রোববার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেড় দশক পর মাগুরার মিটুর হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
  ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
দেড় দশক পর মাগুরার মিটুর হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন

মাগুরার চাঞ্চল্যকর মিটুর হোসেন হত্যাকান্ডের দেড় দশক পর হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই যশোর। প্রতিপক্ষকে হত্যা মামলায় ফাঁসাতে নিজেদের পক্ষের মিটুরকে হত্যা করা হয় বলে তদন্তে পিবিআই নিশ্চিত হয়েছে। এই হত্যাকান্ডে জড়িত অভিযোগে মামলার প্রধান সাক্ষী মো. ছিদ্দিক মুন্সিকে (৫৪) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার মাগুরার আদালতে সোপর্দ করেছে পিবিআই। হত্যাকান্ডের শিকার মিটুর হোসেন (২০) মাগুরা সদর উপজেলার সংকোচখালী গ্রামের নুরুল ইসলাম ফকিরের ছেলে। গ্রেপ্তার ছিদ্দিক মুন্সি একই গ্রামের আব্দুস সালাম মুন্সির ছেলে।

পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, ২০০৯ সালের ২১ এপ্রিল সকালে মাগুরা সদর থানার সংকোচখালী গ্রামে একটি তিল বোনা জমিতে মিটুর হোসেনের (২০) রক্তাক্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। মাগুরা থানা পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে। পরে মিটুর হোসেনের পিতা নুরুল ইসলাম ফকির বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন ছিদ্দিক মুন্সি।

1

মামলাটি প্রথমে সিআইডি তদন্ত করে সাক্ষী ছিদ্দিক মুন্সিকে আসামি করে অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর চার্জশিটভুক্ত আসামিরা মহামান্য হাইকোর্টে মামলাটির স্থগিতাদেশের আবেদন করলে আদালত মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। ২০১৬ সালে মামলাটির স্থগিতাদেশ খারিজ হলে বিজ্ঞ আদালত পিবিআই যশোরকে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। পুনরায় আসামিপক্ষ মামলাটির স্থগিতাদেশ করান। এরপর ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বিজ্ঞ আদালত পুনরায় স্থগিতাদেশ বাতিল পূর্বক অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই যশোরকে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই, যশোর।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান তদন্তকালে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন মামলার সাক্ষী ছিদ্দিক মুন্সি মিটুর হোসেনকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। এরপর গত বুধবার বিকালে মাগুরার সংকোচখালী গ্রাম থেকে ছিদ্দিককে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান জানান, মাগুরার ওই গ্রামে গ্রাম্য দলাদলির কারণে দু'টি পক্ষ ছিল। মিটুর হোসেন হত্যা মামলার বাদী তার বাবা নুরুল ইসলাম ফকির ও সাক্ষী ছিদ্দিক মুন্সি একইপক্ষের। প্রতিপক্ষ গ্রম্নপের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছিল। ওই মামলার পাল্টা মামলা করার পরিকল্পনা করেন ছিদ্দিক মুন্সি। তিনিসহ আরও কয়েকজন আসামি মিটুর হোসেনকে হত্যা করে প্রতিপক্ষের নামে মামলা দেন।

এসআই হাবিবুর রহমান আরও জানান, ২০০৯ সালের এই হত্যাকান্ডের তদন্ত করে একাধিক সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ছিদ্দিক মুন্সি প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজেদের পক্ষের মিটুর হোসেন হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উলেস্নখ্য, মামলার বাদী নুরুল ইসলাম ফকির ২০১৯ সালে মারা গেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে