শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
টুইট আর কথার লড়াই

ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে ভেতর-বাইরে বিতর্ক

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০
ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে ভেতর-বাইরে বিতর্ক

ভারতের কৃষক আন্দোলনে নতুন করে সুর চড়েছে। টানা ৭৩ দিন ধরে চলা এ আন্দোলন ঘিরে এরই মধ্যে দেশটির ভেতরে ও বাইরে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত দেশটির অভিনয় এবং ক্রীড়াজগৎ। এদিকে, আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও প্রতিনিয়ত প্রতিক্রিয়া আসছে। সংবাদসূত্র : পিটিআই, এএনআই, ডিডাবিস্নউ নিউজ

দেশটির রাজধানী দিলিস্নর সীমানায় এখনো বসে আছেন কৃষকরা। এরই মধ্যে মঙ্গল এবং বুধবার একাধিক ক্রীড়া এবং অভিনয় জগতের তারকা কৃষক বিদ্রোহকে সমর্থন জানিয়ে টুইট করেন। যার মধ্যে দীপিকা পাড়ুকোন, তাপসী পান্নু যেমন আছেন, তেমনই আছেন সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিং, অলিম্পিকে দেশকে মেডেল এনে দেওয়া বীজেন্দ্র সিংও। কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র।

1

তবে বুধবার শোরগোল ফেলে দেন যুক্তরাষ্ট্রের গায়িকা এবং অভিনেত্রী রিহানা। নিজের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে তিনি লেখেন, আন্দোলনরত কৃষকদের কেন সমর্থন করবে না গোটা বিশ্ব? এখানেই শেষ নয়। রিহানার টুইটের কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিবেশ আন্দোলনের অন্যতম মুখ গ্রেটা থুনবার্গ কৃষকদের সমর্থনে টুইট করেন।

আন্তর্জাতিক দুই ব্যক্তিত্বের টুইটের পরই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। বুধবার রাতেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানায়, রিহানাদের টুইট 'অতিরঞ্জিত' বা 'সেনসেশনাল'। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ভারতীয় কৃষকদের একাংশ নতুন কৃষি আইন নিয়ে আন্দোলন করছে। এতে সবার সমর্থন নেই। পুরো বিষয়টি না জেনে এ ধরনের টুইট করা উচিত নয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতির পরই সরকারের সমর্থনে ক্রীড়া এবং অভিনয় জগতের আরেকটি অংশকে দাঁড়াতে দেখা যায়। পরপর টুইট করতে থাকেন শচিন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলি, অনিল কুম্বলেসহ একাধিক বর্তমান এবং সাবেক ক্রিকেটাররা। তাদের বক্তব্য, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা জরুরি।

অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগনের মতো অভিনেতারাও সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের টুইটের ভাষাও কার্যত একই রকম। বৃহস্পতিবার সকালে টুইট করেছেন প্রবীণ গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। তিনিও সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের সময় থেকেই অভিনয় জগতে বিভাজন স্পষ্ট তৈরি হয়েছিল। দীপিকা, তাপসীরা শুধু সরকারবিরোধী টুইট করেননি, বিভিন্ন আন্দোলনেও সামিল হয়েছেন। জেএনইউয়ে আহত ছাত্রদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন দীপিকা। সে জন্য তাকে 'অ্যান্টি ন্যাশনাল' বা জাতীয়তাবিরোধী তকমাও পেতে হয়েছে। তবে বুধ এবং বৃহস্পতিবার কৃষক আন্দোলন ঘিরে তারকার টুইট যুদ্ধ স্পষ্ট মেরুকরণ তৈরি করে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, রিহানার টুইটকে এতটা গুরুত্ব দিয়ে সরকার নিজেই নিজের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। এর ফলে পুরো বিষয়টি 'লাইম লাইট' পেয়ে গেছে।

এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গণতন্ত্রের লক্ষণ। পরোক্ষভাবে তারাও কৃষক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বলে কোনো কোনো কূটনীতিকের বক্তব্য। যদিও এর আগে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, ভারতের নতুন কৃষি আইন বাজার খুলে দেবে। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টেও ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে একটি বিতর্কসভা আহ্বান করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে বেশ কিছু শিখ এমপি আছেন। প্রথম থেকেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তারা কৃষক আন্দোলন নিয়ে সরব। এর আগেও এ বিষয়ে তারা বিতর্ক চেয়েছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে