বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে কঠোর অভিবাসন নীতির ফলে কানাডামুখী অভিবাসীদের ঢল

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি
  ১৯ জুন ২০২৫, ০৯:৫৩
যুক্তরাষ্ট্রে কঠোর অভিবাসন নীতির ফলে কানাডামুখী অভিবাসীদের ঢল
ছবি: সংগৃহীত

নিউ ইয়র্ক সিটি থেকে গ্রেহাউন্ড বাসে নেমে ভেনেজুয়েলার দুই বন্ধু নেস্তোর ও হোসে প্ল্যাটসবার্গের এক সানোকো পেট্রল স্টেশনে গিয়ে কানাডা যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ট্যাক্সির খোঁজ করছিলেন।

শীতল আবহাওয়ায় পাতলা জ্যাকেট পরা, গ্লাভস বা টুপি ছাড়াই দাঁড়িয়ে থাকা নেস্তোরের হাত কাঁপছিল। আবহাওয়া ছিল তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস, এবং পরের দিনগুলোতে তা আরও কমে মাইনাস ১১ থেকে ১৭ ডিগ্রিতে নেমে যাবে।

প্ল্যাটসবার্গে পৌঁছানো অভিবাসীদের মধ্যে কেউ কেউ বৈধ বর্ডার ক্রসিংয়ে গিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছে, আবার অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বনের মধ্য দিয়ে হাঁটার পরিকল্পনা করছে, যেমন নেস্তোর ও হোসে। ট্যাক্সি না পেয়ে তারা হেঁটেই বিপজ্জনক পথে পাড়ি জমাতে উদ্যত হয়। তাদের উদ্দেশ্য: কানাডায় প্রবেশ করে আশ্রয় চাওয়া।

২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডামুখী অভিবাসীর ঢল নেমেছিল। এবারও একই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। কানাডা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে—নতুন প্রসেসিং সেন্টার খোলা হয়েছে কুইবেকে এবং সীমান্ত এলাকায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

রক্সহ্যাম রোড, যা একসময় অভিবাসীদের ‘পেছনের দরজা’ ছিল, তা ২০২৩ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন অভিবাসীরা ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নিচ্ছে। অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো বলছে, রক্সহ্যাম রোড বন্ধ হওয়ার পর মানবপাচারের ঘটনাও বেড়েছে।

এই অভিবাসনপ্রবাহ কোনো নতুন ঘটনা নয়—উনিশ শতকে দাসপ্রথা থেকে পালিয়ে আসা আফ্রিকান আমেরিকানরা একই পথে কানাডায় ঢুকেছিল। এখন আবার সেই পথেই অভিবাসীরা পাড়ি দিচ্ছে, এই আশায় যে সীমান্ত পেরিয়ে নিরাপদ জীবনের খোঁজে একদিন পৌঁছাবে।

চরম ঝুঁকির উদাহরণ হলো আনা কারেন ভাসকেস-ফ্লোরেসের ঘটনা। পাচারকারীর সহায়তায় সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে, গর্ভবতী এই মেক্সিকান নারী নদী পার হওয়ার পথে নিখোঁজ হন। তার সঙ্গে থাকা পাচারকারীকে পরে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই অভিবাসনপ্রবাহ মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, নিরাপত্তা, ও মানবাধিকার প্রশ্নে এক জটিল বাস্তবতার মুখোমুখি করছে উত্তর আমেরিকাকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে