শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সবকিছু ঢেলে সাজাতে চাই

প্রকৃত নাম ইদ্রিস আলী- দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ইলিয়াস কাঞ্চন নামেই সমধিক পরিচিত। 'নিরাপদ সড়ক চাই' ব্যানারে ইতোমধ্যেই প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব হয়ে আছেন 'একুশে পদক'প্রাপ্ত এই তারকা। অভিনয় করেছেন সাড়ে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রসহ কিছু নাটক ও টেলিফিল্মে। ইলিয়াস কাঞ্চন ও অঞ্জু ঘোষ অভিনীত 'বেদের মেয়ে জোছনা'- গোটা ঢাকাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্যই এক যুগান্তকারী ইতিহাস। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন একসময়ের এই সুপারস্টার। নির্বাচনসহ চলচ্চিত্রের নানা বিষয় নিয়ে তারার মেলার মুখোমুখি হয়েছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
মাতিয়ার রাফায়েল
  ২০ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ঢাকাই চলচ্চিত্রে যখন দুর্যোগ, তখন কেন দূরে সরে গেলেন?

সে কথা ভেবেই তো আমাকে সভাপতি করা নিয়ে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সংগঠনের ইচ্ছাটি এড়াতে পারলাম না। তারা ইন্ডাস্ট্রির বেহাল অবস্থা থেকে একটা মুক্তির পথ খুঁজছিলেন। এটার প্রতিকারের লক্ষ্যে ইন্ডাস্ট্রিকে আবার সুন্দরভাবে ঢেলে সাজাতে তাদের পছন্দের মানুষও খুঁজছিলেন। সবদিক বিবেচনা করেই আমাকেই তাদের পছন্দের মানুষ হিসেবে বাছাই করলেন। তখন ভেবে দেখলাম, যে ইন্ডাস্ট্রির জন্য আজকে আমি ইলিয়াস কাঞ্চন তার জন্য তো আমার কিছু করা উচিত। আমি যদি এই ইন্ডাস্ট্রির কোনো কাজেই না আসতে পারলাম তাহলে পরবর্তী সময়ে আমার একটা আক্ষেপ থেকে যাবে। সেজন্যই শিল্পীদের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে নির্বাচনে লড়ছি।

অনেকে বলছেন, সিলেকশনের মাধ্যমে আপনার নির্বাচনে আসা উচিত ছিল- বিষয়টি কেমন মনে করছেন?

এর মধ্যেই পরিষ্কার শিল্পী সমিতির সদস্য-সদস্যাদের মধ্যে আমার ভালোবাসা কেমন। তবে আমি চাই, শিল্পী সমিতির সদস্য-সদস্যাদের এই ভালোবাসা কতটা কেমন সেটা নির্বাচনের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত হোক। এই যে আমি ইলেকশনে লড়ছি সেটা তো আমার নিজের ইচ্ছেতেও নয়। এ নিয়ে আমার কোনো আগ্রহও ছিল না। আমার অনুরাগীরাই এক প্রকার জোর করে সভাপতি পদে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। সেটা তো আগেই বলেছি। নির্বাচনের মধ্যে যে আনন্দ থাকে সিলেকশনের মধ্যে তো সে আনন্দ থাকে না। আর এই আনন্দ যাতে মলিন না হয় সেজন্য নির্বাচনটি সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে হোক সেটাই সবার কামনা থাকুক- এটাই আমার প্রত্যাশা।

নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে এখন কীভাবে এগোচ্ছেন?

এ নিয়ে আমি একটা সংবাদ সম্মেলন করব। তখন আমি আমার নির্বাচনী এজেন্ডাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত সমস্ত কিছু বলতে চাই। দেশটা তো এখন সব ডিজিটাল হয়ে গেছে। এখন তো আলাদা আলাদাভাবে নির্বাচনের একই বিষয় নিয়ে দেশের মিডিয়ার সব সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব নয়। আমরা শিগগিরই একটা সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিচ্ছি সেখানে আশা করি উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু আপনারা সংবাদ সম্মেলনে থাকবেন না- এটা তো ঠিক না। এখন আপনাদের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে কথা বলতে হয়। সময়াভাবে আমাদের কাজের

গতিতে সমস্যা হয়।

নির্বাচন নিয়ে শেষ সময়ের ব্যস্ততা কেমন?

এখন সবাই ইলেকশন নিয়ে ব্যস্ত। নিজেদের ইশতেহার প্রণয়নে ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্যানেল থেকে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সবাই সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। ভোটারদের পক্ষ থেকে বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছি। বোঝা যাচ্ছে, সমিতির সদস্যরা একটা পরিবর্তন চায়। এখন এই পরিবর্তনে কতটা সফল হব সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারব না। তবে চেষ্টার ঘাটতি থাকবে না আমাদের। বিনা চেষ্টায় তো কিছু লাভ করাও যায় না। কেউ যদি নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে নিজে চেষ্টা না করেন সৃষ্টিকর্তাও তার ভাগ্যের পরিবর্তন করেন না।

নির্বাচিত হলে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে কী কী উদ্যোগ নেবেন?

নির্বাচিত হলে আমরা সম্মিলিতভাবেই ইন্ডাস্ট্রির ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাব। আমাদের সময়ে শিল্পীরা কখনো দুস্থ হতে পারে জানা ছিল না। আমরা শিল্পীদের এই অসম্মানজনক পরিচয়ের অবসান ঘটাতে চাই। শিল্পীদের কাজ না থাকায় এফডিসির পরিবেশও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগের সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিল্পীদের কাজের ব্যবস্থা করতে হবে। শিল্পীরা কাজ করে সম্মান নিয়ে যাতে বেঁচে থাকেন এর ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য আমরা প্রচুর সিনেমা বানানোর উদ্যোগ নেব। শিল্পীরা যদি কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকেন তখন নিজেদের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ-রেষারেষি আপনা আপনিই কেটে যাবে। মনে রাখতে হবে, দিনশেষে আমরা শিল্পীদের সবাই পরস্পর পরস্পরের প্রিয়জন। দেশটা এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে। এই ডিজিটাল পদ্ধতিতেই

আমাদের অগ্রসর হতে হবে।

চলচ্চিত্র শিল্প আবার কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে?

করোনার মধ্যেই কেটে গেল গোটা দু'বছর। একের পর এক সিনেমা হল ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

এর মধ্যে আবার সিনেমা ঘুরে দাঁড়ায় কীভাবে? গত দুই বছরে কয়টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, আপনি বলবেন কি? ঢাকাই সিনেমা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, আমার কাছে তো এরকম কোনো প্রতিবেদন নেই। আপনি এরকম প্রতিবেদন কোথায় পেলেন? আপনার এই তথ্যটি তো আমার কাছে অদ্ভুত লাগছে।

যে কয়টিই মুক্তি পাক- এ নিয়েও তো আপনার

একটা পর্যবেক্ষণ আছে?

না-, এ নিয়ে আমার কোনো পর্যবেক্ষণ নেই। এটা তো এমন নয় যে, আকাশে এক চিলতে মেঘ দেখেই সারাটা দিন কেমন যাবে- বলে দিলাম।

এমন পর্যবেক্ষণ আমি করি না। তবে যে কয়টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে সে সম্পর্কে আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। আপনাদের কাছেই তো এর সব খবর আছে। আমাকে কেন এ নিয়ে জিজ্ঞেস করেন। আমি কিছু বলতে পারব না।

ছবিগুলো আমি দেখিওনি। আর এ অবস্থায়

ঢাকাই সিনেমার ভবিষ্যৎ কী হতে যাচ্ছে সে সম্পর্কেও

কিছু বলতে পারছি না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে