ইউরেনিয়াম স্থানান্তরের বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের গুলোতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে 'সন্দেহ' করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। তবে হামলায় সুনির্দিষ্ট কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে রোববার (২২ জুন) জানিয়েছে বাহিনীটি।
রোববার সকালে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ইরানের এক ঊর্ধ্বতন সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগে ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি থেকে অধিকাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম একটি গোপন স্থানে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। এ ছাড়া স্থাপনাটিতে কর্মরত জনবলও সর্বনিম্ন মাত্রায় নামিয়ে আনা হয়েছিল।
তবে এই দাবির বিষয়ে আইডিএফ মুখপাত্র এফি ডেফরিন বলেন, 'এই মুহূর্তে এই দাবির সত্যতা নির্ধারণ করা এখনও সম্ভব হয়নি।'
ডেফরিন জানান, ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা থেকে অধিকাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে বলার মতো পর্যাপ্ত তথ্য তাদের কাছে এখনও নেই।
এদিকে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, ওই এলাকায় বিকিরণের মাত্রা বেড়েছে বলে তাদের কাছে এখনো কোনো তথ্য নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে আর্থ ইমেজিং কোম্পানি প্ল্যানেট ল্যাবস। ছবিতে স্থাপনাটিতে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন দেখা গেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এসব ছবির বিশ্লেষণ করে জানায়, মাটির নিচে থাকা এই ফোরদো স্থাপনাটির প্রবেশপথে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন স্পষ্ট। এটি একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত। স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, পাহাড়টির কিছু অংশের রং পরিবর্তিত হয়েছে; আগে যা বাদামি ছিল, এখন তা ধূসর দেখা যাচ্ছে। পাহাড়ের গঠনে সূক্ষ্ম পরিবর্তনও লক্ষ করা যাচ্ছে।
অন্য একটি স্যাটেলাইট চিত্র সংস্থা ম্যাক্সমার প্রকাশিত ফুটেজেও পাহাড়ের গঠনে পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এর অর্থ হতে পারে যে, মাটির নিচের ওই জটিল স্থাপনাটি ধসে পড়েছে।
ফোরদো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্লান্টে প্রায় ২ হাজার সেন্ট্রিফিউজ পরিচালিত হতো এবং এটি ইরানের উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের বৃহত্তম উৎস। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, এই প্লান্ট তিন মাসে চারটি বোমা তৈরির মতো ফিশনযোগ্য উপাদান উৎপাদন করেছে।
পশ্চিমা কর্মকর্তারা এবং পরমাণু বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করলে, এই ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাই সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।