শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

অনাহারে মারা যাচ্ছে গাজার শিশুরা : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৫
অনাহারে মারা যাচ্ছে গাজার শিশুরা : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, গাজায় শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‌অক্টোবরের পর সপ্তাহান্তে সংস্থাটি প্রথম আল-আওদা এবং কামাল আদওয়ান হাসপাতাল পরিদর্শন করে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে তিনি ‘গুরুতর ফলাফলের’ কথা বলেছেন।

‘খাবারের অভাবের ফলে ১০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং গুরুতর মাত্রার অপুষ্টি হয়েছে, যখন হাসপাতাল ভবনগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে, তিনি লিখেছেন। খবর বিবিসির।

গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে অন্তত ১৫ শিশু মারা গেছে।

ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা সোমবার জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের একটি হাসপাতালে রোববার ১৬তম শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

টেড্রোস রিপোর্ট করেছেন, উত্তর গাজায় ‘অপুষ্টির মারাত্মক মাত্রা, শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে, জ্বালানি, খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহের গুরুতর ঘাটতি, হাসপাতাল ভবন ধ্বংস হয়েছে। যেখানে আনুমানিক তিন লাখ মানুষ অল্প খাবার বা বিশুদ্ধ পানি নিয়ে বসবাস করছে।

“খাদ্যের অভাবের ফলে ১০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে “ এক্স-এ তিনি পোস্ট করেছেন।

তিনি লিখেছেন, ‘গাজার উত্তরে আরও নিয়মিত প্রবেশাধিকার পাওয়ার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা সত্ত্বে ও কয়েক মাসের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রথম সফর ছিল এটি।’

“আল-আওদা হাসপাতালের পরিস্থিতি বিশেষভাবে ভয়াবহ, কারণ একটি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে,” তিনি যোগ করেন। জাতিসংঘ গত সপ্তাহে সতর্ক করেছিল যে গাজায় দুর্ভিক্ষ প্রায় অনিবার্য।

জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সতর্ক করেন, গাজা উপত্যকাজুড়ে জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ, কমপক্ষে পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ বিপর্যয়কর মাত্রার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন এবং উত্তরে দুই বছরের কম বয়সী ছয় শিশুর মধ্যে একজন তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক বলেছেন, “আমরা যে শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা করছিলাম তা এখানে রয়েছে, কারণ অপুষ্টি গাজা উপত্যকাকে ধ্বংস করছে।”

রোববার এক বিবৃতিতে অ্যাডেল খোদর বলেন, ‘এই মর্মান্তিক এবং ভয়াবহ মৃত্যু মানবসৃষ্ট, অনুমানযোগ্য এবং সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধযোগ্য।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৫৩৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৯৮০ জন।

এদিকে ইসরায়েল গাজার ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে এবং এই পদক্ষেপ গাজার ফিলিস্তিনিদের বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের অনাহারের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে