রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষের কাছাকাছি বুদ্ধি যাদের

বুদ্ধি এমন একটি আশ্চর্য ক্ষমতা যা কেবল মানুষেরই রয়েছে সবচেয়ে বেশি। তাই পৃথিবীটা মানুষের দখলে। পৃথিবীতে সবচেয়ে বুদ্ধিমান হিসেবে পরিচিত প্রাণী হলো মানুষ। তবে মানুষ ছাড়াও আরও কিছু প্রাণী রয়েছে যারা বিস্ময়করভাবে বুদ্ধিমান। বিস্ময়কর সৃষ্টি জগতের স্পন্দনে মুখর প্রকৃতি অকপটে জানান দেয় জ্ঞানীয় ক্ষমতার দিক থেকে মানুষের সমকক্ষতার কথা। এসব প্রাণী বেশিরভাগই আপনার আমার পরিচিত। না দেখলেও টিভিতে দেখেছি বা এর সম্পর্কে পড়েছি।
অলোক আচার্য
  ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

পৃথিবী এক রহস্যময় স্থান। এই রহস্যময় স্থানের বহু স্থান এবং প্রাণী রহস্যময়। বুদ্ধি এমন একটি আশ্চর্য ক্ষমতা যা কেবল মানুষেরই রয়েছে সবচেয়ে বেশি। তাই পৃথিবীটা মানুষের দখলে। পৃথিবীতে সবচেয়ে বুদ্ধিমান হিসেবে পরিচিত প্রাণী হলো মানুষ। তবে মানুষ ছাড়াও আরও কিছু প্রাণী রয়েছে যারা বিস্ময়করভাবে বুদ্ধিমান। বিস্ময়কর সৃষ্টি জগতের স্পন্দনে মুখর প্রকৃতি অকপটে জানান দেয় জ্ঞানীয় ক্ষমতার দিক থেকে মানুষের সমকক্ষতার কথা। এসব প্রাণী বেশির ভাগই আপনার আমার পরিচিত। না দেখলেও টিভিতে দেখেছি বা এর সম্পর্কে পড়েছি। এর মধ্যে অন্যতম হলো ডলফিন নামের প্রাণিটি। চলুন, ডলফিন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ডলফিন : মানুষের পরেই বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে যে প্রাণীটির নাম উঠে আসে সেটি হলো ডলফিন। অন্তত বিজ্ঞানীদের সে রকমই ধারণা। আবার ডলফিনের আচরণও সে কথাই বলে। অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা এবং উচ্চতর জ্ঞানীয় ক্ষমতার জন্য মানুষের পরেই সর্বাধিক।

ডলফিনের বুদ্ধিমত্তার একটি আকর্ষণীয় দিক হলো তাদের হাতিয়ার ব্যবহার। ডলফিনরা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে তাদের নানা ধরনের কণ্ঠস্বর এবং শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করে যোগাযোগের দক্ষতা দিয়ে। আমাদের জানা দরকার, ডলফিন আসলে কোনো মাছ নয়, এরা স্তন্যপায়ী। সামুদ্রিক দৈত্যাকার প্রাণী তিমিও তাই। ডলফিন অর্থ ঠোঁট। এদের নাক ঠোঁটের মতো, শরীর লম্বাটে এবং লোমহীন। অধিকাংশ ডলফিন দলবদ্ধভাবে চলে ও প্রধানত মৎস্যভুক। তারা পিঠের একটি ছিদ্র দিয়ে শ্বাস নেয়। এদের ১৬০ থেকে ২০০টি ধারালো দাঁত থাকে। সামুদ্রিক ডলফিন প্রজাতির সংখ্যা ৩২। এদের মধ্যে বোতলমুখো ডলফিন, গোলাপি ডলফিন, স্পিনার ডলফিন ও পরপয়েজ উলেস্নখযোগ্য।

আমাদের দেশে দেখা যায় ডলফিনেরই এক প্রজাতি-শুশুক। আগে পদ্মা, মেঘনা, শীতলক্ষ্যাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে এদের প্রায়ই দেখা যেত। এখন আর শুশুকের দেখা হরহাশোই মেলে না। হঠাৎ লাফিয়ে উঠে নিজের অস্তিত্ব্ব জানান দেয়। ফিরে আসি ডলফিনের কথায়। এই ডলফিন তাদের বুদ্ধির দ্বারা মানুষকে সাহায্য করে। বলা হয়, পথহারা নাবিকেরা ডলফিন দেখেই লোকালয়ের সন্ধান পান। কারণ ডলফিন মানুষের আশপাশে থাকতে পছন্দ করে। এছাড়া সমুদ্রে অনেক সময় মাছ ধরার কাজেও জেলেরা ডলফিনের সাহায্য নেন। বুদ্ধিমান প্রাণীটি নাবিকদের ডলফিন তীরে পৌঁছে দিয়েছে, এমন ঘটনাও শোনা যায়। ডলফিনের প্রজাতিই সমাজবদ্ধ হয়ে থাকে। একসঙ্গে সাঁতার কাটে, একসঙ্গে শিকার করে। সাধারণত ছোট মাছ, স্কুইড আর অক্টোপাসই এদের প্রধান খাদ্য। বাচ্চা ডলফিনগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মায়ের সঙ্গেই থাকে। এরপর শিকারে অভ্যস্ত হলে আলাদা হয়ে যায়। পরিবেশগত কারণ এবং মানুষের নিষ্ঠুর আচরণে বুদ্ধিমান এই মানুষের বন্ধ প্রাণীটি দিন দিন প্রকৃতি থেকে কমে যাচ্ছে আমাদের উচিত ডলফিন রক্ষায়

সচেতন হওয়া।

এসব প্রাণী ছাড়াও আরও কিছু প্রাণী রয়েছে যাদের রয়েছে বেশ বুদ্ধি। যদিও সেটা মানুষের মতো না। তবে বুদ্ধি রয়েছে। এর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো শিম্পাঞ্জি, গরিলা জাতীয় প্রাণী। এরা মানুষের মতোই কিছু আচরণ করে থাকে। তাদের হাতিয়ার ব্যবহার ও যোগাযোগের দক্ষতা রয়েছে, সন্তান লালন পালনে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে থাকে এবং সূক্ষ্ণ সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারে। এসব গরিলা নিয়ে সিনেমাও তৈরি হয়েছে হলিউডে। সেখানেও গরিলাকে মোটামুটি বুদ্ধিমান হিসেবেই উপস্থাপন করা হয়েছে। এরপর রয়েছে হাতির নাম।

স্থলজ প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মস্তিষ্ক হলো হাতির। তাদের প্রায় ২৫৭ বিলিয়ন নিউরন রয়েছে, যা মানুষের মস্তিষ্কের প্রায় তিনগুণ। হাতির বুদ্ধিমত্তার একটি আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো মৃত সঙ্গীদের জন্য শোক প্রকাশের ক্ষমতা। এসব প্রাণী যদি তাদের বুদ্ধিমত্তা আরেকটি বাড়িয়ে নেয় তাহলেই মানুষের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে! যদিও সেটা অসম্ভব। কারণ মানুষই এই গ্রহের সবচেয়ে

বুদ্ধিমান প্রাণী এবং এসব প্রাণীর ওপর মানুষই কর্তৃত্ব

প্রতিষ্ঠা করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে