সাবমেরিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত বহুল আলোচিত নিরাপত্তা চুক্তি AUKUS এখন যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ কৌশলের আওতায় নতুন করে পুনঃমূল্যায়নের মুখে পড়েছে।
২০২১ সালে স্বাক্ষরিত এই ত্রিপাক্ষিক চুক্তির অধীনে অস্ট্রেলিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক চালিত ভার্জিনিয়া-ক্লাস সাবমেরিন ক্রয় করবে। এরপর যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হবে নতুন প্রজন্মের সাবমেরিন।
❝ পুরনো প্রশাসনের উদ্যোগ পুনর্বিবেচনা ❞
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, “প্রেসিডেন্টের আমেরিকা ফার্স্ট নীতির সঙ্গে চুক্তিটি সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা যাচাই করাই এই পুনর্মূল্যায়নের উদ্দেশ্য।”
এই প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক এলব্রিজ কোলবি, যিনি আগে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র কেন এমন ‘মুল্যবান প্রযুক্তি’ অন্য দেশের হাতে তুলে দিচ্ছে, যখন নিজেদের চাহিদাই পূরণ হচ্ছে না।
❝ মিত্রদের আরও সক্রিয় ভূমিকা চান হোয়াইট হাউজ ❞
যুক্তরাষ্ট্র তাদের মিত্রদের কাছ থেকে GDP-র ৩% প্রতিরক্ষা ব্যয় নিশ্চিত করতে চাচ্ছে। যুক্তরাজ্য ২০২৮ সালের মধ্যে ২.৫% এবং ভবিষ্যৎ পার্লামেন্টের মেয়াদে ৩% ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও, অস্ট্রেলিয়া এ ব্যাপারে এখনো সতর্ক অবস্থানে।
❝ অস্ট্রেলিয়া আশাবাদী ❞
অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই চুক্তি বাস্তবায়িত হবে বলেই আমি আত্মবিশ্বাসী। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের জন্য দীর্ঘপাল্লার সাবমেরিন অপরিহার্য।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের কৌশলগত অবস্থান অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় স্থির থাকা জরুরি।”
❝ যুক্তরাজ্যের অবস্থান ❞
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, “নতুন প্রশাসনের পক্ষে এমন পর্যালোচনা করা স্বাভাবিক। যুক্তরাজ্যও গত বছর একই কাজ করেছে।”
চুক্তিকে তারা "গত কয়েক দশকের সবচেয়ে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব" হিসেবে বর্ণনা করেছে।
❝ চীনের আপত্তি এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ❞
চীন বরাবরই AUKUS-এর বিরোধিতা করে আসছে, একে ইন্দো-প্যাসিফিকে অস্ত্র প্রতিযোগিতার উৎস হিসেবে চিহ্নিত করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে পিছু হটে, তবে চীন বিষয়টিকে কূটনৈতিক জয় হিসেবে দেখবে।
সংক্ষেপে AUKUS:
৩টি পুরনো ও ২টি নতুন ভার্জিনিয়া-ক্লাস পারমাণবিক সাবমেরিন পাবে অস্ট্রেলিয়া
২০২৭ সাল থেকে পার্থে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাবমেরিন মোতায়েন হবে
যুক্তরাজ্যের ডিজাইন ও তিন দেশের প্রযুক্তি নিয়ে নতুন সাবমেরিন নির্মিত হবে অস্ট্রেলিয়া ও ব্রিটেনে