই ফেলে দেয়া যায়'।

আমাদের সমাজে একজন নারীর মৌলিক প্রয়োজনীয় এই পণ্যটির মূল্য সব স্তরের নারীর সামর্থ্যের মধ্যে নেই। ফলস্বরূপ যে পণ্য খাদ্য এবং ওষুধের মতোই অতি বিবেচ্য পণ্যের কাতারে জায়গা নেওয়ার কথা, তা জায়গা পেয়েছে চড়া দামের উচ্চবিত্তের প্রসাধনী পণ্যের কাতারে। 'মাসিক' শব্দটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ট্যাবুর কারণে এটা নিয়ে কোনো সামাজিক আন্দোলন গড়ে ওঠার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তাই যদি মাসিক ব্যবস্থাপনায় স্যানিটারি প্যাডের ব্যবহারকে জোরদার করতেই হয় তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আমাদের নিজস্ব স্যানিটারি প্যাড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ ভর্তুকি কিংবা প্রণোদনা প্রদান করে স্যানিটারি পণ্যের মূল্য কমিয়ে সব স্তরের নারীর হাতের নাগালে আনতে হবে। পাশাপাশি স্যানিটারি প্যাডের বর্জ্য নিষ্কাশনের সুবন্দোবস্ত করতে হবে।

দেশের সার্বিক প্রেক্ষাপট বিচারে, সব নারীকে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতেই হবে এমন দাবি করা আসলে কতটুকু গ্রহণযোগ্য? কেননা, দামের পাশাপাশি বর্জ্য নিষ্কাশন পদ্ধতি, নারীদের অভ্যস্ততা এবং মাসিক সংক্রান্ত ইনডিজেনাস জ্ঞান প্রভৃতি বিষয়াবলিকে চিন্তায় আনতে হবে। মাসিক ব্যবস্থাপনায় কাপড়ের ব্যবহার চলতেই পারে তবে সেটা স্বাস্থ্যসম্মত করার জন্য সঠিক আলোচনা এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার সুবিধাটুকু থাকা প্রয়োজন। বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের পুঁজিবাদী সুবিধা নিশ্চিত করতে স্যানিটারি প্যাডের প্রচারণা করবে এটাই তাদের জন্য স্বাভাবিক। ভাবার বিষয়, যদি প্যাডের উপযোগিতা দেখানোকে ছাড়িয়ে, এ দেশের নারীদের কাপড় ব্যবহারের ইনডিজেনিয়াস জ্ঞানকে স্বাস্থ্যকর করার প্রয়াস নেয়া হতো তবে কি সেটা বেশি উপযোগী হতো না?

পিরিয়ড দারিদ্র্য নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অনেক সমস্যার মূল কারণ। অন্যান্য ধরনের দারিদ্র্যের মতো পিরিয়ড দারিদ্র্যও একজন নারীর জন্য ভয়াবহতা নিয়ে আসে। দারিদ্র্য সীমার নিচে একই পারিবারের একজন পুরুষ এবং একজন নারীর দরিদ্রতার মাত্রা ভিন্ন। এই নারীটি আর্থিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে দরিদ্র তো বটেই, একইসঙ্গে সে একজন মাসিক দরিদ্র। দুঃখের বিষয় হলো, অন্য যে কোনো ধরনের দারিদ্র্য পরিমাপের মানদন্ড থাকলেও মাসিক দারিদ্র্য পরিমাপের কোনো মানদন্ড বাংলাদেশ তো দূরে, বিশ্বের কোথাও নেই। ভাবনার বিষয় হলো মাসিক দারিদ্র্য বিভিন্ন রূপ নিতে পারে এবং যে কোনো রূপেই নারীর মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যে দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী, যে দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ নেতৃস্থানীয় অনেকেই নারী, যে দেশের নারী ফুটবল খেলোয়াড়দের সফলতার হার পুরুষদের থেকেও বেশি সে দেশের নারীদের পিরিয়ড দারিদ্র্য দূর করার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার এখনই সময়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে