চীনের একটি অকশন হাউস অনুসারে, একটি মানবাকৃতি ‘লাবুবু’ পুতুল রেকর্ড ১০.৮ লাখ ইউয়ান (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা ১ লাখ ১০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ডে) বিক্রি হয়েছে। বেইজিংয়ের ইয়োংলে ইন্টারন্যাশনাল অকশন হাউস এই নিলামের আয়োজন করে।
১৩১ সেন্টিমিটার (প্রায় ৪ ফুট ৪ ইঞ্চি) উচ্চতার এই পুতুলটিকে বিশ্বের সবচেয়ে দামী খেলনা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে নিলামকারী প্রতিষ্ঠানটি।
‘লাবুবু’ হলো এক ধরনের অদ্ভুতুড়ে দানব-চরিত্রভিত্তিক পুতুল, যা এক দশক আগে হংকংয়ের শিল্পী ক্যাসিং লুং তৈরি করেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেলিব্রেটিদের প্রচারে এগুলোর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। চীনের একটি খেলনা তৈরির কম্পানি ‘পপ মার্ট’ এই পুতুলগুলো বাজারজাত করে। সাধারণত একটি লাবুবু পুতুলের দাম মাত্র ৫০ ইউয়ান। তবে এই সপ্তাহের নিলাম ছিল শুধুই লাবুবু পুতুলকে ঘিরে।
মোট ৪৮টি আইটেম বিক্রির জন্য তোলা হয় এবং প্রায় ২০০ জন নিলামে অংশ নেন। পুরো নিলাম থেকে মোট ৩৩.৭ লাখ ইউয়ান উঠেছে বলে জানিয়েছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান। বিশ্বব্যাপী এই খেলনাটির চাহিদা বেড়ে যায় যখন কে-পপ গ্রুপ ব্ল্যাকপিঙ্ক-এর সদস্য লিসা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত লাবুবু পুতুলসহ ছবি পোস্ট করতে শুরু করেন। এরপর পুতুলটি ভাইরাল হয়ে পড়ে।
গায়িকা রিহানা ও দোয়া লিপাসহ আরো অনেক তারকা লাবুবু বহন করতে দেখা গেছে, যা টিকটকে নতুন ট্রেন্ড তৈরি করে। এমনকি ইংল্যান্ডের সাবেক ফুটবল অধিনায়ক ডেভিড বেকহ্যামও একটি লাবুবু তার ব্যাগে লাগানো অবস্থায় ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করেন। তবে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি বিতর্কও তৈরি হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে, যুক্তরাজ্যের পপ মার্ট শোরুমগুলোতে ক্রেতাদের মধ্যে লাবুবু নিয়ে ঝগড়ার ঘটনা ঘটলে সংস্থা তাদের সব পুতুল সেখান থেকে প্রত্যাহার করে।
পপ মার্ট মূলত লাবুবু পুতুলগুলো ‘ব্লাইন্ড বক্স’ আকারে বিক্রি করে, যেখানে ক্রেতারা আগে থেকে জানেন না কোন ডিজাইনের পুতুলটি তারা পেতে যাচ্ছেন।
এই রহস্যময় উপস্থাপনাও পুতুলটির জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। লাবুবুর জনপ্রিয়তা পপ মার্ট কম্পানির ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালে সংস্থাটি ১ কোটি ৩০ লাখ ইউয়ান আয় করেছে, যা আগের বছরের দ্বিগুণেরও বেশি। গত বছর পপ মার্ট ইতালি, স্পেনসহ পাঁচটি দেশে নতুন শোরুমও চালু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাবুবুর এই উত্থান শুধুমাত্র একটি খেলনার সাফল্য নয়, বরং এটি আধুনিক সেলিব্রিটি সংস্কৃতি ও সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবের একটি শক্তিশালী উদাহরণ। সূত্র : বিবিসি