যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান দেশটির পশ্চিম উপকূল থেকে শনিবার প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে এসে ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
হামলার পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এর মধ্যে ইরানের অত্যন্ত সুরক্ষিত ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে ছয়টি ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলার পরই ইরানের পাল্টা হামলার ভয়ে মার্কিন বোমারু বিমানগুলো পালিয়ে যায়।
ধারনা করা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে এগুলো দ্রুত গুয়ামের মার্কিন ঘাঁটির দিকে পালিয়ে গেছে।
মার্কিন বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমানগুলো ৩ হাজার পাউন্ডের বিশাল বোমা বহনে সক্ষম, যা দিয়ে ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত করা হয়েছে।এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার বিকেলে নিউ জার্সি থেকে হোয়াইট হাউসে ফিরছেন। এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
ফক্স নিউজের জনপ্রিয় উপস্থাপক শন হ্যানিটি জানিয়েছেন, তিনি মাত্রই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ট্রাম্প তাকে জানিয়েছেন, ইরানের পাহাড়ের নিচে থাকা গোপন ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র ছয়টি ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করেছে।
এর আগে ধারণা করা হচ্ছিল, এই দৃঢ় সুরক্ষিত স্থাপনাটি ধ্বংস করতে হয়তো দুটি বাঙ্কার-বাস্টার বোমা যথেষ্ট হবে। কিন্তু ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, বাস্তবে প্রয়োজন হয়েছে ছয়টি।
হ্যানিটি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিন থেকে ৩০টি টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোঁড়া হয়।
সাবমেরিনগুলোর অবস্থান ছিল প্রায় ৪০০ মাইল দূরে। এর আগে ইসরায়েল দাবি করেছিল, গত ১৩ জুন ইরানে চালানো তাদের প্রথম হামলায় নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনাটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ফোরদো ও নাতাঞ্জ— এই দুটি পারমাণবিক কেন্দ্র ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বহুদিন ধরে এই দুটি কেন্দ্রকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূলভিত্তি হিসেবে দেখে আসছে।
আর বাঙ্কার-বাস্টার বোমা হলো এমন একধরনের শক্তিশালী অস্ত্র যা মাটির নিচে বা পাহাড়ের নিচে থাকা কংক্রিট সুরক্ষিত ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়।