শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দিনশেষে শিল্পীজীবনটা মূলত একার : মৌসুমী হামিদ

মাতিয়ার রাফায়েল
  ১৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:৪৮
দিনশেষে শিল্পীজীবনটা মূলত একার : মৌসুমী হামিদ
দিনশেষে শিল্পীজীবনটা মূলত একার : মৌসুমী হামিদ

টিভিসি থেকে শুরু করে টিভি নাটক, চলচ্চিত্র ও ওটিটি- সব মাধ্যমেই অভিনয় করে আসছেন মৌসুমী হামিদ। একের পর এক ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। দীর্ঘ এক যুগের ক্যারিয়ারে কাজের সংখ্যা অল্প হলেও বহু রূপে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন এ শিল্পী। পতিতা থেকে শুরু করে রাস্তার মেয়ে, ভিখারি, ধনীর দুলালি, খুনি, সাইকো প্রভৃতি চরিত্রে সমানতালে অভিনয় করে গেছেন।

1

নতুন কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত এখন?

নতুন কয়েকটি কাজই চলছে। নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ সবই রয়েছে। একটি ওয়েব সিরিজের জন্য তো বাস চালানোও শিখতে হয়েছে। চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সেটার কাজ অবশ্য এ বছর হচ্ছে না। এছাড়া সোহেল রানা বয়াতির ‘নয়া মানুষ’ মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। ছবিটিতে আমি দারুণ একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করেছি। আর রাশিদ পলাশের ‘রঙবাজার’ এবং সরকারি অনুদানের ছবি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের ‘যাপিত জীবন’ মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এটা খুব ইমোশনাল গল্প। দেশভাগ ও ভাষা আন্দোলনের ওপর সিনেমা। সবারই ভালো লাগবে। আরও কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে কথাবার্তা চলছে।

মুক্তিপ্রতীক্ষিত সিনেমাগুলো কেমন হবে আশা করছেন?

‘নয়া মানুষ’ নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী। কারণ ছবিটির গল্প খুবই সুন্দর। চমৎকার স্ক্রিপ্ট করেছেন মাসুম রেজা। গল্পটি প্রথম পড়ার পর থেকেই ছবিটিতে অভিনয় করতে আমি উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ি। গল্পটির জন্যই এমন দুর্গম চরে এসে শুটিং করতে রাজি হয়েছি। ধর্মবর্ণ সব ছাপিয়ে কিছু ঘরপোড়া মানুষের গল্প নিয়ে তৈরি হচ্ছে এটি। ছবির গানগুলো খুবই সুন্দর। আশা করছি ছবিটা মানুষের ভালো লাগবে।

প্রেক্ষাগৃহে কোন সিনেমা দর্শক খাবে আগে থেকে বোঝা যায়? সিনেমার গল্প এবং মেকিং ভালো হলে মানে স্ক্রিনে দেখে যদি ভালো লাগে সেই সিনেমা দর্শক খাবেই। এটা ডিপেন্ড করে গল্পটা পর্দায় কতটা সুন্দর দেখাচ্ছে, কতটা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সিনেমার গল্পটি যদি দর্শক আটকে রাখতে পারে তবেই সার্থক। এখন তাতে দর্শক কতটা ইমোশনালি ও সাইকোলজিক্যালি কানেকটেড হতে পারছে তার নির্মাণ শৈলীর ওপরও ডিপেন্ড করে। তখন এটা দেখে মনেই হবে না অবাস্তব কিছু দেখছি। আমি একটি সিনেমা দেখেছিলাম, যে সিনেমার একটি জায়গায় এসে আমার মনে হয়েছে আমিও যেন ঐ ঘটনার জায়গায় আছি। কাজেই একটি সিনেমায় যদি নিজেকেও কল্পনা করা যায় সে সিনেমার দর্শক হবেই। আবার একজন পরিচালক সিনেমাটা কীভাবে দেখাতে চান তার মুন্সিয়ানার ওপরও এটা ডিপেন্ড করে।

যেসব চরিত্রে অভিনয় করেছেন কতটুকু তৃপ্ত? এখনো আমার অনেক চরিত্রেই অভিনয় করা হয়নি। এখনো আমার আরও বহু চরিত্রে অভিনয় করা বাকি আছে। সেগুলোতে নিজেকে না দেখা পর্যন্ত আমি বলতে পারছি না অভিনয়ে আমি কতটুকু তৃপ্ত। আমার ইচ্ছে, যতরকম চ্যালেঞ্জিং চরিত্র আছে সেগুলোতে অভিনয় করার। একজন শিল্পী তার অভিনয় জীবনের ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের মধ্য দিয়েই তার শিল্পী সত্তা পূর্ণতা পায়। আমিও চাই সেরকম ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে পরিপূর্ণতা পেতে।

নতুন নির্মাতাদের কাজ কেমন? শুধু বর্তমান সময়ের জন্যই নয়, সব সময়েই নতুনদের মধ্যে সম্ভাবনা ছিল। কারণ, নতুনরাই টেকনিক্যালি অনেক বেশি সাউন্ড হয়। এখন আমাদের সিনেমা বাংলাদেশের দর্শকই দেখছে না, বাইরের দর্শকও দেখছে এবং তাদের মন জয় করছে। অনেক বড় বড় ফেস্টিভালে যাচ্ছে। অ্যাওয়ার্ডও পাচ্ছে। আমি তাদের খুবই অ্যাপ্রিশিয়েট করি।

অভিনয় জীবন কেমন উপভোগ করেন? খুবই সুন্দর। একটা ভালো লাগা তো আছেই। নয়ত কেন এখানে আছি। যেখানেই যাই সেখানেই মানুষের ভালোবাসা, সম্মান পাই। একজন অভিনেত্রী হিসেবে মানুষ যে আমাদের ভালোবাসে এসব তো ভালো লাগারই- তাই না! আবার কষ্টও কিন্তু কম নেই। সেটা হলো, দিনশেষে শিল্পীজীবনটা মূলত একার। একসময় তার জীবনেও এমন সময় আসে যখন তার পাশে কেউ থাকে না। সিনিয়রদের দেখে এবং এটা ভেবে কষ্ট লাগে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে