মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

গাজায় শরণার্থী শিবির-আবাসিক ভবনে হামলা, নিহত ১৮

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৩

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার ভূখণ্ডে একটি শরণার্থী শিবির (ক্যাম্প) ও আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। পৃথক এই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন। এর মধ্যে মধ্যগাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ১১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাফাহতে আবাসিক বাড়িতে হামলায় নিহত হয়েছেন সাতজন। খবর আল জাজিরার।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, মধ্য গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই শিশু। এছাড়া এই হামলায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, মাগাজি শরণার্থী শিবিরটি ঘনবসতিপূর্ণ এবং ইসরায়েল গাজায় আক্রমণ শুরু করার পরে ভূখণ্ডটির উত্তরে হাজার হাজার পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়ার পরে এই শিবির আরও ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এছাড়া গাজার রাফাহ শহরের একটি বাড়িতে পৃথক ইসরায়েলি হামলায় আরও সাতজন নিহত হয়েছেন। ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় চার শিশুসহ ওই সাতজন নিহত হন।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলা চালায়। হামাসের যোদ্ধাদের আক্রমণে ১২০০ জন নিহত হয় ও তারা ২৫৩ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে বলে ভাষ্য ইসরায়েলের।

অক্টোবরের ওই দিন থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা হামাসের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটিকে নির্মূল করার প্রত্যয় জানায়। সবদিক থেকে গাজা অবরোধ করে ভূখণ্ডটির বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে গত ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলির বাহিনীর স্থল, আকাশ ও নৌ হামলায় ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের টানা ৪৭ দিনের হামলার পর গত বছরের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এ যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দুই দফায় মোট তিন দিন বাড়ানো হয় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ। সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হতে না হতেই আবারও গাজায় আবার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পাশাপাশি স্থল অভিযানও চালানো হচ্ছে।

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই ২৪ হাজারের বেশি। গাজায় ইসরায়েলি হামলার মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৩ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া গাজায় ১৭ হাজার শিশু তাদের পিতামাতা বা উভয়ের যেকোনও একজন ছাড়াই বসবাস করছে। কঠোর অবরোধ ও অবিরাম হামলার মধ্যে থাকা গাজাবাসীরা অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে। ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে