ইসরায়েলের সঙ্গে টানা ৯ দিন ধরে ভয়াবহ সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে ইরান। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭০০ মানুষ। ধ্বংস হয়েছে বহু স্থাপনা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সামরিক ঘাঁটি, প্রাণ হারিয়েছেন ইরানি সামরিক বাহিনীর একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা। এক কথায়, ইরানের প্রতিরক্ষা কাঠামো ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে ইসরায়েল।
তবে এতসব হামলা ও ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইরান। পাল্টা জবাব দিতে দ্বিতীয়বার ভাবছে না দেশটি। প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
এই পরিস্থিতিতে ইরানের পাশে দাঁড়াতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক। সম্প্রতি ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)–এর ৫১তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান।
সম্মেলনে হাকান ফিদান বলেন, “ইরানে হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল গোটা অঞ্চলকে যুদ্ধের আগুনে ঠেলে দিচ্ছে। এখনই বিশ্ব সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। গাজা, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনের পর এবার ইরানও সঙ্কটে পড়েছে। মুসলিম বিশ্বকে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে ইরানের পাশে।”
একই সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তিনি বলেন, “ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা শুধু একটি রাষ্ট্রের ওপর আগ্রাসন নয়, বরং এটি ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনা ভণ্ডুল করার একটি চক্রান্ত।”
তিনি আরও বলেন, “১৩ জুনের হামলার মাধ্যমে নেতানিয়াহু সরকার ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংলাপকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। আসলে এই নেতানিয়াহু সরকারই এখন মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির সবচেয়ে বড় অন্তরায়।”
এদিকে ইসরায়েলের এমন হামলায় নিরঙ্কুশ সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সরাসরি হামলার হুমকি দিয়েছেন বলেও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান এ সংঘাত শুধু ইরান বা ইসরায়েলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং তা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। ফলে সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।