আন্তর্জাতিক

গাজা উপত্যকায় ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও থেমে থাকেনি ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা। ভোররাতে একটি আবাসিক ভবনে বর্বরোচিত হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৫ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে একটি পরিবারেরই ১৬ জন সদস্য রয়েছেন।

শনিবার (৭ জুন) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজা সিটির সাবরা এলাকায় ভোররাতে কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়াই ওই হামলা চালানো হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ধ্বংস হওয়া ভবনটিতে এখনও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিন সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসেল বলেন, ‘‘এটি ছিল একটি সম্পূর্ণ আবাসিক ভবন, যেখানে কেবলমাত্র সাধারণ মানুষ বসবাস করতেন। কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই আক্রমণ চালানো হয়েছে। এটি স্পষ্টতই একটি গণহত্যা।’’

বাসিন্দা হামেদ কাহিল জানান, ‘‘ঘুমের মধ্যেই বোমার শব্দে জেগে উঠি। চারপাশে ধ্বংসস্তূপ, মানুষের আর্তচিৎকার, এবং আমাদের মাথার ওপর ভেঙে পড়ছিল কংক্রিট ও পাথর। ঈদের সকালে সন্তানের হাসি দেখার কথা ছিল, কিন্তু আমরা দেখছি তাদের মৃতদেহ বের করা হচ্ছে।’’

আরেক বাসিন্দা হাসান আলখোর বলেন, “এই ভবনটি ছিল আবু শারিয়া পরিবারের। আল্লাহ যেন এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করেন।”

ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, এই হামলায় তারা মুজাহিদিন ব্রিগেডের প্রধান আসআদ আবু শারিয়াকে হত্যা করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, তিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলি অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন।

হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, আসআদ আবু শারিয়ার মৃত্যুর পাশাপাশি তার ভাই আহমেদ আবু শারিয়াও নিহত হয়েছেন। তারা একে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ধারাবাহিক গণহত্যার অংশ হিসেবে উল্লেখ করে।

গাজার হাসপাতালগুলোতে আহতদের নিয়ে হাহাকার চলছে, আহতদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। আন্তর্জাতিক মহল ইসরায়েলের এ ধরনের নির্বিচার হামলাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে দেখলেও এখন পর্যন্ত বড় কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।