ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।
টানা ১৮ মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। হামলার পাশাপাশি ইসরাইল গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধও জারি রেখেছে। এর ফলে গাজায় বহু মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন। সৃষ্টি হয়েছে মানবিক সংকট। তবে ইসরাইলের দাবি, গাজায় মানবিক সংকটের কোনও প্রমাণ নেই। যুদ্ধবিরতির সময় ২৫ হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে দিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। বার্তাসংস্থাটি বলছে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরাইল দাবি করেছে, গাজা উপত্যকায় কোনও মানবিক সংকট নেই, যদিও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো, জাতিসংঘ এবং স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের দেওয়া তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছে।
ইসরাইলের উপ-রাষ্ট্রদূত ব্রেট জনাথন মিলার মঙ্গলবার জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের মূল্যায়নে দেখা যাচ্ছে, গাজায় এই মুহূর্তে কোনও মানবিক সংকট নেই”। তিনি জাতিসংঘে বলেন, ইসরাইল গত যুদ্ধবিরতির সময় ২৫ হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে দিয়েছে, যাতে খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধ ছিল। তবে বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
গত ২ মার্চ থেকে ইসরাইল গাজার সব সীমান্ত বন্ধ রেখেছে, ফলে খাদ্য, ওষুধ ও মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা ও স্বতন্ত্র রিপোর্ট বলছে, এতে করে গাজার মানুষ ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের দূত বলেন, “গাজায় বোমার কোনও ঘাটতি নেই। কিন্তু খাদ্য, পানি, ওষুধসহ সব কিছুর সংকট তৈরি করা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে। যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হচ্ছে।”
এর আগে গত ১৮ মার্চ ইসরাইল আবার গাজায় আক্রমণ শুরু করে। আর এই হামলা চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভেঙে দেয়। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
প্রসঙ্গত, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট-এর বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত বছরের নভেম্বরেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও চলছে।
যাযাদি/আর