শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

চীন থেকে রহস্যময় কার্গো বিমানে অস্ত্র যাচ্ছে ইরানে!

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ জুন ২০২৫, ১১:৩১
চীন থেকে রহস্যময় কার্গো বিমানে অস্ত্র যাচ্ছে ইরানে!
ছবি সংগৃহীত

চীন থেকে একের পর এক রহস্যময় কার্গো বিমান (মালবাহী) ইরানের দিকে পাঠানো হয়েছে। ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর তিন দিনে তিনটি বোয়িং ৭৪৭ ফ্রেইটার উড়োজাহাজ চীন থেকে ইরানের উদ্দেশে যাত্রা করে, যা ঘিরে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সন্দেহ। চীন এসব বিমানে সামরিক সরঞ্জাম, অস্ত্র ও গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি ইরানে পাঠাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার এক দিন পর প্রথম একটি কার্গো বিমান চীন থেকে রওনা হয়। এরপর চীনের উপকূলীয় শহর থেকে দ্বিতীয়টি এবং সোমবার সাংহাই থেকে তৃতীয় আরেকটি বিমান ইরানে পাঠানো হয়।

ফ্লাইট ট্র্যাকিং তথ্য অনুযায়ী, এসব বিমান উত্তর চীন হয়ে কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান অতিক্রম করে ইরানের সীমান্তের কাছাকাছি গেলে হঠাৎ রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।

বিস্ময়কর বিষয় হলো, উড়োজাহাজগুলোর ফ্লাইট পরিকল্পনায় গন্তব্য দেখানো হয়েছে লুক্সেমবার্গ। তবে বাস্তবে সেগুলো ইউরোপীয় আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি। ফলে অনেকেই সন্দেহ করছেন, এ ফ্লাইটগুলো ইরানে গিয়ে গোপনে সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছে।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অ্যাভিয়েশন বিশ্লেষকরা জানান, বোয়িং ৭৪৭ ফ্রেইটার উড়োজাহাজ সাধারণত সামরিক সরঞ্জাম, অস্ত্র ও গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের বিমান অনেক সময় সরকারিভাবে প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় পরিচালিত হয়ে থাকে।

চীন-মধ্যপ্রাচ্য কূটনীতি বিশেষজ্ঞ এবং যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ড. আন্দ্রেয়া ঘিসেল্লি বলেন, ‘চীনের পক্ষ থেকে ইরানকে সহযোগিতা করার সম্ভাবনা আগে থেকেই ছিল। এসব কার্গো বিমানের রহস্যজনক গতিপথ সেই সম্ভাবনাকেই আরও জোরালো করে তুলছে।’

ইসরায়েলের ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের (আইএনএসএস) চীন ও মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক তুভিয়া গেরিং জানান, চীন সরাসরি অস্ত্র পাঠাচ্ছে- এমন প্রমাণ এখনো নেই। তবে সম্ভাবনাটি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা দরকার।

এদিকে ফ্লাইট ডেটা বলছে, কিছু কার্গো বিমান ইরান সীমান্ত এলাকায় পৌঁছে আবারও উড্ডয়ন করে লুক্সেমবার্গের দিকে রওনা হয়েছে। যদিও তারা কী বহন করছিল- তা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

কার্গো ফ্লাইট পরিচালনাকারী লুক্সেমবার্গভিত্তিক সংস্থা কার্গোলাক্স দাবি করেছে, তাদের কোনো বিমান ইরানের আকাশসীমা ব্যবহার করেনি। তবে তাদের বিমানে কী মালামাল ছিল, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে, চলমান ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার এই সময় চীন যদি ইরানকে গোপনে অস্ত্র সহায়তা দিয়ে থাকে, তবে তা শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, বিশ্ব কূটনীতিতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে