বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

বিজ্ঞানীদের পিরামিড রহস্য উদ্ঘাটন

প্রদীপ সাহা
  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
বিজ্ঞানীদের পিরামিড রহস্য উদ্ঘাটন

মিসরের গিজার মহা পিরামিড হচ্ছে 'পিরামিড অব খুফু'। এটি তৈরি হয়েছিল যিশুখ্রিষ্টের জন্মের দুই হাজার ৫৬০ বছর আগে। বর্তমান মিসরের এল গিজার কাছে এটি অবস্থিত। সাড়ে চার হাজার বছরের পুরনো পিরামিডটির উচ্চতা প্রায় ১৪৬ মিটার। এতে তিনটি প্রধান প্রকোষ্ঠ রয়েছে। গ্র্যান্ড গ্যালারির দৈর্ঘ্য ৪৭ মিটার, উচ্চতা আট মিটার।

এতদিন ধরে কেউ জানতে সক্ষম হয়নি- বন্ধ দরজার পেছনে গুপ্ত কক্ষটিতে কী আছে!

পিরামিডের রানির কক্ষ থেকে চলে যাওয়া দুটি সুড়ঙ্গপথের ওই দরজা দুটির পেছনের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করেছে পুরাতত্ত্ব বিভাগ। পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো স্থাপত্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হলেও প্রাচীন পিরামিডটি এখন পর্যন্ত প্রায় অক্ষতই আছে। পিরামিডের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে রাজা ও রানির জন্য দুটি কক্ষ। রাজার কক্ষ থেকে লম্বা দুটি সুড়ঙ্গ ৪৫ ডিগ্রি কোণে পিরামিডের ওপরের দিকে ওঠে গেছে। ধারণা করা হয়, রাজার আত্মা তারাদের মধ্যে অবস্থানের জন্য মহাকাশে যাওয়ার রাস্তা হিসেবে ফাঁপা এই ছিদ্রপথটি তৈরি করা হয়েছিল।

১৮৭২ সালে রানির কক্ষের উত্তরে এবং দক্ষিণে আরও দুটি সুড়ঙ্গপথেরও সন্ধান পান গবেষকরা।

সুড়ঙ্গ দুটি রাজার ওই সুড়ঙ্গ পথটির মতো ওপরের দিকে ওঠে যায়নি। গবেষকরা এসব

সুড়ঙ্গ তৈরির উদ্দেশ্য অনুমান করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৯৯২ সালে বিজ্ঞানীরা রাজার কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসা সুড়ঙ্গটি দিয়ে একটি ভিডিও ক্যামেরা প্রবেশ করিয়ে ব্যর্থ হন।

ক্যামেরাটি ৬০ মিটার যাওয়ার পরই আবিষ্কার করে- সুড়ঙ্গটি দুটি তামার

হাতলওয়ালাবিশিষ্ট চুনাপাথরের দরজা দিয়ে বন্ধ। পরে ২০০২ সালে আবার এর রহস্য উদ্ঘাটন করতে উদ্যোগ নেন বিজ্ঞানীরা। চুনাপাথরের দরজাটি ড্রিল মেশিন দিয়ে ছিদ্র করে ভিডিও ক্যামেরা পাঠাতে সক্ষম হলেও ২০ মিটার যাওয়ার পরই পথ রোধ করে দাঁড়ায় আর একটি কঠিন চুনাপাথরের দরজা। রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারলেও বিজ্ঞানীরা তখন ধারণা করতে পেরেছিলেন, দ্বিতীয় দরজাটির আকৃতি প্রথমটির মতো নয়; এটি কোনো কিছুকে আড়াল করে আছে।

ঐতিহ্যবাদী গিজার পিরামিড ফ্যারাও খুফুর বলে দাবি করেছেন ঐতিহাসিকরা। ফ্যারাও খুফু এই পিরামিডটির বহু রহস্য এখনো অজানা। রহস্য অনুসন্ধানে ২০১৫ সালে নতুন করে গবেষণায় নামেন একাধিক দেশের প্রত্নতাত্ত্বিকরা। ওই বছরই পিরামিডের মধ্যে ঢোকেন মিসরীয় গবেষকরা। তাদের সঙ্গে ছিলেন ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা ও জাপানের প্রত্নতাত্ত্বিকরা। প্রায় সাত বছর পর পিরামিডের মধ্যে লুকানো বারান্দা খুঁজে পাওয়ায় খুশি গবেষক দল। তাদের দাবি, ওই বারান্দার ওপারে থাকতে পারে ফ্যারাও খুফু বা তার পরিবারের কারওর সমাধি। আর সেই সমাধিকক্ষে গুপ্তধনের সন্ধানও মিলতে পারে। পিরামিড রহস্যের সমাধান করতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠেছে প্রত্নতাত্ত্বিকদের। গিজার এই পিরামিডের মধ্যে নতুন এক রহস্যময় বারান্দা খুঁজে পান তারা। পিরামিডের উত্তর দিকের অংশে রয়েছে

ওই বারান্দা। এরপরই পিরামিডের মধ্যে লুকিয়ে থাকা গুপ্তধন নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। উলেস্নখ্য, ইতোমধ্যেই ওই বারান্দার ছবি প্রকাশ্যে এনেছেন গবেষকরা। হালকা গোলাপি ও লাল পাথরে তৈরি পিরামিডের মধ্যের ওই বারান্দাটি ত্রিভুজাকৃতি। এটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ মিটার।

যদিও এর শেষ অংশ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি গবেষক ও প্রত্নতাত্ত্বিকরা। তবে পিরামিডের রহস্য একদিন উন্মোচিত হবেই- এই বিশ্বাস আমাদের আছে!

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে