বাংলা বর্ষপঞ্জিকা অনুযায়ী বৈশাখ মাস বিদায় শেষে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে জ্যৈষ্ঠ। আজ এ মাসের দ্বিতীয় দিন। ফলপ্রিয় বাঙালি জ্যৈষ্ঠকেই ‘মধুমাস’ বলে চিনে আসছে। তাদের মুখে, জিভে ও বিশ্বাসে জ্যৈষ্ঠই মধুমাস। তবে ফলের বাজারে যে দাম তাতে সাধারণ মানুষ কিনতে পারছেন না। প্রতিটি ফলের দাম বেশি। যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
জ্যৈষ্ঠের আগমনের আগেই গাছে গাছে পাকতে শুরু করেছে নানা জাতের বাহারি সুস্বাদু ফল। এরই মধ্যে শহর কিংবা গ্রামের বাজারগুলোতেও দেখা মিলছে হরেক ফলের। পাকা ফলের মধুর ঘ্রাণ আর মৌমাছির গুঞ্জরনে মুখরিত চারদিক। জ্যৈষ্ঠে ঘরে ঘরে দেখা যাবে ফল উৎসবের আমেজ। এ মাসে অন্যের বাড়িতে উপহার হিসেবেও ফল পাঠানোর রেওয়াজও দীর্ঘদিনের।
ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গার গাছে গাছে পাকতে শুরু করেছে অমৃতফল খ্যাত আম। কোনোটা সিঁদুরে, কোনোটা হলদে, কোনোটা উভয়রঙের মিশ্রণে রাঙানো। আমেরও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নাম। পাকতে শুরু করেছে লিচু। লিচুর গাছে দিনে পাখি আর রাতে বাদুড়ের কোলাহল। পাকা জামও জিভে আনছে জল। সেই জামের মধুর রসে মুখ রঙিন করার স্বপ্ন উঁকি দিচ্ছে বাঙালির মনে।
এছাড়া জামরুল, আনারস, করমচা, আতা, তরমুজ, ফুটি, বাঙ্গি, বেল, তাল, জাম্বুরা, কাউফল, গোলাপজাম, কামরাঙা, লটকনসহ হরেক ফল জাগিয়ে তুলেছে বাঙালির রসনাবিলাসকে। পুষ্টিকর এসব ফলের প্রাচুর্য জ্যৈষ্ঠকে করেছে প্রকৃতির অনন্য মাস। জ্যৈষ্ঠে গাছ থেকে নামানো তাজা ফলের সুবাস ছড়াবে গ্রামের হাটবাজারে। শুধু হাটবাজার নয়, শহরের ফলের দোকানেও দেখা মিলবে বাহারি ফলের সাজানো পসরা।
যদিও অনেক অসাধু বিক্রেতা ফলকে তাজা দেখাতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করে। এরই মধ্যে কিছু ফল বাজারে তুলেছেন। এ অপতৎপরতা বন্ধে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, মধুমাসের মিষ্টি ও সুস্বাদু ফল মিশে আছে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে। দেশীয় ফল আমাদের সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ঐতিহ্যের বড় একটি অংশ। জ্যৈষ্ঠ মাসের ফল পরিবেশের যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তেমনি স্বাদ ও পুষ্টিতেও অনন্য।
যাযাদি/ এস