মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
সামাজিক মাধ্যমেও শেয়ার

গাজায় ব্যাপক লুটপাট চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা

খাবারের জন্য হাহাকার, পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে
যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় একটি ভবন গুঁড়িয়ে যায়। ছবিটি রোববার তোলা -রয়টার্স অনলাইন

ইসরাইলের সেনারা গাজা থেকে নগদ টাকা, সোনার গহনাসহ নানা ধরনের মূল্যবান সম্পদ লুট করছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনারা প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডলার (২৭৩ কোটি টাকার বেশি) মূল্যের সম্পদ লুট করেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'গাজা উপত্যকায় গত ৯২ দিনের অভিযানে উপত্যকার বাসিন্দাদের বাসভবন, ব্যাংক ও দোকান থেকে ৯ কোটি শেকেল (আড়াই কোটি ডলার) সমমূল্যের অলঙ্কার, অর্থ ও শিল্পকর্ম লুটপাট করেছে ইসরাইলের দখলদার বাহিনী।' তথ্যসূত্র : আনাদলু নিউজ, এএফপি

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, চুরি বিভিন্ন উপায়ে ঘটেছে। এর মধ্যে প্রথমটি ছিল চেকপয়েন্টে- যেমন সালাহ আল-দিন স্ট্রিট, যেখানে তারা উত্তর গাজা উপত্যকা থেকে দক্ষিণে চলে আসা বাস্তুচু্যত লোকদের কাছ থেকে চুরি করেছিল। তাদের মূল্যবান জিনিসপত্রসহ তাদের ব্যাগগুলো জোরপূর্বক নিয়ে নিয়েছিল। এ ছাড়া ইসরাইলি সেনারা গাজার বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে সরে যেতে বলে। এরপর সেখানে তারা লুটপাট চালায়। অনেক সেনা আবার লুটপাটের পর লুণ্ঠিত সামগ্রীর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ারও করেছে। ইসরাইলি সংবাদপত্রগুলো এগুলোকে অপরাধ হিসেবে নথিভুক্ত করেছে। তবে গাজার মিডিয়া অফিসের এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরাইলের সরকার কিংবা প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

গাজার খাবারের জন্য হাহাকার

গাজায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার সর্বত্রই এখন খাবারের জন্য হাহাকার। সেখানে খাবার-পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সংঘাতের কারণে কোনো ধরনের ত্রাণ সহায়তাও পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

গাজায় মানবিক সংকট পৌঁছানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। সেখানে যুদ্ধবিরতি না হলে কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। কিন্তু যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে নতুন করে কোনো চুক্তিও হচ্ছে না। এমনকি ইসরাইল বলছে, তারা এখনই লড়াই থামাবে না। সম্প্রতি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই যুদ্ধ আরও কয়েক মাস চলবে। হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

গাজাবাসীর জন্য যে সহায়তা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কথা, সেগুলো ইসরাইলি বাহিনীর একগুয়েমির কারণে মিশর-গাজা সীমান্তের একটি গুদামে রাখা হয়েছে। ওই গুদাম পরিদর্শনে গিয়ে মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন বলেন, এই গুদামের পরিস্থিতি স্বেচ্ছাচারিতার প্রমাণ দিচ্ছে।

এদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা এখন বসবাসের অযোগ্য। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অক্টোবরে হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলার পর গাজা পুরোপুরি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গ্রিফিথস এক বিবৃতিতে বলেন, ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে গত তিন মাসে গাজা একটি মৃতু্যপুরীতে পরিণত হয়েছে। চারদিকে হতাশা ছাড়া আর কিছুই নেই। তিনি বলেন, গাজায় সাধারণ মানুষ টিকে থাকার জন্য প্রতিদিন নানা রকমের হুমকির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে, বিশ্ব শুধু এই দৃশ্য বসে বসে দেখছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে