শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কান মানেই 'ঐশ্বর্য ঝলক'

ম তারার মেলা ডেস্ক
  ১৯ মে ২০২২, ০০:০০
ঐশ্বর্য রাই বচ্চন

কান চলচ্চিত্র উৎসব মানেই বলিউড তারকা ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। কানের লাল গালিচায় এই সাবেক বিশ্বসুন্দরীর পা না পড়লে গোটা আয়োজনটাই যেন অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। সেই ২০০২ সাল থেকে ২০১৯। টানা ১৭ বছর ধরে কান চলচ্চিত্র উৎসবে দু্যতি ছড়িয়ে আসছেন অ্যাশ। মাঝখানে গত দুই বছর করোনার ভার্চুয়ালি উৎসব হওয়ার কারণে তামাম দুনিয়ার তারকাদের মতো কানে যেতে পারেননি এই অভিনেত্রী। তবে এবার করোনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় আবার আগের সেই ছন্দে ফিরেছে কান চলচ্চিত্র উৎসব। এরই মধ্যে পর্দা উঠেছে বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ও জমজমাট এই আসরের। আর প্রতিবারের মতো এবারও কানে ঝলক দেখাবেন ঐশ্বর্য। বলিউড তারকা দীপিকা পাড়ুকোন ও হিনা খানের পর উৎসবে যোগ দিতে স্বামী অভিষেক বচ্চন ও মেয়ে আরাধ্যাকে নিয়ে ফ্রান্সে উড়ে গেলেন ঐশ্বর্য। যাওয়ার আগে মুম্বাই বিমানবন্দরে গণমাধ্যমকর্মীদের ক্যামেরায় লেন্সবন্দি করেন তারা।

বরাবরের মতো মাথা থেকে পা পর্যন্ত কালো পোশাকে বিমানবন্দরে লেন্সবন্দি হন অ্যাশ। কালো ওভার কোট, হাই হিল, কালো লেগিংসে ধরা দেন। আরাধ্যার পরনে গোলাপি রঙের আউটফিট। নীল রঙের হুডি এবং ডেনিম জিনসে ধরা দেন অভিষেক বচ্চন। বিমানবন্দরে প্রবেশের আগে পাপারাৎজির উদ্দেশে পোজ দিয়ে ছবিও তোলেন তারা। করোনা মহামারির পর তিন বছরের মধ্যে এটিই প্রথম পূর্ণাঙ্গ উৎসবের সংস্করণ। কানে ভারতীয় বিনোদন জগতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন ঐশ্বরিয়া-অভিষেক দম্পতি।

কানের রেড কার্পেট শুনলেই স্বপ্নের মতো লাগে। যে কোনো অভিনেত্রীরই কামনা এই রেড কার্পেট। কিন্তু ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের কাছে কানের লালগালিচা যেন ডালভাত হয়ে গেছে। যত ভারতীয় ৭২তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে হেঁটেছেন, তাদের ভেতর সবচেয়ে পুরনো সাবেক এই বিশ্বসুন্দরী। ২০০২ সাল থেকে প্রতিবার তিনি রেড কার্পেটে 'চমক' দেখিয়েছেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও কানের রেড কার্পেটে পড়বে অপরূপ ঐশ্বরিয়ার পায়ের স্পর্শ।

২০১৯ সালে শেষবার যখন কান উৎসবে হাজির হয়েছিলেন ঐশ্বর্য, তখন তার মেয়ে আরাধ্যা বচ্চনও তার সঙ্গে ছিল। ২০১২ সাল থেকে মায়ের সঙ্গে আরাধ্যার কানে আসা-যাওয়া। মায়ের সঙ্গে মিলিয়ে তার পরনে ছিল হলুদ রঙের ফ্রক। সেই ফ্রকের ওপরের বাঁ পাশে আবার ছিল হলুদ রঙের বিশাল গোলাপ ফুল। মা-মেয়ের ছবি পোস্ট করে ঐশ্বরিয়া ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, 'আমার সারা জীবনের আলো, তোমায় ভালোবাসি।' আরেকটি ছবির ক্যাপশনে ঐশ্বরিয়া লিখেছেন, 'যেমন মা, তেমন মেয়ে।'

শুধু তাই নয়, ওই বছর একই ধরনের পোশাকে মা-মেয়ে হাজির হয়েছিলেন কানের বহুল প্রত্যাশিত রেড কাপের্ট তথা লাল গালিচায়। ওই বছর নানা পোশাকে না একাধিকবার লাল গালিচায় জ্যোতি ছড়িয়েছিলেন তিনি। প্রথম দিন তিনি চাকচিক্যময় ফিশকাট গাউনে হাজির হন। সোনালি-সবুজ গাউনে অনেকটা জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির লাভার মতো দেখাচ্ছিল তাকে। আর সেই সোনালির ওপর ছিল সবুজের আভা। চকচকে ওই পোশাক থেকে যেন সোনালি রঙের আলো ঠিকরে বের হয়ে আসছিল। দুই হাতের দুটি আংটি বাদ দিলে শরীরে আর কোনো গয়না ছিল না। তবে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে নখে ছিল সোনালি নেইলপলিশ। ছিল অভিজাত ও স্বল্প মেকআপ, নু্যড লিপস্টিক আর স্মোকি আই। কানে কোনো দুল না থাকলেও পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে সেখানেও ছিল সোনালি রঙের মেকআপ। ঐশ্বরিয়ার এই পোশাকের নকশা করেছিলেন জঁ্য লুইস সাবাজি। চুল ছিল একেবারে স্ট্রেট, সেই কালো খোলা চুল পিঠ দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। তার গাউনের বিশেষত্ব হাতায় আর লম্বা লেজে। ডান হাত লম্বা, বাঁ পাশ স্স্নিভলেস। আর গাউনের লম্বা লেজে ছিল ছোট-বড় মোট ছয়টি চোখা কাট রয়েছে। কানের দ্বিতীয় দিনে ঐশ্বরিয়াকে রামি কাদির ডিজাইন করা পোশাকেও দেখা গেছে।

এর আগে ঐশ্বর্য নিজের ইনস্টাগ্রামে তার আর আরাধ্যার ছবি শেয়ার করে জানান, কানে পৌঁছেন তারা। ২০১৮ সালে মাইকেল সিনকোর ডিজাইন করা বেগুনি-নীল প্রজাপতি গাউনে ঐশ্বরিয়া ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন। গাউনটি রাভস্কি ক্রিস্টাল দিয়ে খচিত, আলট্রা ভায়োলেট, মিডনাইট নীল রঙের সম্মিলনে তৈরি এই গাউনে লাল সুতা দিয়ে নকশা করা। স্স্নিভলেস এই গাউনের লেজ ২০ ফুট লম্বা। আর পুরো গাউন তৈরি করতে সময় লাগে ১২৫ দিন। মায়ের সঙ্গে মিলিয়ে আরাধ্যার

পরনে ছিল হলুদ রঙের ফ্রক। তবে ঐশ্বরিয়ার কাছে নাকি প্র্রথম কান চলচ্চিত্র উৎসবে যে সাজ দিয়েছিলেন, সেটাই সবচেয়ে প্রিয়। ওই উৎসবে তিনি পুরোদস্তুর ভারতীয় নারীর সাজে হাজির হয়েছিলেন। হলুদ রঙের শাড়ি, কানে বড় ঝুমকা, গলায় হার, আর কপালের মাঝে ছোট্ট একটি টিপ। এই সাজ নাকি এখন পর্যন্ত তার কাছে সবচেয়ে পছন্দের। মাতৃত্বের কারণে ঐশ্বর্য রাই চলচ্চিত্র থেকে সাময়িক বিরতি নিলেও কান চলচ্চিত্র উৎসবকে তিনি কখনো 'না' বলেননি। শেষবার ফরাসি প্রসাধনী ব্র্যান্ড ল'রিয়াল প্যারিসের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে ঐশ্বর্য পরিচিত কান দর্শন করলেন। দীপিকা পাড়ুকোনও একই ব্র্যান্ডের শুভেচ্ছাদূত হয়ে ওই সময় বছর থেকে পা রাখছেন কানের রেড কার্পেটে।

এবারের ৭৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে ঐশ্বর্য রাই বচ্চন সাংবাদিকদের জানান, সত্যি আমার সেই অনুভূতিগুলো ফিরে এসেছে মনে হচ্ছে। বিশ্বেও অন্যান্য তারকাদের বেলায় কী হয় জানি না। তবে কানের কথা শুনলেই আমার মনের মাঝে অন্যরকম এক উচ্ছ্বাস কাজ করে। বিশেষ করে এই উৎসবের মাধ্যমেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চেনা কিছু তারকা ও নির্মাতাদের সঙ্গে দেখা ও আড্ডা হয়। আর রেড কার্পেটে হাঁটার ব্যাপাটি সত্যিই বিস্ময়কর অনুভূতি। কী যে এক ভালো লাগা কাজ করে এই কার্পেটে পা রাখলে, এটা কেবল যে পা রাখেন, সেই বুঝতে পারবেন। চারপাশের শত শত ক্যামেরার খট খট আওয়াজের যে ছন্দময় এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়,

তা সত্যিই মনোমগ্ধকর। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে