কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুনের সঙ্গে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা) মো. তৌহিদুল ইসলামের একটি তীব্র বাকবিতণ্ডার অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ভাইরাল হওয়া এই অডিওতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে সিনিয়র জেল সুপারের সঙ্গে রূঢ় ও হুমকিমূলক ভাষায় কথা বলতে শোনা যায়।
অডিও ক্লিপে শোনা যায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তৌহিদুল ইসলাম ক্ষুব্ধ স্বরে জেল সুপারকে বারবার বাধা দেন এবং তাকে ‘গ্রেপ্তারের’ হুমকি দেন। অপরদিকে, জেল সুপার হালিমা খাতুন কাগজপত্র অনুযায়ী নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলেও বারবার তাকে থামিয়ে দেয়া হয় এবং অবমাননাকর ভাষায় কটাক্ষ করা হয়।
বিষয়টি জানতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত ৫ মে কারারক্ষীরা এক সরকারি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক শ্রমিক (এস্কেভেটর চালক)–কে মারধর করে এবং তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং জেল সুপারের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হয়। তিনি অডিও ক্লিপে শোনা ‘গ্রেপ্তারের হুমকি’ সংক্রান্ত বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুনের বক্তব্য জানতে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পুরো ঘটনার বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার জানান, জেলা প্রশাসনের একটি পার্ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছিল। সেই কাজকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের সঙ্গে কারারক্ষীদের বাক্বিতণ্ডা হয়। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সিনিয়র জেল সুপারের মধ্যে কিছুটা কথা-কাটাকাটি হয়। পরে তিনি বিষয়টি জানতে পেরে দুজন কর্মকর্তাকে ডেকে বসিয়ে সমাধান করে দেন। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, “আমাদের মধ্যে খুবই ভালো সম্পর্ক আছে। এটি তেমন কোনো গুরুতর বিষয় নয়।”
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ঘটনাটিকে প্রশাসনিক শিষ্টাচার লঙ্ঘনের নজির হিসেবে উল্লেখ করছেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত বাকবিতণ্ডা ও প্রকাশ্যে হুমকির ঘটনা প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও কর্তৃত্বের প্রশ্নে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
যাযাদি/ এসএম