আগামী এক বছরে মোবাইল আর্থিক সেবায় লেনদেন ২৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমের অন্যতম মোবাইল আর্থিক সেবা। এ সেবায় বছরে সাড়ে ১৭ লাখ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। এ বছরে হয়তো এটা ২৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এই ২৫ লাখ কোটি মানে সরকারের বাজেটের ৮ লাখ কোটি টাকার মতো।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রম্নয়ারি) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ আয়োজিত 'পেমেন্ট ব্যবস্থার বিপস্নব: এক নতুন যুগের সূচনা' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান গভর্নর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক খাতের অর্জনগুলো খুব উলেস্নখযোগ্য। একটি কমিউনিটি হিসেবে আমাদের জন্য রিয়েল-টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) একটি গর্বের বিষয়। আরটিজিএস সম্পর্কে আমাদের অনেকে জানেন না। আমি নিজেও জানতাম না। ২০১৫ সালে যখন এটি শুরু হলো তখন গর্ভনর আতিউর রহমান জানিয়েছিলেন। আমরা তখন সেভাবে গুরুত্ব দেইনি। কিন্তু পরবর্তীতে দেখলাম, পেমেন্ট বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ। গত এক মাসে আমার একটি ব্যাংক লোন পরিশোধ করার কথা ছিল। সেটি কীভাবে দেব জানতে পিয়নকে বললাম। সে বলল আরটিজিএস করবে। আমি সাইন করে দিলাম। দেখলাম, দুপুরের মধ্যে আমার লোনটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা হয়ে গেল। আমার সাইনের সঙ্গে সঙ্গে ডিপোজিট হয়ে টাকা স্থানান্তর হয়ে গেল। ব্যক্তিগত পর্যায়েও এটা আমার খুব কাজে লাগল। সময়মত পেমেন্ট করতে সহযোগিতা করেছে। এটি একটি অবিশ্বাস্য রকমের কার্যক্রম। আগে কোনোদিন চিন্তাও করা যেত না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের তথ্যে উঠে এসেছে, ইলেকট্রনিক স্থানান্তর ৬০ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ২৬০ মিলিয়ন হয়েছে। যা প্রায় চার গুণ। আমরা যদি আইবিএফটি স্থানান্তর দেখি, এখানে পাঁচ বছরের মধ্যে নেগলিজিবল অ্যামাউন্ট থেকে ৪০ মিলিয়নে চলে এসেছি। এটা বিশাল একটা লাফ দিয়েছে।
ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ অবকাঠামোগত উন্নয়নের সুবিধাভোগী আপনারা ব্যাংকার ও আপনাদের ক্লায়েন্টরা। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ যেটির আসল সুবিধাভোগী হচ্ছে আমাদের ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে সরাসরি যারা জড়িত তারা। পাশাপাশি ভোক্তা, ব্যবসায়ীরাও সুবিধা পাচ্ছে। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে অনেকখানি উজ্জীবিত করতে পারছি। অর্জনও হয়েছে অনেক। আজ যে আপগ্রেডেশন করা হলো এটারও খুব দরকার ছিল। যেভাবে ভলিউম বাড়ছে, আমরা সামনের দিকে এগোচ্ছি, ইন টার্মস অব পেমেন্ট ভলিউম। সেখানে আপগ্রেডেশন না করে উপায়ও ছিল না। এটা করতে হতো। আগামীতে আরো করতে হবে। এখানে উন্নয়নে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের ধন্যবাদ জানাই।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের পরিচালক মো. শরাফত উলস্নাহ খান সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্রের মন্ট্রান করপোরেশনের ম্যাট ওয়ালশ, পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. খায়রুল আনাম। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান।
এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক ও সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।