প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মিটিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, খুব দ্রুতই জুলাই চার্টার গৃহীত হবে।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বৈঠকে রাজনৈতিক দলের যারা আছেন সবাই কথা বলবেন। ২৮টি রাজনৈতিক দলের সবাই অলমোস্ট এসেছেন।
তিনি বলেন, আমার জানামতে এ সপ্তাহে আরেকটি মিটিং আছে। এমনও হতে পারে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের একসঙ্গে করে বসা হবে। আগে যেমন এক একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলাদা বৈঠক হয়েছে, এখন এমন হতে পারে যে, একেকটি পলিটিক্যাল পার্টির একজন করে বেশ কয়েকটি দলের নেতারা মিলে একসঙ্গে কথা বলবেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা ৪ মিনিটের একটি বক্তব্য দিয়েছেন। প্রথম পর্বের বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন এবং দ্বিতীয় পর্বের বৈঠকের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন যে সবাই পার্টিসিপেট করেছেন।
বাংলাদেশের মানুষের জন্য দেশের জন্য এটা ইম্পরট্যান্ট একটা ইভেন্ট। যে সব পলিটিক্যাল পার্টি এই ডায়ালগে যুক্ত হয়েছেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে প্রতিশ্রুতি আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পেয়েছি। সেই মোতাবেক সবাই কাজ করছেন এজন্য প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যেসব জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলো দ্বিমত পোষণ করছেন সে সব ইন্টেনসিভ জায়গাগুলো নিয়ে এখন আলোচনা হবে।
এর আগে, এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হওয়া রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ঐকমত্য কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে কমিশন।
গত ২০শে মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে সংলাপ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে কমিশন। তবে বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য এবং আংশিক ঐকমত্য হয়েছে। দ্বিতীয় দফার এই বৈঠক বিষয়ভিত্তিক বলে জানিয়েছে কমিশন। যেসব মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য পোষণ করেনি সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীসহ রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত আছেন।